ভারতে জরুরী অবতরণ : বিমানের মাস্কাট-ঢাকা ফ্লাইটের যাত্রীদের আনতে উদ্ধারকারী দল
যাত্রীরা সুস্থ ও নিরাপদ রয়েছেন
ভারতীয় বিমানবন্দরে জরুরী অবতরণ করা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মাস্কাট-ঢাকা রুটের ফ্লাইটের যাত্রীদের আনতে সিডিউল একটি ফ্লাইটে উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে।
সন্ধ্যায় আট সদস্যের একটি উদ্ধারকারী দলসহ বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইটটি নাগপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। সেখান থেকে আজ রাতেই যাত্রীসহ বিজি ০২২ ফ্লাইটটি ঢাকায় এসে পৌঁছাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
মাঝ আকাশে পাইলটের হার্ট অ্যাটাকের কারণে আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ১০:৪০ মিনিটে ১২৪ জন যাত্রী নিয়ে মহারাষ্ট্রের নাগপুরের ড. বাবা সাহেব আম্বেদকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরী অবতরণ করে বিমানের মাস্কাট-ঢাকা রুটের ফ্লাইটি।
ফ্লাইটের যাত্রীরা বিমানবন্দরটির আন্তর্জাতিক টামিনালে অবস্থান করছেন। তারা সকলেই সুস্থ ও নিরাপদ রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভাের সাড়ে ৬ টায় মাস্কাট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হয় ফ্লাইটটি। আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বোয়িং ৭৩৭ বিমানটির হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা ছিল।
ফ্লাইটের যাত্রী ওমানপ্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী চট্টগ্রামের আবদুল করিম আকাশযাত্রাকে জানান, মাস্কাট থেকে নির্ধারিত সময় থেকে সাড়ে ৪ ঘন্টা বিলম্বে ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা দেয় ফ্লাইটি। প্রায় তিন ঘন্টা পর মাঝ আকাশে কেবিন ক্ররা পাইলটের অসুস্থাতার কথা জানিয়ে যাত্রী মধ্যে চিকিৎসক আছেন কিনা ঘোষণা দিয়ে জানতে চান।
“যাত্রীদের মধ্যে কােন চিকিৎসক ছিলেন না। কিছুক্ষণ পরেই অবতরণের ঘোষণা দেওয়া হয় এবং ফ্লাইটি নাগপুরে বিমানবন্দরে জরুরী অবতরণ করে। এম্বুলেন্স এসে পাইলটকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়। একঘন্টার পর যাত্রীদের নামিয়ে নিয়ে আন্তর্জাতিক টার্মিনালে নিয়ে যাওয়া হয়,” আবদুল করিম যোগ করেন।
তিনি জানান, ভারতের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী (সিআইএসফ) সদস্যরা সকল যাত্রীকে তল্লাশী করে। বর্তমানে সকল যাত্রী সিআইএসফ-এর তত্তাবাধানে রয়েছেন।
ভিডিও দেখুন ;
বিমানের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ফ্লাইটটি ভারতের আকাশে থাকাকালে পাইলট অসুস্থ বোধ করেন। এসময় জরুরি অবতরণের জন্য কোলকাতা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা নিকটতম নাগপুর এয়ারপোর্টে অবতরণ করার পরামর্শ দেয়। সে অনুযায়ী ফ্লাইটটি নাগপুরে অবতরণ করে।
অবতরণের পর বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের উড়োজাহাজটির ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউমকে হোপ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি করে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা উত্তরোত্তর উন্নতির দিকে।
বিমানের দিল্লী অফিসের কান্ট্রি ম্যানেজারকে জরুরিভিত্তিতে যাত্রী, ক্রু ও ফ্লাইটের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের জন্য নাগপুর পাঠানো হয়েছে।
ফ্লাইটের যাত্রী ওমানপ্রবাসী নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার আরিফুল ইসলাম জানান, যাত্রীরা সবাই সুস্থ ও নিরাপদ রয়েছেন। তবে তাদের এখনও পর্যন্ত কোন ধরনের খাবার দেওয়া হয়নি। একবার খাবারের জন্য লাইন দাঁড়ানো করানো হলেও শেষ পর্যন্ত খাওয়া আর আসেনি।
চট্টগ্রাম মিরসরাই উপজেলার মোহাম্মদ নূরুল হুদা বলেন, নাগপুর বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় খাবারসহ সব ধরনের দোকানপাঠ বন্ধ রয়েছে। তাই খাবার কেনার সুযোগও পাচ্ছিনা।
আবদুল করিম আরও জানান, মাস্কাট বিমানবন্দরে রাত ২.৩০ মিনিটের নির্ধারিত রিপোটিং করার পর ভোর সাড়ে ৪ টায় সকল যাত্রীকে বিমানে তোলা হয়েছিল। বিমানের মধ্যেও তাদের প্রায় দুঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। এ সময় জানানো হয়, যান্ত্রিক গােলযোগের কারণে ফ্লাইটে ছাড়তে বিলম্ব হচ্ছে। অবশেষে ভোর সাড়ে ৬ টায় ফ্লাইট ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হয়।