ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক হচ্ছেন যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী

১৭২১ সালে ব্রিটেনের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছিলেন স্যার রবার্ট ওয়ালপুল। বহুজাতিক ও বহুমাত্রিক ব্রিটেনে ৩০১ বছর পর প্রথম অশ্বেতাঙ্গ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঋষি সুনাক ইতিহাস গড়বেন।

যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক। এর মধ্য দিয়ে নতুন ইতিহাস গড়ছেন তিনি। প্রথম ব্রিটিশ এশিয়ান এবং এক শতকের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন তিনি। লন্ডনের স্থানীয় সময় আজ সোমবার বেলা ২টায় তাঁকে ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির (টোরি) নেতা ঘোষণা করা হয়েছে। খবর বিবিসির।

কনজারভেটিভ পার্টির ১৯২২ কমিটির চেয়ারপারসন স্যার গ্রাহাম ব্রাডি ঘোষণা করেন, দলের নতুন নেতা নির্বাচনে শুধু সুনাকের মনোনয়নপত্র পেয়েছেন তাঁরা। সে কারণে তাঁকে নতুন দলীয় প্রধান ঘোষণা করা হলো।

যুক্তরাজ্যে ক্ষমতাসীন দলের নেতাই প্রধানমন্ত্রী হন। গত বৃহস্পতিবার লিজ ট্রাস প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করার পর কনজারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

Travelion – Mobile

আকাশযাত্রার সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করেফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও হাউস অব কমন্সের স্পিকার পেনি মরডান্ট এই নির্বাচনে ঋষি সুনাকের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। তাঁরা দুজনই আজ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ান।

বরিস জনসন যখন পদত্যাগ করেন তখন লিজ ট্রাসের সাথে প্রতিযোগিতার শেষ পর্যন্ত টিকে বাদ পড়েন তিনি। সেই লড়াইয়ে তিনি এগিয়ে ছিলেন জনমত জরিপে। তবে তখনও একজন এথনিক রাজনীতিবিদ রক্ষণশীল দলের প্রধান হবেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন; এটা হয়তো রক্ষণশীল সদস্যরা মানতে পারেননি। তবে ৪৫ দিনের মাথায় লিজ ট্রাস ভুল প্রমাণিত হয়েছেন, ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ক্ষমতা।

আগের খবর : যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের পদত্যাগ

ব্রেক্সিট ও কোভিডের সময় অর্থনীতি সামাল দেওয়ার অভিজ্ঞতা, ঠান্ডা মাথার রাজনীতি, সুশৃঙ্খল জীবনযাপন সব মিলিয়ে দেশের ত্রাণকর্তা হিসেবে ঋষি সুনাক ছাড়া কনজারভেটিভ পার্টির সামনে আর বিকল্প নেই।

এবার ঋষি সুনাকের প্রধান দায়িত্ব –দেশের জনগণের মনে আস্থা তৈরি করা, দেশের অর্থনৈতিক খারাপ অবস্থা থেকে উত্তরণ। দলের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার কাজও করতে হবে তাকে। ফেরাতে হবে আগাম নির্বাচনের জন্য আসা ঝড়ও।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাজনীতিক ও ব্যবসায়ী ঋষি সুনাক বরিস জনসন সরকারের অর্থমন্ত্রী ছিলেন। করোনার বিধিনিষেধ লংঘনসহ কয়েকটি ঘটনায় সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেন বরিস জনসন। এরপর তাঁর সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস ও অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক নতুন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

দলীয় নেতা নির্বাচনের চূড়ান্ত ধাপে এসে লিজ ট্রাসের কাছে হেরে যান ঋষি সুনাক। তবে লিজ ট্রাস প্রধানমন্ত্রী হয়ে যেসব অর্থনৈতিক নীতি নেন, তাতে যুক্তরাজ্যের মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। পরিস্থিতি সামলে নিতে না পেরে তিনিও বিদায় নেন।

তাঁর বিদায়ে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনীতি ও রাজনৈতিক অঙ্গনে সৃষ্ট অস্থিরতার মধ্যে যুক্তরাজ্যের হাল ধরার দায়িত্ব পড়ল ঋষি সুনাকের কাঁধে।

ঋষি সুনাক ২০১৫ সালে রিচমন্ডের নর্থ ইয়র্কশায়ার থেকে প্রথমবার ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। পাঁচ বছরের কম সময়ে ২০২০ সালে দেশের অর্থমন্ত্রী হন তিনি। করোনাকালে অর্থনৈতিক চাপ সামলানোর জন্য প্রশংসা পেয়েছেন ঋষি সুনাক। ক্ষমতায় গেলে অর্থনীতির গতি ফেরাতে ও জনগণের করের বোঝা কমাতে চান তিনি।

তবে লকডাউনের নিয়ম ভঙ্গ করা ও ধনাঢ্য স্ত্রীর কর মওকুফ করার জন্য তাঁর সমালোচনা হয়েছিল।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!