নেপালে নিখোঁজ উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ শনাক্ত, উদ্ধার ১৪ মরদেহ
পাহাড়ে আছড়ে পড়ায় টুকরো টুকরো হয়ে যায়
নেপালের তারা এয়ারের বিধ্বস্ত হওয়ার উড়োজাহাজ থেকে অন্তত ১৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছেন। বাকিদের দেহাবশেষ খোঁজার কার্যক্রম চলছে।
আজ সোমবার নেপালের সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, পাহাড়ে আছড়ে পড়ায় উড়োজাহাজটি টুকরো টুকরো হয়ে যায়। থাসাং গ্রামের সানো সোয়ারে ভিরে ১০০ মিটার এলাকাজুড়ে এর ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়ে।
‘১৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে’ উল্লেখ করে তারা এয়ারের মুখপাত্র সুদর্শন বার্তাউলা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটি বিধ্বস্ত হওয়ার জায়গা থেকে শুরু করে প্রায় ১০০ মিটার এলাকা জুড়ে মরদেহগুলো ছড়িয়ে পড়েছে। উদ্ধারকর্মীরা সব নিখোঁজ যাত্রীর দেহাবশেষ খুঁজছেন।’
তিনি জানান, উড়োজাহাজটি সরাসরি পাহাড়ে আছড়ে পড়ায় তা টুকরো টুকরো হয়ে যায়। এতে ১৯ যাত্রী ও ৩ ক্রু ছিলেন। তাদের মধ্যে ২ জার্মান, ৪ ভারতীয় ও ১৩ জন নেপালি।দেশটির বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, বাকি ২ যাত্রীর জাতীয়তা এখনো জানা যায়নি।
গত রোববার উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য নেপালের সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়। কিন্তু, আলোর স্বল্পতা ও বৈরি আবহাওয়ার কারণে ঘটনাস্থলে হেলিকপ্টার নিয়ে যেতে পারেননি।
দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল সকাল থেকেই পোখারা-জমসম এলাকা ঘন মেঘে ঢাকা ছিল। সে কারণে উদ্ধার হেলিকপ্টার রওনা হয়েও ফিরে আসতে বাধ্য হয়।
নেপালের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, উড়োজাহাজটি নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ঘণ্টা খানেক পর দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মাস্ট্যাং জেলার থাসাং গ্রামের সানো সোয়ারে ভিরে এর ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।
এর আগে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নারায়ণ সিলওয়াল টুইটারে বলেছিলেন, ‘সেনা সদস্যরা উড়োজাহাজটির বিধ্বস্ত হওয়ার জায়গাটি চিহ্নিত করেছেন। উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’
গতকাল রোববার ২২ আরোহী নিয়ে পর্যটন শহর পোখারা থেকে নেপালের মধ্যাঞ্চলে পর্যটকবান্ধব পার্বত্য শহর জমসমে যাওয়ার পথে উড়োজাহাজটি নিখোঁজ হয়। স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে পোখারা ছেড়ে যাওয়ার প্রায় ১২ মিনিট পর নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে এর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এই ২ শহরের মধ্যে যাতায়াতে সাধারণত ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগে।
এভারেস্টসহ পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু ১৪ পর্বতের ৮টি নেপালে। দেশটির আবহাওয়া হটাৎ করেই বদলে যায় এবং বেশিরভাগ এয়ারস্ট্রিপ দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়।
এর আগে ২০১৬ সালে তারা এয়ারের একটি ফ্লাইট একই রুটে চলার সময় বিধ্বস্ত হয়। ২০১৮ সালে বাংলাদেশের ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ঢাকা থেকে কাঠমান্ডু যাওয়ার পথে অবতরণ করার সময় বিধ্বস্ত হয়। উড়োজাহাজে আগুন লেগে ৭১ যাত্রীর ৫১ জনই মারা যান।