বিশ্ব হালাল পণ্য মেলায় মালয়েশিয়ার সাফল্য

তুরস্কে শেষ হলো ৪ দিন ব্যাপী বিশ্ব হালাল সম্মেলন। ২৪ নভেম্বর থেকে ইস্তাম্বুলে শুরু হওয়া ৪ দিন ব্যাপী অষ্টম বিশ্ব হালাল শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি চলে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) নবম হালাল এক্সপোও। এ দুটি ইভেন্টে মালয়েশিয়াসহ ৪০টি দেশের প্রায় ৫০০ সংস্থা অংশ নিয়েছিল।

চার দিনের এই ইভেন্টে দেশি-বিদেশি সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাসহ ৪০ হাজারের বেশি দর্শণার্থী উপস্থিত হয়েছিলেন। রোববার পর্যন্ত ইভেন্ট চলাকালে ১১টি ভিন্ন ভিন্ন সেশনে অর্ধ শতাধিক আন্তর্জাতিক বক্তা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

প্রবাসের সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ

Travelion – Mobile

মালয়েশিয়া প্যাভিলিয়নে কৃষি, ফার্মাসিউটিক্যাল, প্রসাধনী, ব্যাংকিং, পর্যটন, ফ্যাশন, খাদ্য ও পানীয়, শিক্ষা এবং আরও অনেক কিছুর পণ্য এবং পরিষেবাগুলি প্রদর্শন করা হয়।

ইস্তাম্বুল কংগ্রেস সেন্টারের মালয়েশিয়া শোকেস প্যাভিলিয়নের উদ্বোধন করে মালয়েশিয়ার কনস্যুলেট জেনারেল এইচ ই তুংকু মোহাম্মদ জারাইফ রাজা আব্দুল কাদির বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে হালাল পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি ডিজিটালাইজেশন ই-কমার্স খাতও বৃদ্ধি পেয়েছে। হালাল শিল্প বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল বাজারগুলির মধ্যে একটি কারণ এই খাতের পণ্য এবং পরিষেবাগুলিও বিশ্বব্যাপী অমুসলিম গ্রাহকদের মধ্যে গতি পাচ্ছে।

World Halal Expo 2022: Visitors flock to the Malaysian Pavilion. Photo : Collected
World Halal Expo 2022: Visitors flock to the Malaysian Pavilion. Photo : Collected

“মালয়েশিয়া সরকার এবং তুর্কি প্রজাতন্ত্রের সরকারের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সম্প্রসারণের যৌথ ঘোষণায় সাম্প্রতিক স্বাক্ষর এই দুই দেশের মধ্যে মহামারী-পরবর্তী পুনরুদ্ধার এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি চিহ্নিত করেছে। এটি অবশ্যই দুই দেশের মধ্যে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক স্থাপন করবে, মালয়েশিয়ার উদ্যোক্তাদের তুর্কিতে পা রাখতে অনুমতি দেবে। উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধির সাথে তুর্কি একটি উদীয়মান রপ্তানি বাজার হিসাবে রয়ে গেছে”, তিনি যোগ করেন।।

২০১৯ সালে, মালয়েশিয়ার রপ্তানি ছিল ৪.২৪ বিলিয়ন রিঙ্গিত এবং এটি আগামী বছরগুলিতে উন্নতি করতে থাকবে। রাজা আব্দুল কাদিরের মতে, “মালয়েশিয়ার হালাল কোম্পানি তুর্কির সাথে অংশীদারিত্ব স্থাপন করতে সক্ষম হবে। আমরা এই অঞ্চলে আমাদের দিগন্ত প্রসারে নেটওয়ার্ক তৈরি করার জন্য উন্মুখ।”

২০২১ সালে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ ইভেন্টের সাফল্যের পরে, মালয়েশিয়ান প্যাভিলিয়ন বিভিন্ন সেক্টর যেমন চেম্বার অফ কমার্স, ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন এবং ফেডারেশন এবং আমদানিকারক, খুচরা আউটলেট, সুপারমার্কেটের মতো বেসরকারি খাত থেকে ৫০০০ টিরও বেশি দর্শকদের কাছ থেকে একটি অভিভূত প্রতিক্রিয়া প্রত্যক্ষ করেছে। এবং পাইকারী বিক্রেতা, আমরা ২০০ টিরও বেশি বিটুবি মিটিং সহ ৬০০০ এর বেশি দর্শকদের আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।

এদিকে মালয়েশিয়ার হালাল পার্কগুলি ১৬ বিলিয়ন রিঙ্গিত (২.১ বিলিয়ন ইউএস ডলার) এর ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগ আকর্ষণ করেছে, যার মধ্যে ৫৯% বিদেশী প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ”।
মোট ২৯৫টি কোম্পানি, যার মধ্যে ৪২টি বহুজাতিক, বর্তমানে সারা দেশে ২২টি হালাল পার্কে কাজ করছে।

The Malaysia Pavilion showcases ৃ at World Halal Expo 2022
The Malaysia Pavilion showcases ৃ at World Halal Expo 2022

“এই হালাল পার্কগুলির প্রতিটি বিশ্বমানের অবকাঠামো সুবিধা, দক্ষ কর্মীবাহিনী, ব্যবসা করার সহজতা, হালাল উপাদানগুলিতে অ্যাক্সেস, সেইসাথে মালয়েশিয়ান সরকারের কাছ থেকে আকর্ষণীয় প্রণোদনা প্রদান করে যা ধারাবাহিকভাবে হালাল উন্নয়নকে উত্সাহিত করে।”

হালাল এক্সপোর আয়োজকরা বলছেন, বিশ্বজুড়ে হালাল মার্কেটের আকার বাড়ছে এবং আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে তা ১০ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খাবার, পর্যটন, বস্ত্র, কসমেটিকস, ওষুধ ও রাসায়নিকের এই হালাল বাজার এরই মধ্যে সাত ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

ওয়ার্ল্ড হালাল সামিট কাউন্সিলের চেয়ারপারসন ও ডিসকোভার ইভেন্টসের প্রধান ইউনুস ইতে বলেন, কভিড-১৯ মহামারীও হালাল মার্কেট সম্প্রসারণে ভূমিকা পালন করেছে। কারণ হালাল পণ্যের অন্যতম ভিত্তি হলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। করোনার সময় লোকজন স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পণ্যের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়েছে। এতে করে হালাল সামগ্রীর চাহিদা বেড়েছে। ফলে এই বাজার দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে।

প্রবাসের সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ

তিনি জোর দিয়ে বলেন, হালাল মার্কেট দ্রুতগতিতে ১০ ট্রিলিয়ন ডলারের দিকে ছুটছে। অনুমান করা হচ্ছে, ইসলামি অর্থনীতি ৩.৫ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে, খাবার ও পানীয় শিল্প দাঁড়াবে ২ ট্রিলিয়ন ডলারে, হালাল পর্যটন দাঁড়াবে ৪০০ বিলিয়ন ডলারে, কসমেটিকস শিল্প দাঁড়াবে ২০০ বিলিয়ন ডলারে এবং ফ্যাশন দাঁড়াবে ২৪০ বিলিয়ন ডলারে।
তিনি বলেন, হালাল অর্থনীতি অদূর ভবিষ্যতে বিশ্ববাজারের আকার গড়ে দেবে।

ওআইসি হালাল এক্সপোতে প্রসাধনী, টেক্সটাইল, অর্থ, পর্যটন, বিশেষ করে খাদ্যের মতো বিভিন্ন খাতের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়া লজিস্টিক, প্রকাশনা, প্যাকেজিং ও শিক্ষার মতো খাতের ব্যবসাগুলোও এই এক্সপোতে অংশ নেয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!