দক্ষিণ আফ্রিকায় ১২ দিনে খুন পাঁচ বাংলাদেশি

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের হত্যা যেন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলতি মাসের ৭ তারিখ থেকে শনিবার পর্যন্ত ১২ দিনে সন্ত্রাসীদের পাঁচ বাংলাদেশি থুন হয়েছে। দারুণ উচ্ছ্বাস নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমানো মানুষগুলোর পরিবার ভাসছে শোকের সাগরে।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টায় বাণিজ্যিক রাজধানী জোহানেসবার্গের বেননী এলাকায় নিজ বাসায় ডাকাতের গুলিতে খুন হন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী মীর হোসেন মিরাজ। অস্ত্রের মুখে মিরাজের বাসায় থাকা অন্যান্য সদস্যদের বাথরুমের মধ্যে আটকে রেখে নগদ অর্থ, মূল্যবান জিনিসপত্র ও ব্যাংকের কার্ড নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাত দল মিরাজের বুকে ও মাথায় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।

ডাকাতের গুলিতে আহত হওয়ার পর গত ৮ ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় বাংলাদেশি তরুণে সাইফুল ইসলামের। নোয়াখালীর মাইজদীর বাসিন্দা সাইফুল কুরমান এলাকায় নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালুর এক মাসের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হন। দুই সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে কিম্বার্লি প্রাদেশিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

Travelion – Mobile

১৪ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে প্রিটোরিয়া শহরে বাংলাদেশি মনির হোসেন নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হানা দেয় সন্ত্রাসীরা। নির বাধা দিলে দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে হত্যার পর টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের পাথরঘাটা গ্রামের পলান মিয়ার ছেলে মনির হোসেন ও তার মেঝো ভাই ইমদাদুল হক প্রায় ১০ বছর আগে পাড়ি জমান দক্ষিণ আফ্রিকায়।

দক্ষিণ আফ্রিকার থাবানচু এলাকায় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় রাত পৌনে ৮টার দিকে মুদি ব্যবসায়ী মো. গোলাম মোস্তফাকে হত্যা করে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী। চাঁদা না দেওয়ায় এ বাংলাদেশি যুবককে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায় একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের জয়নাল আবেদিন মেম্বারের ছোট ছেলে গোলাম মোস্তফার স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে।

সবশেষ শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দেশটির প্রিটোরিয়া সংলগ্ন হামাসক্রালে মো. হাসান নামে আরেক বাংলাদেশিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। রাত ১০টার দিকে কয়েকজন ডাকাত দোকানে প্রবেশ করে হাসানকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করলে ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। পরে ডাকাত দল দোকানের নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিস নিয়ে পালিয়ে যায়।

জানা যায়, দক্ষিন আফ্রিকায় বৈধভাবে এক লাখের মতো বাংলাদেশি রয়েছেন। দেশটিতে এখনো শ্বেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য ব্যাপক এবং ভূমির মালিকানা নিয়েও রয়েছে চরম অসন্তোষ। সেই সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরে দেশটিতে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে, স্থানীয়দের মধ্যে বেকারত্বের হার ২৮ শতাংশ। কর্মসংস্থান না থাকায় কেপটাউন এবং জোহানসবার্গসহ বড় শহরগুলোর অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া দেশটির একটি বড় সমস্যা।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!