লেবাননফেরত ২৭৫ বাংলাদেশি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে, বিমানবন্দরে বিক্ষোভ

লেবানন থেকে বিশেষ ক্ষমার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চার্টাড ফ্লাইট দেশে ফেরত প্রায় পৌনে তিনশো প্রবাসী বাংলাদেশিকে ঢাকার হাজী ক্যাম্পে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তার আগে বৈরুতে থেকে আজ ভোরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তারা কোয়ারেন্টিন না করার দাবিতে বিক্ষোভ করেন।

তাদের দাবি, লেবানন থেকে রওনা হওয়ার আগে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার আগাম কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি। এ সময় বাইরে অপেক্ষামান তাদের আত্মীয় স্বজনরাও ব্যাপাক বিক্ষোভ করেন। পরে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বিআরটিসির বাস যোগে তাদের হাজী ক্যাম্পে প্রাতিষ্টানিক কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়। বর্তমানে সেখানেই তারা অবস্থান করছেন।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশ যেসব দেশের সাথে বিমান যোগাযোগ নিষিদ্ধ করেছে সম্প্রতি, সেই তালিকায় লেবাননও রয়েছে। কিন্তু এই যাত্রীরা দেশটিতে আটকে পড়ার কারণে রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থার একটি বিশেষ ফ্লাইটে করে তাদের ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। শর্ত ছিল ঢাকায় সবাইকে দুই সপ্তাহের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

Travelion – Mobile

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ চার্টাড ফ্লাইটে (বোয়িং-৭৮৮) ঢাকায় ফিরেন ২৭৫ জন প্রবাসী বাংলাদেশি। এর সবাই বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় স্বেচ্ছায় দেশে ফেরা কর্মসূচির আওতায় অবৈধ হয়ে পড়া কাগজপত্রবিহীন বাংলাদেশি। রবিবার বিকালে দেশটির শহীদ রফিক হারিরি বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের সর্বশেষ এবং ১৬ তম বিশেষ ফ্লাইটে রওনা দিয়ে সোমবার ভোর সাড়ে ৪ টায় ঢাকায় পৌঁছায়।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ চার্টাড ফ্লাইটে (বোয়িং-৭৮৮) ঢাকায় ফিরেন ২৭৫ জন প্রবাসী বাংলাদেশি
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ চার্টাড ফ্লাইটে (বোয়িং-৭৮৮) ঢাকায় ফিরেন ২৭৫ জন প্রবাসী বাংলাদেশি

ফ্লাইটটি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। কিন্তু ফেরত আসা এসব ব্যক্তিরা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে যেতে রাজি নন। তারা বলছেন, দূতাবাস থেকে তাদের এ বিষয়ে কোন আগাম নির্দেশনা দেয়া হয়নি। উপরন্ত ব্যক্তিগত কেউ কেউ জেনেছিল নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বিশেষ অনুমতিতে এই বিশেষ ফ্লাইটের যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে যেতে হবে না।

ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক তৌহিদুল আহসান মিডিয়াকে জানিয়েছেন,”তারা ফেরার পর থেকেই বিমানবন্দরের মধ্যে মিছিল, বিক্ষোভ করছেন। বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি করেছেন। শুধু তারাই না, তাদেরকে নিতে বিমানবন্দরে যেসব আত্মীয়-স্বজন এসেছে তারাও বিশৃঙ্খলা করছেন”।

তিনি জানান,”আমরা কয়েক দফা তাদের সাথে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আমরা তাদের প্রস্তাব দিয়েছি হজ ক্যাম্পে সরকার যে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করেছে সেখানে যেতে। কিন্তু তারা কোনভাবেই রাজি হচ্ছেন না”।

পরে দুপুরের দিকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সেনাবাহিনীর সহায়তা নিয়ে তাদের হজ ক্যাম্পে নিয়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। শেষ ফ্লাইটে ২৮৩ বাংলাদেশি ফেরার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ২৭৫ জন ফিরেন। করোনা পজিটিভ ও মামলার কারণে বাকী কয়েকজন ফিরতে পারেন নি বলে জানা গেছে।

এ বিষয় যোগাযোগ করেও লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাস দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রের দাবি, রবিবারের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটটি হঠাৎ করে নিষেধাজ্ঞার পড়লে বেবিচক থেকে বিশেষ অনুমতি নিয়ে তা লেবানন পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়, দেশে ফেরার জন্য নিবন্ধিত কাগজপত্রহীন সবশেষ ধাপের প্রবাসীদের আনতে। করোনামুক্তির সনদের বাধ্যবাধকতা থাকলেও কোয়ারেন্টিন রাখার কোন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ থেকে বৈরুত দূতাবাসকে জানানো হয়নি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!