করোনায় মানুষকে ঘরে রাখতে টহলে ‘ভূত’!
করোনার আতংকের মাঝেই ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপের এক গ্রামে শুরু হয়েছে ‘অতৃপ্ত আত্মা’-র আনাগোনা। তার ভয়ে এবার ঘর থেকে বার হওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন এলাকার মানুষ। আর এই ভূতের আমদানি করেছে স্থানীয় প্রশাসনই।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, আসলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে চাইছে প্রশাসন। কিন্তু অনেকেই ঘরে না থেকে বেরিয়ে পড়ছেন। যেমন ইন্দোনেশিয়ার কেপুহ গ্রামের বাসিন্দারা। স্থানীয় প্রশাসন তাই এই পোকং নিয়ে এসেছে। স্থানীয় ভাষায় পোকং-এর অর্থ ভূত। পুলিশ প্রশাসন কেপুহ গ্রামের যুবকদের সঙ্গে কথা বলে এই ভূতের ব্যবস্থা করেছে।
প্রশাসন জানিয়েছে, এই গ্রামের মানুষ এখনও করোনভাইরাস সম্পর্কে সচেতন নন। তাই তাঁদের ঘরে রাখার জন্য গ্রামরক্ষী বাহিনীর কিছু সদস্যকে ভূত সাজানো হয়েছে। তাঁরা শরীরে সাদা কাপড় জড়িয়ে, মুখে পাউডার মেখে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর এতে নাকি কাজও হচ্ছে। মানুষ এখন আগের থেকে কম বাইরে বার হচ্ছেন।

স্থানীয়রা রয়টার্সকে জানিয়েছেন যে, অপ্রত্যাশিতভাবে ভূত দলের মোতায়েন শুরু করার পর থেকে বিষয়গুলির উন্নতি হয়েছে। বাসিন্দা করানো সুপাদমো বলেন, “পোকং হাজির হওয়ার পর থেকে বাবা-মা এবং বাচ্চারা বাড়িঘর থেকে আর বের হচ্ছে না । এমনকি মাগরিবের নামাজের পর থেকে গ্রামবাসী বাইরে জড়ো হচ্ছে না বা রাস্তায় অবস্থান করছেনা।”
স্থানীয় মসজিদের রক্ষক আঞ্জার পাঙ্কা জাকার্তা পোস্টকে জানান, উদ্যোগটি কাজ করছে কারণ এটি বাসিন্দাদের এই রোগের সম্ভাব্য মারাত্মক প্রভাবের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
স্থানীয় পুলিশদের সাথে সমন্বয় করে এই উদ্যোগের উদ্যোগ নিয়েছিলেন গ্রামের যুবদলের প্রধান। “আমরা আলাদা হতে চেয়েছিলাম এবং একটি প্রতিরোধক প্রভাব তৈরি করতে চেয়েছিলাম কারণ পোকং ভুতুড়ে এবং ভীতিকর,” রয়টার্সকে যুবদলের প্রধান আঞ্জার পাঙ্কানিংটিয়াস বলেছেন।
An Indonesian village uses 'ghosts' to make people stay at home https://t.co/o4pHwSIJnT pic.twitter.com/tXYrjIeBKU
— Reuters (@Reuters) April 14, 2020
কঠোর ব্যবস্থা না নিয়ে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি জোকো উইদোডো এখনও জাতীয় লকডাউন বাস্তবায়ন করেননি।
কেপুহ গ্রামের প্রধান রয়টার্সকে বলেছেন, “কোভিড -১৯ রোগের বিস্তারকে কীভাবে রোধ করা যায় সে সম্পর্কে এখনও বাসিন্দাদের সচেতনতা নেই।” “তারা স্বাভাবিকের মতো জীবনযাপন করতে চায় তাই বাড়িতে থাকার নির্দেশনাটি মেনে চলা তাদের পক্ষে খুব কঠিন। ”
সবশেষ তথ্য অনুয়্যায়ী , ইন্দোনেশিয়ায় এ পর্যন্ত প্রায়৪ হাজার ৫ শো করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৪০০ জন।