এক ফ্লাইটে ১৪৫ দেশের যাত্রী, এমিরেটস্’র বিশ্ব রেকর্ড
সংযুক্ত আরব আমিরাত বিশ্বের অন্যতম শান্তিপ্রিয় দেশ যেখানে ধর্ম, জাতি বা লিঙ্গ নির্বিশেষে বিভিন্ন দেশ ও পটভূমির নাগরিকরা শান্তিপুর্ণ সহাবস্থান বসবাস করছেন।
দেশটির ৪৮ তম জাতীয় দিবস এবং ‘সহনশীলতার বছর’ উদযাপন করতে বসবাসরত সব দেশের নাগরিকদের নিয়ে বৈচিত্রময় আয়োজনের একটি বিশেষ ফ্লাইট উড়িয়ে রীতিমত বিশ্ব রেকর্ড করে ফেলেছে বিশ্বখ্যাত বিমানসংস্থা এমিরেটস ।
এ উপলক্ষে একটি ‘ওয়ান-অফ ফ্লাইট’ পরিচালনা করে এমিরেটস, যা জায়গা করে নিয়েছে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে। মাত্র ৯০ মিনিট ওড়া এমিরেটস্’র ফ্লাইট একে ২০১৯ এয়ারবাস এ৩৮০ (A380) উড়োজাহাজটিতে ভ্রমন করে বিশ্বের ১৪৫ দেশের নাগরিক, যা গড়েছে একটি নতুন বিশ্ব রেকর্ড।
এক ফ্লাইটে সর্বোচ্চ দেশের দেশের নাগরিকের একসাথে ওড়ার নতুন বিশ্ব রেকর্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের পরিচালক তালার উমার । তিনি বলেন, ১৪৫ দেশের ৫৪১ যাত্রী নিয়ে ফ্লাইটটি আকাশে উড়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে।
মোট ৫৪১ জন যাত্রী নিয়ে উড়োজাহাজটি দুবাই বিমানবন্দর থেকে দুপুর ১২ টার কিছু পর ছেড়ে গিয়ে দেশটির সাতটি আমিরাত (রাজ্য) ও পারস্য উপসাগরের উপর দিয়ে উড়ে দুবাই বিমানবন্দরে ফিরে আসে।
উড়োজাহাজটি ৭ হাজার ফুটেরও কম দূরত্ব বজায় রেখে আকাশে তার পুরো উড়ান শেষ করে, যাতে যাত্রীরা আমিরাতের নৈসর্গীক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারেন।
এমিরেটসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফ্লাইটির আরাহী ছিল এমিরেটসের দাওয়াতি বিভিন্ন পটভূমি, জাতি, ধর্ম এবং সংস্কৃতি থেকে আসা যাত্রীারা এতে সাথারন নাগরিক ছাড়াও এমিরেটস গ্রুপের কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা ছিল।
বিশেষভাবে অলংকিত ও সাজানো উড়োজাহাজটিতে চড়াতে সকল যাত্রীদের একটি বিশেষ কাউন্টারের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব অমিরাতের ‘সহনশীলতার বছর’ নামাঙ্কিত বিশেষ বোর্ডিং পাস দেওয়া হয়। বোর্ডিং পাসে যাত্রীদের তাদের নাম এবং দেশের নাম লিখতে আহবান জানানো হয়। যাত্রীরা তা উল্লেখ করেন।
যাত্রীদের তাদের জাতীয় পোশাকে আসতে উত্সাহিত করা হয়েছিল এবং পুরো বিমান চলাকালীন, তাদের রঙিন পোশাকগুলি তাদের দেশের ঐতিহ্য এবং কৃষ্টিকে সম্মান জানিয়ে একটি প্রাণবন্ত কোলাজে পরিণত হয়েছিল।
ই কে ২০১৯ বিশেষ ফ্লাইটটি পরিচালনা করেনসংযুক্ত আরব আমিরাতের নাগরিক ক্যাপ্টেন আব্বাস শাবান, ক্যাপ্টেন শেখ সাইদ আল মাকতুম এবং জার্মানির ফার্স্ট অফিসার কারিন আর্নিং। সংযুক্ত আরব আমিরাতের নাগরিক পারসার জাফর হামাদের নেতৃত্বে বিশ্বের ১৮ টি দেশের ২২ জন কেবিন ক্রু যাত্রীদের ইন ফ্লাইট সেবা দেন।
এমিরেটনের ফ্লাইট অপরারেশনে প্রতিদিন গড়ে ১৫ টি দেশের নাগরিক কেবিন ক্রুরা যাত্রী সেবায় নিয়োজিত থাকে। আর এই বিমানসংস্থায় ৫০ টিরও বেশি নাগরিক কাজে নিয়োজিত আছেন।
উডডয়নের ঠিক আগে, যাচাই করতে আসা গিনিস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এর কর্মকর্তা ফ্লাইটের যাত্রী জাতীয়তার ভিত্তিতে গণনা করেন এবং ১৪৫ দেশের নাগরিক নিশ্চিত হওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন গিনিস বিশ্ব রেকর্ডস খেতাব ঘোষণা করেন।
Together We are ONE!☝️Here is a quick glimpse of today’s record breaking flight. I hope many of you can feel the amazing atmosphere on-board #EK2019 ✈️ #Emirates pic.twitter.com/qD4Wt3vy9L
— Sam Chui (@SamChuiPhotos) November 29, 2019
উড়ান শেষে যাত্রীরা নামার সময়, এই ঐতিহাসিক ইভেন্টে অংশ নেওয়ার জন্য তাদের প্রশংসাপত্র প্রদান করা হয়। রেকর্ডটি চিহ্নিত করতে এ ৩৮০ উড়োজাহাজের সামনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এবং আমিরাতের “সহনশীলতার বছর” উদযাপন স্মৃতি ধরে রাখতে উড়োজাহাজের ৫৪১ যাত্রী নিয়ে গ্রুপ ছবি তোলা হয় ।
পরিচালক তালাল ওমর তার বার্তায় বলেন, “আমরা আজ ইতিহাস তৈরির জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং আমিরাত এয়ারলাইন উভয়কেই অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই অর্জনটি সহনশীলতার চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ার এবং সংযমের আসল চিত্রটি দেখাতে আগ্রহী প্রতিফলিত করে। আমিরাত তাদের ধর্ম, জাতি বা লিঙ্গ নির্বিশেষে বিভিন্ন পটভূমির লোকদের জন্য সর্বদা শান্তির এবং সহাবস্থানের স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্ত লোক একত্রিত হয়ে এমন বৈচিত্র্য পরিবেশ তৈরি করতে দেখে অনুপ্রেরণা জাগায়। ”