পর্তুগালে জানুয়ারিতে আগাম জাতীয় নির্বাচন!
২০২২ সালের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটকে কেন্দ্র করে পর্তুগালে রাজনৈতিক অচলাবস্থায় আসছে জানুয়ারি মাসে আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে। তেমনিই ঘোষণা দিয়েছেনপর্তুগালের পর্তগালের রাষ্ট্রপতি মার্সেলো রেবেলো ডি সুসা । সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে ১৬ জানুয়ারি জরীপে এগিয়ে আছে।
৫ নভেম্বর (শুক্রবার) রাজধানী লিসবনের রাষ্ট্রপতি ভবন প্যালাসিও দে বেলেম থেকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে মার্সেলো রেবেলো ডি সুসা বলেন, “২০২২ সালের বাজেট প্রত্যাখ্যানের এক সপ্তাহ এবং একদিন পর আপনারদের জানাচ্ছি যে, আমি প্রজাতন্ত্রের বিধানসভা ভেঙে দেবার এবং ২০২২ সালের ৩০ জানুয়ারি মধ্যে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি”।
রাষ্ট্রপতি বলেছেন , সংবিধানের শর্তাবলীর অধীনে, তিনি সংসদীয় প্রতিনিধিত্বকারীসহ সকল দলে কথা শুনেছেন, রাজ্যে কাউন্সিলও অনুকূল মতামত দিয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার মতামতের ভিত্তিতে এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক ও আর্থিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সংসদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গত সপ্তাহে পর্তুগালের জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটটি প্রত্যাখ্যান করা হয়। এর আগে কয়েক সপ্তাহের আলোচনায় সংখ্যালঘু সমাজতান্ত্রিক দল পি এস সংসদে অনন্য দলের সদস্যদের সাথে আলোচনায় ব্যর্থ হয় । বাজেটের বিপক্ষে ১১৭ ভোট পড়ে যেখানে পক্ষে ১০৮ ভোট এবং ৫ জন সদস্য ভোট প্রদানে বিরত থাকে।
আগে থেকেই ধারনা করা হচ্ছিল এই বাজেট পাস করা অসম্ভব হবে যেহেতু পর্তুগালের বাম দল সমূহের তাদের সমর্থন সরিয়ে নিয়েছে সরকারের প্রতি। করোনা পরবর্তী এই সময়ে এর ফলে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও কস্তা বলেছেন, আমার যা যা করনীয় সবই করেছি প্রস্তাবিত বাজেটটির অনুমোদন করানোর জন্য। এই মূহুর্তে পর্তুগালে রাজনৈতিক সংকট চলছে এবং তা নিরসনে পর্তুগালের রাষ্ট্রপতি মারসেলো রিবেইলো জানিয়েছেন সকল দলের সাথে আলোচনা করে নির্ধারিত সময়ের দুই বছরে পূর্বেই একটি নির্বাচন দিতে হবে।
স্থানীয় গণমাধ্যমে খবরে বলা হয়, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষনা করা হবে, তবে সবাই ধারনা করছে আসছে জানুয়ারির ১৬ তারিখে তা অনুষ্ঠিত হবে যদি সকল রাজনৈতিক দল সম্মতি হয়।
আগাম সংসদ নির্বাচনের তারিখ হিসাবে, PSD এবং CDS-PP ৯ বা ১৬ জানুয়ারির জন্য একটি পছন্দ নির্দেশ করেছে। এ ছাড়া PS, PCP, PEV এবং চেগা ১৬ জানুয়ারি,
BE সেই তারিখ থেকে , PAN জানুয়ারির শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির শুরুর মধ্যে এবং লিবারেল ইনিশিয়েটিভ ৩০ জানুয়ারির আগে নয়।
নির্বাচনী আইন বলে যে, বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থীদের জন্য নির্ধারিত তারিখের ৪১ তম দিনের মধ্যে উপস্থাপন করতে হবে, একটি সময়সীমা যা এই ক্ষেত্রে ২০ ডিসেম্বর। প্রচারের সময়কাল-যা আইন অনুসারে ১৪ তম দিন আগে শুরু হয় এবং নির্বাচনের আগের দিন মধ্যরাতে শেষ হয়-১৬ থেকে ২৮ জানুয়ারি হবে।
রাজনেতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন পর্তুগালের বর্তমান অবস্থা দেশটিকে একটি অস্থিতিকর পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে এবং আসন্ন বাজেটটি কেবলমাত্র আসছে ফেব্রুয়ারী বা মার্চে অনুমোদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
জরিপ বলছে ক্ষমতাসীন সোসালিষ্ট পার্টি আবারো জয়ী হবেন তবে প্রয়োজনীয় সংখ্যা গরিষ্ঠতা নাও পেতে পারে। কারন পর্তুগালে ডানপন্থীদের উথান ক্ষমতাসীনদের জন্য বড় অস্তিত্ব কারন।
ধারনা করা হচ্ছে ডানপন্থীরা বেশকিছু আসন পাবেন যা সরকার গঠনে বড় ধরনের একটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হতে পারে জয়ীদের এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে শান্তির দেশ হিসেবে পরিচিত দেশটিতে এধরনের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দেশটির বাসিন্দাদের গভীর উদ্বিগ্ন করে তুলছে।