দ্বৈত নাগরিকত্ব ও পাসপোর্টের ১৩,৯৩১ বাংলাদেশির তালিকা হাইকোর্টে প্রেরণ
পুলিশের ইমিগ্রেশন বিভাগ হাইকোর্টে উপস্থাপনের জন্য দ্বৈত নাগরিকত্ব এবং দ্বৈত পাসপোর্টধাারী ১৩ হাজার ৯৩১ জন বাংলাদেশি নাগরিকের নাম এবং ঠিকানাসহ প্রতিবেদন অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে জমা দিয়েছি।
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল (এএজি) আন্না খানম কলি এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, প্রতিবেদনে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা ১৩ হাজার ৯৩১ জন বাংলাদেশি নাগরিকের স্বদেশ ও বিদেশের বর্তমান ঠিকানা উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলতে পারেননি ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা প্রতিবেদনে দ্বৈত নাগরিকত্ব এবং দ্বৈত পাসপোর্ ধারী বাংলাদেশি নাগরিকদের বিবরণ উল্লেখ করেছেন কিনা, যারা অর্থ পাচারের মাধ্যমে বিদেশে বাড়ি কিনেছেন বা তৈরি করেছেন।
এএজি আন্না খানম কলি যোগ করেছেন “দ্বৈত নাগরিকত্ব এবং দ্বৈত পাসপোর্টের বিষয়ে ইমিগ্রেশন বিভাগের কাছ থেকে আমি যে রিপোর্ট পেয়েছি তাতে কয়েক হাজার পৃষ্ঠা রয়েছে। আমি এর বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিশদ বলতে পারি না। বৃহস্পতিবার আমি হাইকোর্টে এটি জমা দেব।”
ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের ২১ শে ডিসেম্বর, হাইকোর্ট দ্বৈত নাগরিকত্ব এবং দ্বৈত পাসপোর্টধারী বাংলাদেশি নাগরিকদের নাম এবং ঠিকানাগুলির একটি তালিকা চেয়েছিলেন, যারা অর্থ পাচারের মাধ্যমে বিদেশে বাড়ি কিনেছেন বা তৈরি করেছেন।
গত বছরের ২২ নভেম্বর জারি করা একটি সু মোটোর (স্বপ্রণোদিত) বিধি শুনানি চলাকালীন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের অধীনে ইমিগ্রেশন বিভাগের প্রধানকে দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রামের শাহ আমানাত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সিলেটের এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেরেকর্ড থেকে তথ্য সংগ্রহের পরে তালিকা জমা দিতে বলেছিলেন। এর আগের দিন একই হাইকোর্ট বেঞ্চ বাংলাদেশিদের বিদেশে অর্থ পাচার থেকে বিরত রাখার জন্য আদেশ জারি করে এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে অর্থ পাচার বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেয়।
ইমিগ্রেশন পুলিশের দেওয়া প্রতিবেদন অনুসারে দেশপ্রতি দ্বৈত নাগরিকদের সংখ্যা- আমেরিকা ১০ হাজার ৭৭৪ জন, আফগানিস্তান ৯ জন, আলজেরিয়া ১ জন, এন্টিগুয়া ৫ জন, অস্ট্রেলিয়া ১৭৮ জন, অস্ট্রিয়া ৭ জন, বাহামিয়ান ১ জন, বাহরাইন ২ জন, বারবাডিয়ান ১ জন, বেলজিয়াম ২১ জন, ভুটান ২ জন, বলিভিয়া ১ জন, বসনিয়া ১ জন, ব্রাজেলিয়ান ২ জন, ইংল্যান্ড ৫৬৮ জন, ব্রুনাই ২ জন, বুলগেরিয়া ১ জন, কানাডা ৩৮৯ জন, কম্বোডিয়া ২ জন, চিলি ১ জন, চায়না ১৭৭ জন, ডেনমার্ক ৫ জন, জিবুতি ১ জন, ডমিনিকান ৩ জন, ডাচ ১২ জন, পূর্ব টিমর্স ১ জন, মিশর ১১ জন, সাইপ্রাস ২ জন, ফারো দ্বীপপুঞ্জ ১ জন, ফিলিপাইন ৪০ জন, ফিন্স ২১ জন, ফ্রান্স ২১ জন, জার্মান ২৩৮ জন, গ্রীক ৩ জন, হংকং ১৫ জন, ইন্ডিয়া ৬১৭ জন, ইন্দোনেশিয়া ৪০ জন, ইরান ৭ জন, ইরাক ৭ জন, আইরিশ ১১ জন, ইতালি ১১৭ জন, জাপান ৬৬ জন, জর্ডান ১ জন, কেনিয়া ৩ জন, উত্তর কোরিয়া ১ জন, দক্ষিণ কোরিয়া ৪১ জন, কুয়েত ২ জন এবং কিরগিজ ২ জন।
এছাড়াও লাটভিয়ান ১ জন, লেবানন ২ জন, লিবিয়া ১ জন, লুক্সেমবার্গ ১ জন, মালয়েশিয়া ৭৬ জন, মালদ্বীপ ১৩ জন, মালিয়ান ৪ জন, মরিশাচের ২ জন, মালদোভান ২ জন, মঙ্গলীয়ান ৫ জন, মায়ানমার ৮ জন, নেপাল ২২ জন, নিউজিল্যান্ড ১২ জন, নাইজেরিয়ান ৩ জন, নরওয়ের ৩ জন, পাকিস্তানি ১১৯ জন, ফিলিস্তিনে ১ জন, পেরু ১ জন, ফিলিপাইনে ২ জন, পোল্যান্ডের ৪ জন, পর্তুগালে ৬ জন, কাতার ১ জন, রোমানিয়ান ৩ জন, রাশিয়ান ৬৫ জন, গ্রানাডা ১ জন, সৌদি আরব ১০ জন, সিঙ্গাপুর ১৭ জন, সোমালিয়া ১৬ জন, দক্ষিণ আফ্রিকা ১৩ জন, স্প্যানিশ ১১ জন, শ্রীলঙ্কা ৫৭ জন, সেন্ট কিটস এন্ড নেভিস ৪ জন, সুইডেন ৫৯ জন, সুইজারল্যান্ড ২৩ জন, তাইওয়ান ৬ জন, তানজেনিয়া ৮ জন, থাইল্যান্ড ২৬ জন, তিমুর ১ জন, ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাংগনিয়ান ১ জন, তুর্কি ১৫ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ৮ জন, উগান্ডা ৬ জন, ইউকরেইন ৪ জন, উজবেকিস্তান ২ জন, ভেনিজুয়েলা ২ জন, ভিয়েতনাম ৫ জন, ওয়ালেস এন্ড ফুটুনা ১ জন, ইয়েমেন ৩ জন ও জিম্বাবুয়েতে ২ জন ব্যক্তি দ্বৈত নাগরিক হিসেবে বসবাস করছেন।
