উড়োজাহাজে গায়েব সাড়ে ৯ লাখ টাকার এক পাখি

ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় উড়ানসংস্থা গারুদার একটি ফ্লাইটে প্রায় ১১ হাজার ডলারের একটি পাখি গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। জাকার্তা থেকে পশ্চিম কালিমানটানের পনটিয়ানাকগামী ঐ ফ্লাইটটিতে রেন্ডি লেসমানা নামের এক যাত্রী তার এই পাখি হারানোর ব্যাপারে অভিযোগ তুলেন যার মূল্য ইন্দোনেশিয়ান মুদ্রায় অন্তত ১৫০ মিলিয়ন রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকার মতো)।

জার্কাতা পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, গায়েব হওয়া পাখিটি ছিল একটি চিত্রা দোয়েল বা ম্যাগপাই রবিন। এটির মালিক জানান, রাজধানী জাকার্তায় একটি পাখির শীর্ষ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার পর আরো বেশ কয়েকটি পাখির সাথে ম্যাগপাই রবিনটি নিয়ে তিনি নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন।

ফ্লাইটে উঠার আগে পশুপাখি বহনের যাবতীয় সব নীতিমালা মেনে ছয়টি খাঁচায় তার পাখিগুলোকে লাগেজের সাথে চেক-ইন করেছিলেন। রেন্ডি জানান, তার সাথে মোট আটটি পাখি ছিল যার মধ্যে দুটি ম্যাগপাই রবিন, তিনটি শামা পাকি আর তিনটি লাভ বার্ড।

Travelion – Mobile

কমপাস ডট কমের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যে ৬.১৫ তে ফ্লাইটটি জাকার্তা থেকে উড়াল দিয়ে রাত আটটায় পনটিয়ানাকে পৌছায়। অবতরণের পর ব্যাগেজ খোঁজার স্থানে গিয়ে রেন্ডি খাঁচাগুলোর জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর খাঁচাগুলো পেয়ে তিনি বুঝতে পারেন ম্যাগপাই রবিনের খাঁচাটি ভাঙ্গা এবং শূণ্য।

এই ঘটনা নিয়ে রেন্ডি বেশ আক্ষেপ করে জানান,“জীবন্ত প্রাণী বহনের সকল নিয়ম-কানুন মেনে তিনি পাখিগুলোকে উড়োজাহাজে চেক-ইন করেছিলেন। এমনকি এগুলোর জন্য তিনি পরিশোধ করেছিলেন ৩.৫ মিলিয়ন ইন্দো রুপী“।

পাখিগুলোকে উড়োজাহাজে নেওয়ার ব্যাপারে তিনি ব্যাখা দেন, “একটি জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য আমি তাদের প্রস্তুত করেছিলাম। তাই তারা ক্লান্ত হবে ভেবে তাদের কার্গো উড়োজাহাজে করে না নিয়ে আমি আরো ভালো মানের বিমানে নিয়ে যাচ্ছিলাম যেটি তাদের মনোবল অক্ষত রাখতে সহায়তা করেছে“।

ম্যাগপাই রবিনটির ব্যাপারে রেন্ডি বিশেষভাবে বলেন, “যেই পাখিটি হারিয়েছে সেটি এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি শীর্ষ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছে এবং এটিকে আমি চার বছর ধরে প্রশিক্ষণ দিয়েছি।“

পাখিটির কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “পাখিটি আমার কাছে এতটাই অমূল্য ছিল আমার কাছে যে একবার এটিকে ১৫০ মিলিয়ন ইন্দো রুপিতে বিক্রির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। তিনি যোগ করেন “এটিকে হারিয়ে আমার অনেক বড় আত্মিক ক্ষতি হয়েছে কারণ এটিকে আমি অনেক বেশি ভালবাসতাম।“

এই ঘটনার পর রেন্ডি সাথে সাথে জাকার্তা ফিরে গিয়ে সুকর্ণ-হাট্টা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পুলিশ এবং গারুদা বিমান কর্তৃপক্ষের একটি অভিযোগ দাখিল করার পরিকল্পনা করেন। সুপাদিও পনটিয়ানাক বিমানবন্দরে গারুদা বিমান সংস্থার ব্যবস্থাপক ইসমান কামানজায়া মিডিয়ার কাছে এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।

তিনি বলেন,“এখানকার বিমানবন্দর পুলিশ রেন্ডির সাথে উড়ানসংস্থাটির একটি সমঝোতার চেষ্ট করেন। তবে সমঝোতাটি কোন সমাধানে যায়নি, কারণ রেন্ডি এই সমঝোতা প্রত্যাখান করে কোন শান্তিপূর্ণ সমাধানে যাননি বরং তিনি এ ব্যাপারে অভিযোগ দাখিল করার ব্যাপারে অনড়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!