কুয়েতে টানা ২০ দিন পুরোপুরি লকডাউন ও কারফিউ
কুয়েতে করোনাভাইরাস বিস্তার প্রতিরোধে রবিবার (১০ মে) বিকেল চারটা থেকে ৩০ মে পর্যন্ত টানা ২০ দিন পুরোপুরি লকডাউন জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে ১৬ ঘন্টা বাড়িয়ে ২৪ ঘন্টা কারফিউ বলবৎ করা হয়েছে, তবে জনগণ তাদের নিজ এলাকায় যানবাহন ব্যবহার না করে কারফিউয়ের মধ্যে দিনে দুই ঘন্টা চলাফেরা করতে পারবেন।
আজ শুক্রবার (৮ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ খালেদ আল-হামাদ আল সাবাহার সভাপতিত্বে মন্ত্রী পরিষদের বিশেষ বৈঠকে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সুপারিশে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে শেষে দেশটির উপ প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আনাস আল-সালেহ বিবৃতিতে কারফিউয়ের এই ঘোষণা দেন। এর আগে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি লকডাউনের সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি লাইভ ভিডিও বৈঠকে জরুরি বিভাগে কর্মরত ব্যক্তিদের জন্য কারফিউ পাস প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পুরোপুরি কারফিউ জারির বিধিনিষেধ নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দেন, যা নিচে তুলে ধরা হল:
কারফিউ বাস্তবায়ন এবং মামলা মোকাবেলার জন্য ছয়টি প্রদেশে জরুরী দল গঠন করা হয়েছ।
জনগণকে কারফিউ চলাকালীন বিকেল সাড়ে ৪ টা থেকে সাড়ে ৬ টা পর্যন্ত দুঘন্টা নিজ আবাসিক এলাকায় গাড়ি ব্যবহার ছাড়াই চলাফেরা করার সুযােগ দেওয়া হয়েছে। তাদের অবশ্য মাস্ক পরতে হবে এবং শারীরিক দূরত্ব মেনে চলতে।
কেবলমাত্র প্রয়োজনীয় সরকারী বিভাগগুলির কাজ চলবে। বেসরকারি খাতের সংস্থার কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। মন্ত্রিসভা কর্তৃক নির্ধারিত ঠিকাদার, সমবায় সমিতি, খাবারের দোকান এবং ফার্মেসি খোলা থাকবে। হোম ডেলিভারি বন্ধ থাকবে।
মিডিয়াগুলোর সরাসরি সাক্ষাত্কার অনুষ্ঠান স্থগিত থাকবে, তার অনলাইন সাক্ষাত্কারের চলবে । সংবাদপত্র ও মিডিয়া প্রকাশনার বিতরণও বন্ধ থাকবে।
সরকার আশা করছে যে, জনসাধারণ পুরোপুরি কারফিউ এবং স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশাবলী মেনে চলবে। বাড়িতে অবস্থান, জনসমাগম এড়ানো, শারীরিক দূরত্ব বজায় এবং মুখোশ ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেকে নিরাপদ রাখবেন।
আল-সালেহ বলেন, এই ব্যবস্থা করোনাভাইরাস হ্রাস ও চূড়ান্তভাবে নির্মূল করতে অবদান রাখবে, যা ধীরে ধীরে পুনরায় খোলার এবং স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে সহায়তা করবে।
এছাড়া মন্ত্রিসভা ও সরকারী বিভাগ থেকে ভাড়া নেওয়া ব্যক্তিদের করোনা পরিস্থিতির সময়ে ইজারা প্রদান থেকে ছাড় দেওয়া হবে।
এর আগে মন্ত্রী পরিষদের বিশেষ বৈঠকে শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কুয়েত জুড়ে পুরােপরি লকডাউনের বিস্তারিত তুলে ধরতে গিয়ে বলেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, বিদেশ থেকে বাহরাইনের নাগরিকদের প্রত্যাবর্তনের পরে মন্ত্রিপরিষদ ৪ এপ্রিল থেকে পুরোপুরি লকডাউন করার জন্য সিদ্বান্ত নিয়েছে। আমরা আশা করি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সকল চেক শেষে জীবন স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ ডা. বাসেল আল-সাবাহ বলেন, পুরোপুরি লকডাউনের সময়কালের পরে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা বিবেচনায় রেখে ধীরে ধীরে সবকিছু খুলে দেওয়া হবে।
বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী খালেদ আল-রোধন বলেছিলেন,”আমরা করোনার সঙ্কটকে স্বাস্থ্য থেকে খাদ্যে যেতে দেব না, কারণ সামুদ্রিক এবং বিমান সরবরাহের লাইন খোলা রয়েছে এবং দীর্ঘদিনের জন্য কৌশলগত ও পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে, তাই উদ্বিগ্ন হত্তয়ার কোনও কারণ নেই।”
তিনি আরও যোগ করেন যে, আমরা সপ্তাহে একবার প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য বারকোডের মাধ্যমে সমবায় সমিতি এবং সুপারমার্কেটগুলিতে যাওয়ার জন্য একটি সিস্টেম চালু করেছি এবং আমরা সংরক্ষণ বা সরবরাহের মাধ্যমেও গ্যাস সিলিন্ডার বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি।