মেসির জন্মদিন পালন, বাংলাদেশিদের ইপিএস ভবিষ্যত!

দীর্ঘদিন কোরিয়ায় থেকে যেটা উপলব্ধি করতে পেরেছি সেটা হলো কোরিয়ানদের দেশপ্রেম। এটা নিয়ে কোনো ধরনের কম্প্রোমাইজ তারা কোথাও করেনা কখনোই। যত ভালো বন্ধুই আপনি হোন, তার দেশকে সম্মান না করলে আপনি তার বাকীর খাতায় চলে যাবেন।

কোরিয়া-বাংলাদেশের বন্ধুত্ব অনেক পুরোনো। এই সম্পর্ক আরো জোড়দার হয় দুই দেশের পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে শ্রমিক প্রেরনের মাধ্যমে! এই পর্যন্ত সবকিছুই নিয়মমাফিক চলছিলো। দীর্ঘ প্রায় এক যুগের শ্রমিক রফতানির তালিকায় বাংলাদেশ সব সময়ই এগিয়ে ছিলো কোরিয়াতে অন্যদেশের তুলনায়!

মাঝখানে দুষ্টচক্রের খপ্পরে পড়ে আবার ঘুরেও দাড়িয়েছে কিছু নিবেদিতপ্রাণ মানুষের প্রচেষ্টায়। কিন্তু এবারের মতো পরিস্থিতির মুখোমুখী কখনোই হয়নি বাংলাদেশ। ম্যানেজমেন্টের অদক্ষতা কিংবা দূর্বলতাই হউক কিংবা সুযোগ সন্ধানী ঘরের শত্রু বীভিষনদের কর্মই হউক, করোনার এই দুঃসময়ে বাংলাদেশের হাত সাময়িকভাবে ছেড়ে দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া!

Travelion – Mobile

আরও পড়তে পারেন : কোরিয়ার নিষেধাজ্ঞা সরাতে প্রয়োজন দ্রুত পদক্ষেপ

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অনিয়ম, অব্যস্থাপনা আর দূর্বলতা সত্ত্বেও যেই কোরিয়া বাংলাদেশের পাশেই ছিলো সব সময়, তারা এতটা হার্ডলাইনে কেন গেলো, সেটা কি কেউ খতিয়ে দেখার চেষ্টা করেছে একবার?

বাংলাদেশের চুয়াডাঙার কোন অজপাড়া গায়ে মেসির জন্মদিন উৎসব পালন করা হয়েছে এই করোনার সময়ে সেটার নিউজ করে কোরিয়ান অনলাইন গণমাধ্যম! এইসব নেগেটিভ নিউজ কারা সরবরাহ করে কিংবা কারা তাদের উৎসাহিত করে এসব নিউজ করার জন্য, সেই বিষয়টা খতিয়ে দেখাও জরুরী!

একটা দুষ্টচক্র শুরু থেকেই জি টু জি পদ্ধতির এই শ্রমিক প্রেরনের বিরোধিতা করে এসেছে! সম্প্রতি ভিসা ইস্যু করে দেওয়ার নামে একধরনের দুষ্ট লোকের আবির্ভাব হয়েছিলো ইপিএসকে ঘিরে! তারা কেউ এই ধরনের নেগেটিভ নিউজ শেয়ার করার ক্ষেত্রে কোরিয়ান সরকারকে উৎসাহিত করছে কিনা কে জানে!

নির্ভর‍যোগ্য সূত্রে জানা গেলো যে, কোরিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাগন ইপিএস’র অচলাবস্থা কাটানোর জন্য প্রাণপন চেষ্টা করছেন কোরিয়ার ইপিএস সংশ্লিষ্ট লোকজনের সাথে।

আরও পড়তে পারেন : কোরিয়াকে আস্থায় আনতে পারলেই খুলে যাবে ইপিএস দ্বার

কোরিয়ান সরকার তাদের আশ্বস্ত করেছে এই বলে যে, যদি বাংলাদেশ তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারে, তাহলে খুব দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে কোরিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশি অনেক ব্যাবসায়ী, ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টরাও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন এইক্ষেত্রে।

তারা তাদের কোরিয়ান বন্ধু,ব্যবসায়িক পার্টনার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের কাছে যদি বাংলাদেশের পজেটিভ দিকগুলি রিপ্রেজেন্ট করেন, তাহলে বাংলাদেশ সম্পর্কে তারা একটা ইতিবাচক ধারনা পাবে। একটা দেশের জনগন নিয়েই সরকার এবং জনগনের মতামতের ভিত্তিতেই সরকারের অবস্থান। দেশের জনগন যদি বাংলাদেশ সম্পর্কে পজিটিভ ধারণা পায়, তাহলে সেটা সরকারের উপড়েও প্রভাব পড়বে, সেটা যত সামান্যই হোক।

কোরিয়াতে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশি ব্যাবসায়ীদের অনেকেই খুব ভালো কোরিয়ান ভাষা জানেন। তারা যদি সেখানকার গণমাধ্যমগুলিতে বাংলাদেশের ভালো নিউজগুলি প্রকাশ করেন, সেটাও খুব ইফেক্টিভ হবে আশা করি!

আরও পড়তে পারেন : দক্ষিণ কোরিয়ায় ইপিএস কর্মী, বঞ্চিত হল বাংলাদেশ!

অনেক ভাই কোরিয়াতে পিএইচডিসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করছেন, তারা যদি পজেটিভলি কিছু লিখে পাঠান গণমাধ্যমে এবং সেটা যদি প্রকাশিত হয়,তবে সেটাও খুব ভালো কাজ করবে আশা করা যায়।

বাংলাদেশ আমাদের, ইপিএস আমাদের! ঠিক এই চেতনা ধারন করে আমরা যদি সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে কোরিয়ানদের আস্থা ফেরানোর চেষ্টা করতে পারি, তাহলে কোরিয়ার এই লোভনীয় শ্রমবাজার আবার খুলে যাবে আমাদের জন্য। সেই সাথে সুযোগ পাবে হাজারো ইপিএস শিক্ষার্থী, হাজার পরিবারের স্বপ্ন পূরন হবার পথ পরিস্কার হবে।

কোরিয়াতে বাংলাদেশের অনেক কমিউনিটি আছে এই দূর্যোগকালীন সময়ে তাদের তেমন কার্যক্রম চোখে পড়ছে না, এটা সত্যিই দুঃখজনক। সবাই একযোগে যদি চেষ্টা করা হয়, তাহলে খুব শীঘ্রই অন্ধকার কেটে গিয়ে আলোর মুখ দেখা যাবে বলে আশা করছি।

লেখক : কোরিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশি।

বাংলাদেশের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার ইপিএস খাত কোন পথে

বাংলাদেশের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার ইপিএস খাত কোন পথেশেখ মুরাদ হোসেন (শিন মিন হো), অভিবাসন বিশেষজ্ঞ, দক্ষিণ কোরিয়াররবিউল ইসলাম, দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী২৮ জুন, রোববার – দক্ষিণ কোরিয়া সন্ধ্যা ৬.৩০, বাংলাদেশ বিকেল : ৩.৩০

Posted by AkashJatra on Sunday, June 28, 2020

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!