মালদ্বীপ থেকে দেশে ফিরলেন ৩৫৩ বাংলাদেশি কর্মী

মালদ্বীপে অবৈধ হয়ে যাওয়া ৩৫৩ জন প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফিরেছেন। দেশটির সরকারের দেওয়া বিশেষ সুবিধায় এসব কর্মী স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে নিবন্ধন করেছিলেন।

শনিবার (১৬ মে) রাত ৯ টা ৫৮ মিনিটে ৩৫৩ জন প্রবাসী বাংলাদেশিকে নিয়ে বিমান বাংলাদেশের একটি বিশেষ ফ্লাইট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, ‘তাঁদের সবার কভিড-১৯ নেই মর্মে সনদ থাকায় হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। আমরা তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে কারোর মধ্যে কোনো লক্ষণ পায়নি। তাই বাড়ি গিয়ে তাদের কিভাবে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে সে বিষয়ে কাউন্সেলিং করে দিয়েছি।’

Travelion – Mobile

এর আগে শনিবার ভোরে মালদ্বীপে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্মাণাধীন অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধার হাসপাতাল ‘কোভিড ভিলেজ’র মেডিক্যাল সরঞ্জামের একটি চালান (শিপমেন্ট) মালদ্বীপ পৌঁছিয়ে দেয় বিমান বাংলাদেশ। ওই ফ্লাইটেই দেশে ফিরে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীরা।

মালদ্বীপের ভেলেনা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নানা প্রকি্রয়া সম্পন্ন করছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা
মালদ্বীপের ভেলেনা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নানা প্রকি্রয়া সম্পন্ন করছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা

একই দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি সি-১৩০বি পরিবহন বিমানযোগে মালদ্বীপে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের প্রয়াসে সহায়তার জন্য দ্বিতীয় দফা মানবিক সহায়তা প্রদান করেছে বাংরাদেশ সরকার। সেই সঙ্গে দেশটিতে কর্মরত ১১ জন বাংলাদেশি চিকিৎসককে মালদ্বীপ পৌঁছিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। আগামীকাল রবিবার এই ফ্লাইটে আর ৭০ জন বাংলাদেশি কর্মীকে ফেরত পাঠানোর কথা রয়েছে। মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লা শহীদ স্থানীয় মিডিয়াকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ মে মাসের গোড়ার দিকে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে দেশটিতে অভিবাসী শ্রমিকদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেছিলেন এবং ঘোষণা করেছিলেন যে তাঁর প্রশাসন অবৈধ প্রবাসী কর্মীদের দেশে প্রত্যাবর্তনের সুবিধার্থে কাজ করছে।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালের সূত্র মতে, মালদ্বীপে বিভিন্ন দেশের প্রায় দেড় লাখ অভিবাসী শ্রমিক রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৬৩,০০০ অনিবন্ধিত বা অবৈধ হয়ে যাওয়া।

মালদ্বীপে অভিবাসীদের বেশিরভাগই বাংলাদেশি কর্মী এবং তারা ঘিঞ্জি লেবার কোয়ার্টারে থাকেন, যা তাদেরকে করোভাইরাসের মতো সংক্রামক রোগের জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের অভিমত ।

স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, কোভিড ১৯ আক্রান্তের রেকর্ড থেকে অভিবাসী শ্রমিকদের প্রাধান্যে স্পষ্ট। মালদ্বীপে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৭৮ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের সংখ্যাই বেশি।

দেশটির জনস্বাস্থ্যের মহাপরিচালক রাজধানী মালে সিটিতে করোনায় আক্রান্তের ঝুঁকি থাকা প্রবাসী কর্মীদের আইসোলেশন সুবিধায় সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এরই মধ্যে হুলহুমল এবং গুলহিফালহুতে কয়েক’শ প্রবাসীকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে এবং আরও বেশি অভিবাসী কর্মী থাকার জন্য সরকার অতিরিক্ত আইসোলেশন সুবিধা তৈরিতে কাজ করছে।

আগের খবর
মালদ্বীপের জন্য বাংলাদেশের মানবিক সহায়তা, পৌঁছিয়ে দিল বিমানবাহিনী
মালদ্বীপে বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে গেল মেডিক্যাল সরঞ্জাম, ফিরছে বাংলাদেশিরা
বিমান বাহিনীর উড়োজাহাজে মালদ্বীপ থেকে ফিরল ৭০ বাংলাদেশি
বিমান বাহিনীর উড়োজাহাজে দেশে ফিরল মালদ্বীপের ৭১ নাগরিক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!