জমকালো আয়োজনে পর্দা উঠল দুবাই এয়ার শো’র

যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ও সফল এয়ার শো এবং মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও আফ্রিকার বৃহত্তম এরোস্পেস ইভেন্ট ‘দুবাই এয়ার শো-২০১৯’ এর পর্দা উঠেছে। দুবাই ওয়ার্ল্ড সেন্টারে (ডিডব্লিউসি) ২১ নভেম্বর পর্যন্ত ৫ দিনের এই দ্বিবার্ষিক প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে ১৬০ দেশের প্রায় ১৩শ প্রতিষ্ঠান। সরকারি পৃষ্টপোষকতায় ১৯৮৯ সালে শুরু হওয়া দুবাই এয়ার শো এভিয়েশন কোম্পানিগুলোর বৈশ্বিক প্লাটফর্মে পরিণত হয়েছে।

রোববার (১৭ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সকালে দুবাইয়ের শাসক মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুম এবং আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সশস্ত্র বাহিনীর ডেপুটি সুপ্রিম কমান্ডার শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ১৬তম দুবাই এয়ার শো’র উদ্বোধন করেন।

দুবাইয়ের শাসক মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুম এবং আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ‘দুবাই এয়ার শো-২০১৯’ উদ্বোধন করেন।
দুবাইয়ের শাসক মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুম এবং আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ‘দুবাই এয়ার শো-২০১৯’ উদ্বোধন করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন দুবাইয়ের ক্রাউন প্রিন্স শেখ হামদান বিন মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম, দুবাই এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তারা।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী এবং দুবাইয়ের শাসক মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুমের আমন্ত্রণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ দিয়েছেন বর্নাঢ্য এই এয়ার শো’তে।

Travelion – Mobile

আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অতিথিরা শোতে অংশ নেয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টল ঘুরে দেখেন এবং দুবাইয়ের আকাশে জমকালো বিমান উড়ান প্রদর্শনী উপভোগ করেন। এয়ার শোতে এয়ারবাস ও বোয়িংয়ের মতো বড় সংস্থাগুলির পাশাপাশি ছোট ছোট সংস্থা, বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী সংস্থা তাদের সামরিক ও বেসামরিক পণ্য প্রদর্শন করছে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ দিয়েছেন ‘দুবাই এয়ার শো-২০১৯’তে
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ দিয়েছেন ‘দুবাই এয়ার শো-২০১৯’তে

২০১৭ সালের দুবাই এয়ারশোতে ৬৩টি দেশের ৭৯ হাজার ৩৮০ জন যোগদানকারী ও ১২শ’ এক্সিবিটরকে স্বাগত জানানো হয়েছিল। আশা করা হচ্ছে এবারের এয়ার শো অতীতের সাফল্যকে ছাড়িয়ে যাবে।

এবারে পাঁচ দিনের আসরে ১,৩০০ এরও বেশি প্রদর্শক,এবং ১৬৫ টি উড়োজাহাজ প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হচ্ছে। শোটিতে পাঁচ দিনে প্রায় ৯০ হাজার দর্শনার্থী অংশগ্রহন করবে বলে আশা করছে আয়োজকরা।

২০১৭ সালে দুবাই এয়ারশোতে ১১৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যে অর্ডার পাওয়া গিয়েছিল। যার মধ্যে ছিল এয়ারবাস থেকে ৪৩০টি উড়োজাহাজের জন্য ভারতের ইন্ডিগোর ৪৯.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বোয়িংয়ের সাথে ফ্লাইডুবাইয়ের ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্ডার চুক্তি।

প্রদর্শনীর শুরুতেই বিশ্বের শীর্ষ দুই বিমান নির্মাণ সংস্থা বোয়িং এবং এয়ারবাস আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক কেরিয়ারগুলোর কাছ থেকে নতুন বিমানের অর্ডার নিতে আকর্ষনীয় অফার নিয়ে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছে।

এভিয়েশন বিশ্লেষকরা বলছেন, যে ১৭ থেকে ২১ শে নভেম্বর চলমান দ্বিবার্ষিক বেসামরিক ও সামরিক প্রদর্শনীতে বেশ কয়েকটি বড় আদেশ প্রত্যাশা করা হচ্ছে। কিছু মেগা প্রতিরক্ষা চুক্তিও এই ইভেন্টে স্বাক্ষরিত হতে পারে।

‘দুবাই এয়ার শো-২০১৯’
‘দুবাই এয়ার শো-২০১৯’

শারজাহভিত্তিক স্বল্প মূল্যের বিমানসংস্থা এয়ার এরাবিয়া এয়ারবাসের নিও পরিবারের একশ’টিরও বেশি বিমানের জন্য একটি চুক্তি ঘোষণা করতে পারে। সম্ভাব্য আদেশে এ ৩২১ নিও (A321neo) এবং এ ৩২১ নেক্স এক্সএলআর (A321nex XLR) মডেলগুলির মিশ্রণ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দুবাইভিত্তিক বিশ্বখ্যাত এমিরেটস এয়ারলাইন্স এয়ারবাস এ ৩৫০ (A350) এবং এ ৩৩০ নিও (A 330 neo) উড়োজাহাজের জন্য একটি চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া ৪০ টি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের জন্য ১৫ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি এবং বোয়িং ৭৭৭ এক্স (777X) এর জন্য একটি আদেশে রদবদল করতে পারে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত বিমানসংস্থাগুলি ছাড়াও, কুয়েতের জাজিরা এয়ারওয়েজ এবং ওমানের সালামএয়ার নতুন আদেশের জন্য এ ৩২০ নিও বেছে নিতে পারে। এভিয়েশন সূত্র জানিয়েছে, কুয়েতের আলাফকোও ৩২০ নিও উড়োজাহাজের জন্য অর্ডার দিতে পারে।

প্রতিদিন সকাল ১০:০০ থেকে বিকেল ৫:৩০ প্রদর্শনী চলবে। দুপুর ২ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত দুবাইয়ের আকাশে চলবে উড়োজাহাজের উড়ান প্রদর্শনী। সব প্লেন উড়বে না তবে এখনও নিশ্চিত হওয়া ডিসপ্লেগুলিতে একটি এয়ারবাস এ ৩৩০ নিও, একটি বোয়িং ৭৪৭ ড্রিমলাইনার, ফরাসি রাফালে যুদ্ধবিমান এবং আরএএফ ইউরোফাইটার টাইফুন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

দুবাই এয়ারশো একটি বাণিজ্যিক ইভেন্ট এবং সাধারণ মানুষের জন্য তা উন্মুক্ত নয়। তবে আল মাকতুম বিমানবন্দরের আশেপাশের অধিবাসীরা কিছু উড়োজাহাজের উড়ান প্রদর্শনী উপভোগ করতে পারেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!