কোয়ারেন্টিনে এসি, অ্যাটাচড বাথরুম আর চাইনিজ খাবার দাবি লন্ডনপ্রবাসীর!

‘লন্ডনে পরীক্ষা করানো হয়েছে। আবার কেন বাংলাদশে পরীক্ষা করতে হবে। আমি বাসা থেকে বের হবো। হোম কোয়ারেন্টিন মানব না। প্রয়োজনে আমি ব্রিটিশ হাইকমিশনে আপনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবো। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে গেলে আমাকে এসি ও অ্যাটাচ বাথরুমের ব্যবস্থা করে ব্যবস্থা করে দিতে হবে।’

এমনই হুংকার আর আবদার দেশে আসা এক লন্ডনপ্রবাসীর। করোনা পরিস্থিতিতে হোম কোয়ারেন্টিন মানার অনুরোধ করলে সরকারি সংস্থাসহ সংশ্লিষ্টদের বেশ রাগান্বিত স্বরেই এ কথা বলেন তিনি। পরে ওই প্রবাসীকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। সুযোগ থাকায় বিজয়নগর উপজেলার প্রাতিষ্ঠানিক হোম কোয়ারেন্টিনে (নবনির্মিত হাসপাতাল) অ্যাটাচড বাথরুমের একটি অালাদা রুম তাকে দেওয়া হয়েছে। তবে সেটিতে এসি নেই। কিন্তু সেখানে গিয় তার নতুন বায়না তিন বেলা চাইনিজ খাবার।

তাঁর বাড়িতে লাল পতাকা টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের।

Travelion – Mobile

জাতীয় দৈনিক কালের কন্ঠের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১১ মে প্রবাসী মো. মাসুম চৌধুরী দেশে আসেন। এরপর থেকে তিন ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের নিয়ম মানছিলেন না। নাসিরনগর সদরের বাড়িতে গিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার ওই ব্যক্তিকে কোয়ারেন্টিন মানার অনুরোধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ব্যক্তি কৃষি অফিসারের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। পরবর্তীতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গেলে তাঁর সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন।

অবশেষে বৃহস্পতিবার সকালে ছুটে যান নাসিরনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) তাহমিনা আক্তার। ওই প্রবাসী তাঁকেও পাত্তা দিচ্ছিলেন না। খবর পেয়ে ছুটে যান নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজমা আশরাফী। সেনাবাহিনীর টহল টিম, পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদেরকে নিয়ে গিয়ে আবারো হোম কোয়ারেন্টিন মানতে বলা হয়। এ সময় তিনি নানা ধরণের কথা বলতে থাকেন।

যারা অভিযানে গেছেন তাঁরা ছোট চাকরি করেন, ছোট মনমানসিকতার লোক ইত্যাদি বলতে থাকেন। এক পর্যায়ে পুলিশ ফোর্স ও সংশ্লিষ্টদেরকে পিপিই পড়িয়ে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন ইউএনও। এ অবস্থায় প্রবাসী কিছুটা নমনীয় হয়ে আসেন।

প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে যাওয়ার কথা বললে তিনি এসি ও অ্যাটাচ বাথরুমের ব্যবস্থা করে দিতে বলেন এক পুলিশ কর্মকর্তাকে। পরে তাকে জেলার বিজয়নগর উপজেলার প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়।

ইউএনও নাজমা আশরাফী জানান, “এর আগেও ওই পরিবারের দুইজন আমেরিকান প্রবাসী তথ্য গোপন করে এলাকায় প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করেন। তারা নবীনগর থেকে নাসিরনগরে চলে আসেন। পরে তাদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা হয়। লন্ডনফেরত ওই প্রবাসীকে এখন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।”

ওই প্রবাসী ও তার পরিবার আচরণকে দুঃখজনক বলে তিনি মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে প্রবাসী মো. মাসুম চৌধুরী প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে গিয়ে তিনি চাইলেন চাইনিজ খাবার খেতে। সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি তিন বেলা চাইনিজ খাবার দেয়ার দাবি তুলেন।

এ প্রসঙ্গে ইউএনও মেহের নিগার বলেন,‘ওনার চাহিদা অনুযায়ী ইচ্ছে করলেই চাইনিজ খাবার দেওয়া সম্ভব না। ইচ্ছে করলেই এসি লাগিয়ে দেওয়া সম্ভব না। তবে কোয়ারেন্টিন সেন্টারটি অব্যবহৃত হাসপাতাল হওয়ার পরিবেশ খুবই ভালো। এখানে থাকা খুব একটা অসুবিধার কিছু না। ওনাকে বলেছি শান্ত থাকতে।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!