কোরিয়ায় সেরা ইপিএস কর্মীদের বাংলাদেশ দূতাবাসের সম্মাননা

আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে

দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালিত হয়েছে। দিবস উপলক্ষে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ১৫ জন বাংলাদেশি ইপিএস কর্মীকে এবং সর্বোচ্চ সংখ্যক বাংলাদেশি ইপিএস কর্মী নিয়োগের জন্য ১১ জন কোরিয়ান নিয়োগ কর্তাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানী সিউলে বাংলাদেশ দূতাবাসে পবিত্র ধর্ম গ্রন্থসমূহ পাঠের মধ্য দিয়ে দিবসটির আনুষ্ঠানিক কর্মসূচির শুভসূচনা করা হয়। এরপর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রেরিত বাণীসমূহ পর্যায়ক্রমে পাঠ করে শোনানো হয়।

দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের কারণে সামাজিক দূরত্ব সংক্রান্ত নীতিমালা অনুসরণ করে সম্মাননা প্রাপ্তদের ক্রেস্ট ও সনদপত্র দূতাবাসের পক্ষ হতে ডাকযোগে পাঠানো হয় এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী সীমিত পরিসরে দূতাবাস প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।

বৈধ উপায়ে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রেরণকারী  ইপিএস কর্মী আখতারুজ্জামান মোহাম্মদ, দুলাস মিয়া, এস এম মনির হোসেন, আল ফারুক ওমর ও ফজলুর রহমান
বৈধ উপায়ে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রেরণকারী ইপিএস কর্মী আখতারুজ্জামান মোহাম্মদ, দুলাস মিয়া, এস এম মনির হোসেন, আল ফারুক ওমর ও ফজলুর রহমান

Travelion – Mobile

২০১৯-২০ অর্থবছরে বৈধ উপায়ে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রেরণকারী পাঁচ জন ইপিএস কর্মী যথাক্রমে আখতারুজ্জামান মোহাম্মদ (৫৭,২৮৮.১১ মার্কিন ডলার), দুলাস মিয়া (৫১,০০০.০০ মার্কিন ডলার), এস এম মনির হোসেন (৩৩, ৯৬০.৬৯ ডলার), আ ফ ফারুক ওমর (৩৩,০৪৩.২৩ মার্কিন ডলার) এবং ফজলুর রহমান (২৫,৬৪৭.৪৬ মার্কিন ডলার) সম্মাননা ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

এ ছাড়া কোরিয়ান সরকার কর্তৃক পুরস্কার প্রাপ্ত তিন জন যথাক্রমে মো. আজমির হোসেন, মোহাম্মদ মনির হোসেন ও ফেরদৌস নওশাদ, একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন অবস্থানকারী তিন জন যথাক্রমে মিজানুর রহমান (৯ বছর ৭ মাস), মো. রাশাদুর রহমান সময়কাল (৭ বছর ৫ মাস) ও মো. রকিবুল হাসান (৭ বছর ২ মাস), স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কোরিয়ায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য মো. আজমির হোসেন ও কাজী শাহ আলম এবং কোরিয়ান ভাষায় দক্ষতা অর্জনকারী পাঁচ জন যথাক্রমে মো. রকিবুল হাসান (কেআইআইপি), মোহাম্মদ ইয়াছিন শাইখ (কেএলসিটি এবং কেআইপিআরএটি), মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন (কেআইপিআরএটি এবং কেআইআইপি), এস এ এম বেলাল বিন করিম (কিন এবং কেআইআইপি) ও এস এম মনির হোসেন (কিপ্র্যাট) কে সম্মাননা ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

(উপরে) কোরিয়ান সরকার কর্তৃক পুরস্কারপ্রাপ্ত  মো. আজমির হোসেন, মোহাম্মদ মনির হোসেন ও ফেরদৌস নওশাদ, (নিচে বামে) একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন অবস্থানকারী মিজানুর রহমান, মো. রাশাদুর রহমান সময়কাল ও মো. রকিবুল হাসান, ( ডানে) স্বেচ্ছাসেবক কাজে অবদান রাখায মো. আজমির হোসেনও কাজী শাহ আলম।
(উপরে) কোরিয়ান সরকার কর্তৃক পুরস্কারপ্রাপ্ত মো. আজমির হোসেন, মোহাম্মদ মনির হোসেন ও ফেরদৌস নওশাদ, (নিচে বামে) একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন অবস্থানকারী মিজানুর রহমান, মো. রাশাদুর রহমান সময়কাল ও মো. রকিবুল হাসান, ( ডানে) স্বেচ্ছাসেবক কাজে অবদান রাখায মো. আজমির হোসেনও কাজী শাহ আলম।

অনুষ্ঠানে সম্মাননা প্রাপ্ত ইপিএস কর্মীদের এবং নিয়োগ কর্তাদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ও তাদের কর্মকাণ্ডের উপর একটি বিশদ উপস্থাপনা প্রদান করেন দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম), মকিমা বেগম।

রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম তার বক্তব্যে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ২০২০ উপলক্ষে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত সকল বাংলাদেশি ইপিএস কর্মীদের অভিনন্দন জানান। এছাড়াও বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তাদের অবদানের কথা গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেন তিনি।

তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মরত সকল বাংলাদেশি ইপিএস কর্মীদের কর্মনিষ্ঠা, আনুগত্য এবং দক্ষতার প্রশংসা করেন এবং কোভিড-১৯ মহামারী থেকে সর্বদা নিরাপদ থাকার জন্য সকল স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে পালন পূর্বক দৈনন্দিন জীবন-যাপন ও শিল্পকারখানায় কর্ম সম্পাদন করার অনুরোধ জানান।

কোরিয়ান ভাষায় দক্ষতা অর্জনকারী  মো. রকিবুল হাসান , মোহাম্মদ ইয়াছিন শাইখ , মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন , এস এ এম বেলাল বিন করিম ও এস এম মনির হোসেন
কোরিয়ান ভাষায় দক্ষতা অর্জনকারী মো. রকিবুল হাসান , মোহাম্মদ ইয়াছিন শাইখ , মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন , এস এ এম বেলাল বিন করিম ও এস এম মনির হোসেন

তিনি আরো বলেন, মহামারীর এই সংকটজনক পরিস্থিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রাবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বোয়েসেল এবং দূতাবাসের তৎপরতার কারণে বাংলাদেশে ছুটিতে ও রিলিজে অবস্থানরত ৫৬৬ জন ইপিএস কর্মীকে ইতোমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। যেসব কর্মীদের রিলিজের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল দূতাবাসের হস্তক্ষেপের কারণে তাদের অনেকেরই রিলিজের মেয়াদ সংক্রান্ত জটিলতার অবসান ঘটানো সম্ভব হয়েছে এবং পুনরায় তারা নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে সমর্থ হয়েছে। এছাড়া ভিসা নিষেধাজ্ঞা শিথিলসহ রোস্টারভুক্ত কমিটেড ও রেগুলার ইপিএস কর্মীদের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার প্রবেশ দ্বার উন্মুক্ত করবার লক্ষ্যে দূতাবাস অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, সরকারের নীতি অনুসরণ করে দূতাবাসও অভিবাসী কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে। এ লক্ষ্যে দূরশিক্ষণের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের সাথে যৌথ উদ্যোগে অনলাইন উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করেছে, যা শীঘ্রই শুরু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মোটিফের ব্যবহারের উপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

এখানে ক্লিক করে ভিডিও দেখুন :

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!