নতুন বছরে ৪ আন্তর্জাতিক গন্তব্যে যাবে ইউএস-বাংলা
নতুন বছরে চার আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ফ্লাইট শুরুর পরিকল্পনা করছে বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। গন্তব্যেগুলো হচ্ছে দুবাই, আবুধাবী, কলম্বো ও মালেতে ফ্লাইট।
রোববার সন্ধ্যায় কক্সবাজারে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ক্যাপ্টেন শিকদার মেজবাহউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানান। সংস্থার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম এবং কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সিইও বলেন, আগামী বছরের শুরুতে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম গন্তব্য দুবাই ও আবুধাবিতে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সার্কভুক্ত দেশ শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলোম্বো এবং মালদ্বীপের রাজধানী মালেতেও ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউএস-বাংলা। এ লক্ষ্যে ইউএস-বাংলার বিমান বহরে আরো দুটো বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ যুক্ত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আগামী বছর থেকে ইউএস-বাংলা যশোর- কক্সবাজার, সিলেট-চট্টগ্রাম, সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে ফ্লাইট চালাবে। সেজন্য আরো দুটি এটিআর ৭২-৬০০ উড়োজাহাজ আনা হচ্ছে। আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যেই সেগুলো ইউএস বাংলার বহরে যুক্ত হবে।
মেজবাহউদ্দিন বলেন, ‘সারা বিশ্ব আজ কোভিড ১৯ মহামারিতে বিপর্যস্ত। সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিশ্ব আজ বিধ্বস্ত। সর্বপ্রথম করোনাভাইরাসের করাল গ্রাসে এভিয়েশন অ্যান্ড টুরিজম ইন্ডাস্ট্রিজ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সারাবিশ্বের আকাশপথ অনেকটা লকডাউন অবস্থায় ছিল। গত ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস থেকে এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিজ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। জুন-জুলাই পর্যন্ত প্রায় সকল ধরনের আকাশ পথের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ ছিল। বর্তমানে স্বল্প পরিসরে আন্তর্জাতিক রুটগুলোতে নানাবিধ স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা মেনে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে অন্যান্য এয়ারলাইলের ন্যায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সও।’
“বিশেষ করে অ্যারোনটিক্যাল ও নন-অ্যারোনটিক্যাল চার্জকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা, জেট ফুয়েলের দাম আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে নিরুপণ করা, প্যাসেঞ্জার এয়ারলাইন্সের জন্য হ্যাঙ্গার সুবিধা ইত্যাদি।”
সিইও বলেন, ‘গত ২৮ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এয়ার বল চুক্তির অধীনে আমরা ঢাকা থেকে কলকাতা ও চেন্নাই এবং চট্টগ্রাম থেকে চেন্নাই রুইফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছি। গত ১৭ নভেম্বর থেকে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের অন্যতম গন্তব্য সিলেট থেকে সপ্তাহে দু’টি ফ্লাইট মাস্কাটে পরিচালনা শুরু করেছে ইউএস-বাংলা। বর্তমানে ঢাকা থেকে কলকাতা, চেন্নাই ছাড়াও মাস্কাট, দোহা, সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর ও গুয়াংজু রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে মাস্কাট, দোহা ও চেন্নাই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা অব্যাহত রেখেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।’
সংবাদ সম্মেলনে করোনা মোকাবিলায় ইউএস বাংলার সহায়তার কার্যক্রম তুলে ধরে মেজবাহউদ্দিন বলেন, করোনা মহামারির শুরুর দিকে সারাদেশে ডাক্তারদের সুরক্ষার জন্য পিপিই, হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্ক, স্যানিটাইজার, ইনফ্রারেড থার্মোমিটারসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন চিকিৎসা সামগ্রী ঢাকা মেডিকেল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল, বারডেমসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ও বিভিন্ন আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে উপহার হিসেবে দিয়েছে ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যে পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে, তা কাটিয়ে আগের অবস্থায় ফিরে আসতে আরও দুই বছর সময় লাগতে পারে বলে এক প্রশ্নের জবাবে জানান সিইও।
২০১৪ সালে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বহরে বর্তমানে চারটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০, ছয়টি এটিআর ৭২-৬০০ উড়োজাহাজসহ মোট ১৩টি এয়ারক্রাফট রয়েছে।
কবে বাংলাদেশি আবুধাবি যাত্রীরা কাজের ভিসায় যেতে পারবে?