পৃথিবীর প্রতিবেশী হয়ে এসেছে তারার মহাজোট!

নতুন আবিষ্কার

হাজারের বেশি তারার জোট বাঁধা বিশাল বিশাল গ্যালাক্সির ঝাঁক এসেছে পৃথিবীর খুব কাছে। নিজের মধ্যে টানাটানিতে জুড়ে গিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে তারা গ্যালাক্সি সুপার ক্লাস্টার বা মহাজোট তৈরির পথে চলেছে। গ্যালাক্সিদের মহাজোট থেকে ছড়িয়ে পড়ছে উজ্জ্বল আলো।

নতুন গ্যালাক্সি সুপার ক্লাস্টারের খোজ পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেমব্রিজের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)-র গবেষকরা। তারা বলছেন, হাজারের বেশি তারারা জোট বেধেঁছে এক একটি গ্যালাক্সিতে। তারা একে অপরের সঙ্গে মিলে মিশে যাচ্ছে। উল্লাসে মহাজাগতিক রশ্মি ছড়িয়ে দিচ্ছে চতুর্দিকে। এই ব্রহ্মাণ্ডে আমাদের ‘মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি’ বা ‘ছায়াপথ’ থেকেরও আকারে-আয়তনে বড় এই গ্যালাক্সির ঝাঁক। অভিকর্ষজ বলের ক্রিয়ায় তারা একে অপরের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে।

টেকস্পটের প্রতিবেদনে বলা হয়. এর আগে মহাকাশ গবেষকরা হাবল-স্পেস টেলিস্কোপে খুঁজে পেয়েছিলেন এমনই গ্যালাক্সির জোট ‘সুপারজায়ান্ট গ্যালাক্সি’। আমাদের ছায়াপথের থেকেও ১০ গুণ বেশি বড় ছিল ‘এ২২৬১-বিসিজি’ নামের’ সুপারজায়ান্ট গ্যালাক্সি।

Travelion – Mobile

তবে ২০১৫ সালে আমাদের মিল্কিওয়ে বা ছায়াপথে গ্যালাক্সির মাঝে এমন ৩৫টি সদ্য জন্মানো তারার খোঁজ মিলেছিল। এত দিন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা ভাবতেন, আমাদের ছায়াপথে নতুন কোনও ‘পড়শি’ আর আসবে না। নতুন তারারা সব ধারণা ভেঙে দেয়। প্রমাণ হয় মিল্কিওয়ের ‘বাসিন্দা’রা কয়েকশো কোটি বছর ধরেই রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন, ওই তারাদের বয়স বড়জোর দশ কোটি বছর। তাদের মধ্যে সবচেয়ে সবচেয়ে কচি তারার বয়স আড়াই কোটি বছরের বেশি নয়।

গবেষকরা বলছেন, যে কোনও গ্যালাক্সি ঝাঁকের ঠিক কেন্দ্রেই থাকে কোনও ভারী দানবাকার ব্ল্যাকহোল। এদের কাজ হয় ঝাঁক থেকে তারাদের শিকার করা। তারাদের ধরে গিলে খাওয়ার সময় তাদের শরীর ছিঁড়েখুঁড়ে বেরিয়ে আসে আলোকতরঙ্গ। প্রচণ্ড গতির সেই রেডিও রশ্মি ছড়িয়ে পড়ে মহাকাশে।

নতুন পাওয়া গ্যালাক্সি ক্লাস্টার কেন্দ্রে কোনও মোটাসোটা ব্ল্যাকহোল লুকিয়ে আছে কিনা তার খোঁজ অবশ্য মেলেনি। তবে তারাদের শরীর থেকে প্রচণ্ড গতিতে এক্স-রে রশ্মি বেরিয়ে আসছে। উজ্জ্বল আলোয় ঝিকমিক করছে গ্যালাক্সির ঝাঁক। তার ভেতর দলে দলে তারাদের জন্ম-মৃত্যুর খেলা চলছে। গ্যালাক্সির ভেতর গ্যাসীয় বলয় থেকে জন্ম হচ্ছে নক্ষত্রদের। ঠিক যেমন মাতৃগর্ভ থেকে সন্তানের জন্ম হয়।

মহাকাশবিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্যালাক্সির মধ্যে শক্তিশালী অভিকর্ষজ বলের টানে ঘন থকথকে হয়ে জমাট বেঁধে থাকে গ্যাসীয় স্তরেরা। এই ঘন গ্যাসীয় পিণ্ড থেকেই খাবার সংগ্রহ করে কচি তারারা। গ্যাসের ও জমাট বাঁধা ধুলোর স্তর থেকে পুষ্টি নিয়েই আড়েবহরে বাড়তে থাকে খুদে তারারা। পৌঁছয় তাদের কৈশোরে। সদ্যোজাতের পুষ্টির জোগান দিতে ঘন ডিস্কের মতো গ্যাসের স্তর ঘিরে থাকে নক্ষত্রমণ্ডলকে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!