মালয়েশিয়ায় দুর্ঘটনায় আহত মাহবুব আলম (৪৮) জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। ২২ জুন দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে শাহ আলম হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায় প্রবাসী মাহবুব।
দুর্ঘটনায় প্রচণ্ড আঘাতে তার মুখের হাড় ভেঙে গেছে, ডান চোখ নষ্ট হয়ে গেছে, শিরা ছিঁড়ে মাথার ব্রেইন গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উন্নত চিকিৎসা পেলে এ রেমিট্যান্স-যোদ্ধার সুস্থ হয়ে উঠার সম্ভাবনা আছে- এমনটি জানিয়েছেন দায়িত্বরত চিকিৎসকরা।
মাহবুবের উন্নত চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া অনেক ব্যয়বহুল। এখন পর্যন্ত ৪০ হাজার রিঙ্গিত (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৯ লাখ) বিল বকেয়া আছে। এ টাকা পরিশোধ না করলে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া মুশকিল। শুরুতেই আইসিইউতে রাখা হলেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে এইচডিডব্লিউতে রাখা হয়। বর্তমানে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও চিকিৎসা অব্যাহত না রাখলে বাঁচানো সম্ভব না-ও হতে পারে বলে জানান চিকিৎসকরা।
মালয়েশিয়ায় থাকা মাহবুবের ভাতিজা আনোয়ার হোসেন জানান, মাহবুব সাব এজেন্ট নেয়া এক মালয়েশিয়ানের অধীন কাজ করেন। শুরুর দিকে সেই এজেন্ট কিছু সহযোগিতা করলেও এখন সে অপারগতা প্রকাশ করছে। রাওয়াং-এ থাকা আনোয়ার নিজেও একজন শ্রমিক। কাজের ফাঁকে চাচাকে দেখতে যান। নিজের সামান্য আয় থেকে ইতোমধ্যে তিন হাজার রিঙ্গিত (প্রায় ৬৮ হাজার টাকা) ব্যয় করেছেন। আনোয়ার আরও জানান, তার চাচার পরিবার খুবই অসহায়। তাদের পক্ষে সহযোগিতা করা সম্ভব নয়।
নদীভাঙনে সহায়-সম্বল হারানো মাহবুবের তিন মেয়ে ও স্ত্রী থাকেন গাজীপুর বোর্ডবাজারে একটি ভাড়া বাসায়। পুরো সংসার নির্ভরশীল মাহবুবের ওপর, যে নিজেই এখন মৃত্যুশয্যায়।
এ অবস্থায় সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান আনোয়ার। তিনি বলেন, সবার একটু সহযোগিতা পেলে হয়তো বাঁচবেন তারা চাচা।
২০১৬ সালে সরকারি ভিসায় পাম অয়েল বাগানে কাজ নিয়ে মালয়েশিয়ায় আসেন মাহবুব। পাম অয়েল বাগানের ভিসা শেষ হলে অবৈধ হয়ে যান তিনি। তবে সরকারের রিক্যালিব্রেশন প্রক্রিয়ায় বৈধ হওয়ার জন্য সব প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে মাহবুব শেষ করেছেন।
অসহায় এ প্রবাসীর সহযোগিতায় সরকারিভাবে সহযোগিতার প্রত্যাশা করছে মাহবুবের পরিবার। একই সঙ্গে দেশ ও প্রবাসে থাকা বিত্তবানদের কাছেও পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। আহত মাহবুব আলম সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে যোগাযোগ করতে পারেন +৬০১৬২৬৬২১৬২, +৬০১৪২৬৬০০৩৯ নম্বরে।
এদিকে দুর্ঘটনার বিষয়ে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে অবহিত করা হলে হাইকমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ খোরশেদ এ খাস্তগীরের নির্দেশে গুরুত্বসহকারে মাহবুবের বিষয়টি দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কল্যাণ সহকারি মোকসেদ আলী।
