আমিরাতে পুলিশের সামনে উলঙ্গ নারী : ১০ বছর জেল, ৫ লাখ দিহরাম জরিমানা

সংযুক্ত আরব আমিরাতে সিআইডি কর্মকর্তাদের অবমাননা, লাঞ্ছনা ও হুমকি দেওয়া এবং উলঙ্গ হয়ে তদন্ত চালানো থেকে প্রতিরোধ করার অপচেষ্টার দায়ে এক নারীকে ১০ বছর জেল ও ৫ লাখ দিহরাম জরিমানা করেছে আদালত। ঘটনাটি আমিরাতের অন্যতম রাজ্য রাস আল-খাইমাহর, রায় দিয়েছে সেখানকার ফৌজদারি আদালত।

আদালতের রেকর্ড থেকে ঘটনা সর্ম্পকে জানা যায়, দুই তরুনী তাদের অপর দুই নারী ফ্ল্যাটমেটের বিরুদ্ধে অপমান, লাঞ্ছিত এবং তাদের জিনিসপত্র ছিনতাই করার অভিযোগ এনে রাস আল-খাইমাহর মামুরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। দু’জন পুলিশ কর্মকর্তা এই অভিযোগ তদন্ত করতে অ্যাপার্টমেন্টে গেলে, অভিযোগ করা সন্দেহভাজন নারীদের একজন তাদের প্রতিহত করে। তাদেরকে ধাক্কা দিয়ে দুরে ঠেলে দেয় এবং অশ্লীল ভাষায় অপমান করার সময় পুলিশের একজনের ক্যাপ ছিনিয়ে নেয়। এখানেই থেমে থাকেনি ওই নারী। একপর্যায়ে তিনি পুলিশ কর্মকর্তাদের সামনে কাপড় খুলে উলঙ্গ হয়ে দাবি করেন যে, তারা তাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেছিল। দ্বিতীয় সন্দেহভাজন নারী দুই পুলিশ সদস্যকে হুমকি দিয়েছিল এবং দাবি করেছে যে তারা তার হাতে আঘাত করেছে।

খালিজ টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়,পাবলিক প্রসিকিউশন মামলাটিকে রাস আল-খাইমাহ (আরএকে) ফৌজদারি আদালতে তুলে। আদালতে দ্বিতীয় সন্দেহভাজন নারী ডিফেন্স আইনজীবী প্রমাণের অভাবে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করেছিলেন। আইনজীবী আদালতে বলেন, “আমার ক্লায়েন্ট কোনও ভুল করেন নি। তিনি স্বীকার করেছেন যে প্রথম সন্দেহভাজন নারী মহিলাটি পুলিশদের সামনে তার কাপড় খুলেছিল, তাদেরর লাঞ্ছিত ও অপমানও করেছে”। তিনি আরও যোগ করেছেন যে রাষ্ট্রপক্ষের দুজন সাক্ষী নিশ্চিত করেছেন যে দ্বিতীয় সন্দেহভাজন নারী পুলিশ সদস্যদের প্রতিহত করেনিএবং কোনও সমস্যা তৈরি না করে স্বেচ্ছায় তাদের গাড়িতে উঠে পড়ে। আইনজীবী আরও বলেন, “আমার ক্লায়েন্ট (দ্বিতীয় সন্দেহভাজন) এমনকি প্রথম সন্দেহভাজন নারীকে পুলিশ সদস্যদের উপর আক্রমণ করা থেকে বিরত করেছিল”।

Travelion – Mobile

আরএকে ফৌজদারি আদালত বলেছে যে, প্রথম সন্দেহভাজন নারীর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে যা ফেডারেল দণ্ডবিধির ৮৮ ও ১৭৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সবচেয়ে কঠোর শাস্তির দাবিদার। আদালত রায় দেয়, “একই আইনের ৩৫৮ অনুচ্ছেদে তৃতীয় অভিযোগের জন্য (পুলিশ সদস্যদের হুমকি দেওয়া) জন্য পৃথক জরিমানা দিয়ে তাকেও (প্রথম সন্দেহভাজন নারীকে) অবশ্যই শাস্তি দিতে হবে”।

আদালত প্রথম সন্দেহভাজন নারীকে ১০ বছরের জেল দণ্ড এবং ৫ লাখ দিহরাম জরিমানার আদেশ দেয়। দ্বিতীয় সন্দেহভাজনকে সকল অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সময় শুধু তৃতীয় অভিযোগের জন্য ছয় মাস জেল খাটানোর আদেশ দেয় আদালত। প্রমাণের অভাবে দুই তরুণীর তোলা জিনিষপত্র ছিনতাইয়ের অভিযোগ থেকে তাদের দুজনকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!