বাংলাদেশে মেক্সিকো দূতাবাস চালুর তাগিদ
ঢাকায় মেক্সিকোর দূতাবাস স্থাপনের তাগিদ দিয়েছে বাংলাদেশ। পারস্পরিক যোগাযোগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণ ছাড়াও দেশটিতে ভ্রমণেচ্ছুদের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করতে ও ভোগান্তি কমাতে স্থায়ী দূতাবাসের প্রয়োজন হয়ে পড়ায় বাংলাদেশের এ তাগাদা।
প্রবাসের সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ
মেক্সিকোর রাজধানীতে বাংলাদেশ দূতাবাস রয়েছে। অন্যদিকে ঢাকায় দেশটির দূতাবাস না থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা জরুরি প্রয়োজনে ভিসার আবেদন নিয়ে বাংলাদেশিদের ছুটতে হয় পাশের ভারতের নয়াদিল্লিতে মেক্সিকো মিশনে, যা বাড়তি ভোগান্তিতে ফেলে।
সোমবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর রমনায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বাংলাদেশ-মেক্সিকো দ্বিতীয় দ্বিপক্ষীয় সংলাপে এসব ইস্যুগুলো ছাড়াও উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সফর বিনিময়, বাংলাদেশ-মেক্সিকো পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপ গঠন নিয়ে কথা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী দুইদেশের মধ্যে এটাই প্রথম ইনপারসন বা সশরীরে দ্বিপক্ষীয় কনসালটেশন আয়োজন। এর আগে গত বছরের ১৬ নভেম্বর প্রথম দ্বিপক্ষীয় কনসালটেশন ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও মেক্সিকোতে পারস্পরিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি, দু’দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি, ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সফর বিনিময় এবং দ্বৈত কর পরিহার বিষয়ক চুক্তির সম্ভাব্যতা নিয়েবিস্তৃত আলোচনা হয়েছে ।
বৈঠকে লিঙ্গ সমতা, পরিবেশ, কৃষি, প্রতিরক্ষা ও পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও সমঝোতা স্মারক সই, এয়ার সার্ভিস চুক্তি, দুদেশের কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ একাডেমির সমঝোতা এবং কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি চুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়।
এ ছাড়াও বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং মেক্সিকোর ন্যাশনাল অটোনোমাস ইউনিভার্সিটি বা সেক্রেটারিয়েট অব পাবলিক এডুকেশনের মধ্যে সরকারি বৃত্তি, ফেলোশিপ, প্রশিক্ষণ ও দু’দেশের সরকারি পর্যায়ে সমঝোতা সইয়ের বিষয়ে আলোচনা করেদুই দেশের কর্মকর্তারা ।
বৈঠকে আগামী বছরের প্রথমার্ধ্বে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মেক্সিকো সফরের আমন্ত্রণ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সফর ও ঢাকাতে আপাতত ভিসা সেন্টার চালুকরণ বিষয়ে মেক্সিকো সক্রিয়ভাবে কাজ করছে বলে জানানো হয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমেরিকাস অনু বিভাগের মহাপরিচালক নাঈম উদ্দিন আহমেদ নেতৃত্ব দেন। সঙ্গে ছিলেন স্বরাষ্ট্র, বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন, বাণিজ্য, শিক্ষা, কৃষি, সংস্কৃতি এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (বেপজা) এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম।
মেক্সিকো প্রতিনিধদলের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া-প্যাসিফিক উইং এর মহাপরিচালক ফার্নান্দো গনজালেজ সেইফ। সঙ্গে ছিলেন নয়াদিল্লিস্থ মেক্সিকোর দূতাবাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান গুলিমেরো সাভেজ কনেজো।
প্রবাসের সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ
মেক্সিকান প্রতিনিধিদলের প্রধান মহাপরিচালক ফার্নান্দো গনজালেজ সেইফ গত এক দশকে বাংলাদেশের অভাবনীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সফলভাবে কোভিড-১৯ সংকট মোকাবিলা এবং বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত দশ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বর্তমান সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বৈঠক শেষে মেক্সিকান প্রতিনিধিদল পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
প্রতিনিধি দলের সম্মানে পররাষ্ট্র সচিবের আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজের বৈঠকে দু’দেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।