কুয়েতে কমছে বাংলাদেশি কর্মীর কোটা
উপসাগরীয় দেশ কুয়েতে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। ফলে দেশটিতে ৪ মাসেরও বেশি সময় লকডাউন-কারফিউ শেষে একটি বাদে বাকি সব এলাকা থেকে লকডাউন উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে পুরো কুয়েতে ৯ ঘণ্টার কারফিউ চলছে, রাত ৮টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত। স্বাস্থ্যবিধি মেনে, ধাপে ধাপে জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠান চালু হচ্ছে; খুলেছে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও খুলেছে; তবে স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ীরা অনেকটাই চিন্তাগ্রস্ত। কুয়েতের প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলো লকডাউন মুক্ত হওয়াতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেকেই কাজে যোগ দিয়েছেন।
তবে করোনা পরিস্থিতিতে এরই মধ্যে অনেকে কাজ হারিয়েছেন। অর্থাভাবে স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ীরা ফের ব্যবসা চালু করতে প্রায় অক্ষম। অর্থাৎ পুঁজি হারাতে বসেছেন শত শত ক্ষুদ্র-মাঝারি প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী।
কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসের কারণে কুয়েতে প্রায় দুই লাখেরও বেশি প্রবাসী কর্মহীন হয়ে পড়বেন। দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যম এ খবরটি প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের প্রবাসীদের মধ্যে করোনা পরিস্থিতির আগে ছুটিতে গিয়ে যাদের আকামার মেয়াদ শেষ হয়েছে, তাদের ফের কুয়েতে প্রবেশ অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এদিকে জনসংখ্যা বৈষম্য নিরসনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েত। মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের কম অভিবাসী হওয়া উচিত, কিন্তু এখন মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ স্থানীয় নাগরিক আর ৭০ শতাংশ অভিবাসী, এই অনুপাতের কথা বলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।
কুয়েতের জনসংখ্যা প্রায় ৪৮ লাখ, যার মধ্যে সাড়ে ১৪ লাখ স্থানীয় নাগরিক এবং প্রায় ৩৪ লাখ অভিবাসী। প্রধানমন্ত্রীর মতে, আদর্শ জনসংখ্যার কাঠামো কুয়েতি ৭০ শতাংশ এবং অভিবাসী ৩০ শতাংশ হওয়া উচিত। অনদিকে, আরেকটি বিষয় প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি কুয়েত সরকার তার দেশ থেকে অভিবাসীদের সংখ্যা কমিয়ে আনতে একটি প্রবাসী কোটা বিল প্রণয়ন করেছে বলে খবর প্রকাশ হয়েছে। জানা গেছে, ওই খসড়া আইনে বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য মাত্র ৩ শতাংশ কোটা প্রস্তাব করা হয়েছে।
আগের খবর : কুয়েতে সরকারি থেকে বেসরকারি খাতে প্রবাসীদের আকামা স্থানান্তর নিষিদ্ধ
বর্তমানে কুয়েতে বিভিন্ন পেশায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। একদিকে করোনা পরিস্থিতিতে প্রবাসীরা চাকরি ও স্বল্প পুঁজির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হারানোর শঙ্কায়; অন্যদিকে কুয়েতের মন্ত্রী পরিষদে প্রবাসী কমানোর এ প্রস্তাব উত্থাপন, সব মিলিয়ে স্বস্তি নেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
কুয়েত সরকারের প্রবাসী কমানোর খসড়া আইন প্রণয়ন প্রসঙ্গে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলর ও দূতাবাস প্রধান মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, ওই খসড়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে তিন শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। এই আইনের বাস্তবায়ন হওয়ার আগে কুয়েতি কতৃর্পক্ষের সঙ্গে আলোচনার করে খসড়ায় উল্লেখিত শতাংশ আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছি আমরা।”
আনিসুজ্জামান আরও জানান, একাধিক কোম্পানিতে প্রবাসীদের বকেয়া বেতন পাইয়ে দিতেও দূতাবাস আইনি সহযোগিতা দিচ্ছে।
দূতাবাসের জ্যেষ্ঠ এ কর্মকর্তা আরও জানান, করোনা পরিস্থিতির আগে যেসব প্রবাসী বাংলাদেশে গিয়েছিলেন, বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালু হওয়ার পর এক পর্যায়ে তারা ফের কুয়েতে আসতে পারবেন। তবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির স্পন্সর (কফিল) প্রতিনিধির (মন্দুব) সঙ্গে আকামা সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এছাড়াও তিনি যোগ করেন, প্রবাসীদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেবামূলক কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিশেষ করে পাসপোর্ট ডেলিভারি ও নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া সহজতর করা হয়েছে।
এছাড়াও প্রবাসীদের সুবিধার্থে বিনামূল্যে এক বছর মেয়াদের পাসপোর্ট নবায়ন করে দেওয়া হচ্ছে।
কেমন আছেন কাতারপ্রবাসী বাংলাদেশিরা
কেমন আছেন কাতারপ্রবাসী বাংলাদেশিরাবীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর ফারুক চৌধুরী, উপদেষ্টা – বাংলাদেশ কমিউনিটি, কাতারমোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন , বিজনেস ম্যানেজার, আল-জামান এক্সচেঞ্জ, আমিন রসুল (সাইফুল), সেক্রেটারি-জেনারেল – বাংলাদেশ কমিউনিটি কাতার সমন্বয় ও সহযোগিতা : নুর মোহাম্মদ, লেখক ও সাংবাদিকসঞ্চালনায় : আহমেদ তোফায়েল, সাংবাদিক ও উপস্থাপক
Posted by AkashJatra on Monday, July 20, 2020