মরিশাসে বাংলাদেশ হাইকমিশনে বিজয় দিবস উদযাপন
মরিশাসে বাংলাদেশ হাইকমিশন ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনা ও যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস ২০২০ উদযাপন করেছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং গণ্যমান্য প্রবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে দেশটির রাজধানী পোর্ট লুইসে বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রাঙ্গনে জাতীয় সঙ্গীতের সুরে সুরে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচির সূচনা করেন দেশটি নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদ। এ সময় মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের বিদেহী আত্মার শান্তি, দেশের সমৃদ্ধি ও অগ্রযাত্রা কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এরপর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ সময় বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারবর্গ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
হাইকমিশন মিলনায়তনে আলোচনা সভার শুরুতে দিবসটি উপলক্ষ্যে দেয়া রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন মিশনের কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান মো: অহিদুল ইসলাম এবং প্রথম সচিব মৌসুমী ওয়াইজ।
মরিশাসে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদ, তার বক্তব্যে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক ও স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সেই সঙ্গে গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন স্বাধীনতা যুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদসহ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি ।
হাইকমিশনার স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর অনন্য নেতৃত্ব ও অসামান্য অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, এ বছরের বিজয় দিবসে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর সুগভীর তাৎপর্যের সঙ্গে যোগ হয়েছে উন্নয়ন ও অগ্রগতির কয়েকটি মাইলফলক। জাতির পিতা যে সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলার স্বপ্নযাত্রা শুরু করেছিলেন, তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও পরিশ্রমে সেই স্বপ্নযাত্রা গতি পেয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে এবং সেই সাথে আর্থসামাজিক উন্নয়নের নানা বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশ মর্যাদাপূর্ণ স্থান অধিকার করেছে। ।
তিনি বাংলাদেশের অগ্রগতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, কোভিড-19 মহামারির কারনে সকল দেশ কম বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ট নেতৃত্ব এবং দৃঢ় মনোবল আমাদের সকলকে এই দুর্যোগ মোকাবেলা করতে সাহস জুগিয়েছে। তারপরও আমাদেরকে সকল দুর্যোগ মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরো বলেন যে, পদ্মা সেতু এখন আর শুধুই স্বপ্ন নয়। এটা নিশ্চিত যে, দৃশ্যমান পদ্মা সেতুর অগ্রগতিতে আপনারা সকলেই গর্বিত বোধ করছেন।
তিনি মুক্তিযুদ্ধে বাঙ্গালীর বিজয়ের গৌরবকে ধারন করে বিদেশের মাটিতে নিজেদের উন্নত আচরণ আর কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধিতে অবদান রাখার জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহবান জানান।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। প্রবাসী বাংলাদেশি শিশু কিশোরদের দেশত্মবোধক গানের সাথে মনোজ্ঞ নৃত্যে দেশত্মবোধক গান সবাইকে মুগ্ধ করে।
অনুষ্ঠানে পদ্মা সেতুর উপর নির্মিত ভিডিও ক্লিপ প্রর্দশন করা হয়। বিজয় দিবস উপলক্ষ্য বিভিন্ন ক্রীড়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা এবং অনুষ্ঠান শেষে অংশগ্রহণকারী সবাইকে পুরস্কৃত করা হয়।