প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার ইতালিতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইউরোপের নাগরিকদের মধ্যেও এটাই প্রথম মৃত্যুর ঘটনা।
ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম এ খবর নিশ্চিত করেছে।
শুক্রবার ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্তো স্পেরানজা বলেছেন, উত্তর শহর পাডুয়ার একটি হাসপাতালে একজন প্রবীণ ব্যক্তি করোনাভাইরাসতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ৭৮ বছর বয়সী প্রবীণ ব্যক্তিটি অসুস্থতার জন্য ১০ দিন ধরে তিনি হাসপাতালে ছিলেন।
নিহত ব্যক্তি ভেনেটো অঞ্চলে কোভিট ১৯ বা করোনাভাইরাসে শনাক্ত হওয়া দু’জনের মধ্যে একজন ছিলেন ।
গত সপ্তাহান্তে ফ্রান্স এই ভাইরাস থেকে ইউরোপে প্রথম মৃত্যুর খবর দেয় -প্যারিসে আসা একজন চীনা পর্যটক মারা যায়।
উত্তর ইতালিতে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে ১৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ইতালির উত্তরাঞ্চলীয় ১০টি শহরে এক সপ্তাহের জন্য জনসমাগমস্থল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। স্কুল, পাবলিক ভবন এবং রেস্তোঁরাগুলি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একসঙ্গে ১৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পরে উত্তর ইতালির দশটি শহরে স্কুল, পাবলিক বিল্ডিং, রেস্তোঁরা ও কফির দোকান বন্ধ করার নির্দেশ দেয় কর্র্তপক্ষ।
আক্রান্তরা সবাই লম্বার্ডি অঞ্চলের, যেখানে জানুয়ারির শেষদিকে চীন থেকে ফিরে আসা কারও সাথে দেখা করার পরে ৩৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। পাঁচজন চিকিৎসক ও নার্স এবং বেশ কয়েকজন রোগী কোডোগনোর হাসপাতালে সংক্রামিত হয়েছিল যেখানে তার চিকিত্সা করা হয়েছিল।
ইতালির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কয়েকশো মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে এবং ভাইরাসের জন্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। ৩৮ বছর বয়েসী ঐ ব্যক্তির ১৫০ জন সহকর্মি এবং কোডোগনা হাসপাতালের ৭০ জন মেডিক্যাল স্টাফকে পরীক্ষা করা হয়েছে।
এদিকে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপে কন্টি শুক্রবার ব্রাসেলসে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনের পরে সাংবাদিকদের বলেন যে, তার দেশ এই প্রাদুর্ভাব পরিচালনা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
কন্টি বললেন, “মস্ত কিছুই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, লোকজনকে উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নেই।”
সর্বশেষ তথ্য বলছে, চীনে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ২শ’ ৩৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্তের সংখ্যা ৭৫ হাজার ৪৬৫ জন।
চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ইরানে চারজন মারা যাওয়ার পর এমন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটির প্রধান টেডরস আধানম গেব্রিয়াসাস।
এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ায় একদিনেই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২০৪ জন। ইসরায়েল ও লেবাননেও এই ভাইরাসে প্রথম সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে ।