আমেরিকায় আটকেপড়া বাংলাদেশিদের ফেরাতে কাতার এয়ারওয়েজের চার্টার্ড ফ্লাইট
কাতার এয়ারওয়েজের চার্টার্ড ফ্লাইটে আমেরিকায় আটকেপড়া বাংলাদেশিদের দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ দূতাবাস এবং নিউইয়র্ক ও লস অ্যাঞ্জেলসে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের সঙ্গে সমন্বয় করে এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানানো হয়েছে, আটকে পড়াদের প্রত্যাবর্তনের জন্য কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিশেষ ভাড়া করা বিমানের (চার্টার্ড ফ্লাইট) ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফ্লাইটটি ১৪ বা ১৫ মে আমেরিকা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করার কথা।
নিউইয়র্ক কনস্যুলেট থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ দূতাবাস ওয়াশিংটন ডিসি এবং নিউইয়র্ক ও লস অ্যাঞ্জেলসে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের ওয়েবসাইটে আমেরিকায় এসে কোভিড-১৯ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আটকে পড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিক তাঁদের নিজ নিজ খরচে বিশেষ ফ্লাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার প্রত্যাশায় দূতাবাস ও কনস্যুলেটের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করেন।
ন্যূনতমসংখ্যক যাত্রীর টিকিট ক্রয় সাপেক্ষে ওয়াশিংটন ডালাস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট বা নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি এয়ারপোর্ট থেকে ১৪ অথবা ১৫ মে এ বিশেষ ফ্লাইট পরিচালিত হবে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ওয়েলিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাস এবং নিউইয়র্ক ও লস অ্যাঞ্জেলসে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলরা সমন্বিতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অরিক্স এভিয়েশন লিমিটেড নামের একটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান এই চার্টার ফ্লাইটে ভ্রমণে ইচ্ছুক আটকে পড়া যাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন ও টিকিট ইস্যুকরণসংক্রান্ত বিষয়ে কাতার এয়ারওয়েজের সঙ্গে সমন্বয় করছে। ফ্লাইটের প্রতিটি ইকোনমি ক্লাস (সুলভ শ্রেণি) টিকিটের মূল্য আনুমানিক ২ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার হতে পারে বলে ধারণা দেওয়া হয়েছে।
বিশেষ ফ্লাইটে নিজ খরচে দেশ ফিরতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি নাগরিকদের ৮ মের মধ্যে ঢাকায় অরিক্স এভিয়েশন লিমিটেডের অনলাইন পোর্টাল http://galaxyaviationbd.com/airticket/ এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন ও টিকিট ক্রয় করে ফ্লাইটে আসন নিশ্চিত করতে পারবেন। রেজিস্ট্রেশন ও টিকিট ক্রয়সংক্রান্ত জিজ্ঞাসা ও সহযোগিতার জন্য সরাসরি অরিক্স এভিয়েশন লিমিটেডের ই–মেইল ([email protected]) বা হোয়াটসঅ্যাপ ফোন নম্বরে (+৮৮০১৭১৩০৯৪৬৬৪) যোগাযোগ করা যেতে পারে।
চূড়ান্ত সংখ্যা নিশ্চিত হওয়ার পরই অরিক্স এভিয়েশন লিমিটেড ফিরতি ই–মেইলে যাত্রী বরাবর ইস্যুকৃত টিকিট ও ফ্লাইটসংক্রান্ত ও অন্য তথ্যাদি পাঠাবে বলে জানানো হয়েছে।
আরও জানানো হয়েছে, কেবল দূতাবাসে ই–মেইল পাঠানোর মাধ্যমেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোনো আগ্রহী যাত্রী এই বিশেষ ফ্লাইটে ভ্রমণের নিশ্চয়তা প্রাপ্ত হবেন না। ওই বিশেষ ফ্লাইটের আসনসংখ্যা সীমিত হওয়ায় অরিক্স এভিয়েশন লিমিটেডের অনলাইন ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে ‘আগে এলে আগে পাবেন’ ভিত্তিতে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন ও টিকিট ক্রয় করেই ওই বিমানে আসন নিশ্চিত করতে হবে।
বিশেষ ফ্লাইটে ভ্রমণের জন্য যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানানো হয়েছে, সেসব হলো আমেরিকার বিভিন্ন শহর ও অঙ্গরাজ্যে অবস্থানরত সব নিবন্ধিত ও টিকিট ক্রয়কৃত যাত্রীদের সম্পূর্ণ নিজ নিজ ব্যবস্থায়/যানবাহনে/অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে ওয়াশিংটন ডালাস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট বা নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি এয়ারপোর্টে নির্ধারিত দিন ও সময়ে উপস্থিত হতে হবে।
রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন ও টিকিট কেনা যাত্রীদের বরাবর কাতার এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে ফ্লাইটটি ছাড়ার চূড়ান্ত দিন, ক্ষণ ও বিমানবন্দরের নাম জানাবে। উড়োজাহাজে ভ্রমণের জন্য প্রত্যেক যাত্রীকে নিজ দায়িত্বে অবশ্যই ‘কোভিড-১৯–মুক্ত’ অথবা ‘কোভিড-১৯ উপসর্গমুক্ত’ মর্মে চিকিৎসকের সনদ সংগ্রহ করতে হবে। আমেরিকার যেকোনো হাসপাতাল অথবা চিকিৎসকের কাছ থেকে এই সনদ সংগ্রহ করা যেতে পারে। এই সনদ ফ্লাইটে যাত্রার আগে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সংগৃহীত হতে হবে।
ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণের পর যাত্রীদের আবারও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে এবং বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মোতাবেক বাধ্যতামূলকভাবে দুই সপ্তাহ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন বা হোম কোয়ারেন্টিনে অবস্থান করতে হবে।
বিশেষ ফ্লাইটের ক্রয়কৃত টিকিট বাতিল–অযোগ্য এবং টিকিটের মূল্য অফেরতযোগ্য। তবে কোনো বিশেষ বা অনিবার্য কারণে ফ্লাইটটির যাত্রা শেষ মুহূর্তে বাতিল হলে টিকিটিং এজেন্সি অরিক্স এভিয়েশন লিমিটেড যাত্রীদের টিকিটের মূল্য ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। কেবল বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী এবং ক্ষেত্রবিশেষে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী মা–বাবার সফরসঙ্গী বিদেশি পাসপোর্টধারী সন্তানেরা এই বিশেষ ফ্লাইটে ভ্রমণের জন্য অগ্রাধিকার পাবেন। তবে শুধু বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রীদের দিয়ে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনের ন্যূনতমসংখ্যক যাত্রী পূরণ করা না গেলে নিবন্ধিত তালিকা থেকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন পাসপোর্টধারী (যদি এমন কেউ নিবন্ধন করে থাকেন) যাত্রীদের ভ্রমণের জন্য বিবেচনা করা হতে পারে।