লেবাননে প্রবাসী পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের ধর্মঘটে সড়কে আবর্জনার স্তূপ

লেবাননের বৈরুতে রাস্তাঘাটে জমছে ময়লার স্তুপ। দেশটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কোম্পানি রামকোর শ্রমিকেরা বেতনের দাবীতে ধর্মঘটে যাওয়ায় এ সংকট তৈরি হয়েছে। ডলারে বিল পরিশোধে সরকার ব্যর্থ হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি তাদের কর্মীদের বেতন দিতে পারছে না দীর্ঘদিন। তাই ২৮০ জনেরও বেশি প্রবাসি শ্রমিক তিনদিন আগে থেকে ধর্মঘট পালন শুরু করেছে। কোম্পানিটির বেশিরভাগ কর্মীই বাংলাদেশি।

রামকোর পরিচালক ওয়ালিদ বু সাদ দেশটির দৈনিক দ্যা ডেইলি স্টারকে বলেন, কোম্পানিটি ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে এর শ্রমিকদের পাউন্ডে বেতন দিয়ে আসছে কারণ সরকার এবং বৈরুত পৌরসভা কোম্পানিটিকে ডলারে বিল প্রদান করা বন্ধ করে দিয়েছে।

বু সাদ জানায়, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কোম্পানিটি সরকারের কাছ থেকে ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পায়। তবে তিনি এটিও বলেন যে, বৈরুতের গভর্নর মঙ্গলবার তাদের পাওয়ার একটি অংশ বুঝিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যা কিছুটা হলেও তাদের সমস্যার সমাধান করবে।

Travelion – Mobile

বু সাদ বলেন যে রামকো এক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আশা করছে, যা তাদের পাউন্ডে প্রদান করা হবে। তবে গৃহযুদ্ধের পর থেকে লেবানন চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার কারণে তারা এই অর্থমূল্যের ৮০ শতাংশ হারাবে।

বুদ সাদ বলেন, “কম হলেও এই পরিমাণ অর্থ আপাতত বেতন এবং ডিজেলের বিল পরিশোধের জন্য যথেষ্ট, কিন্তু এটি কার্যক্রম সামলে নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে তা অব্যাহত রাখার জন্য যথেষ্ট নয়।”

“আমাদের এখনো রক্ষণাবেক্ষণ এবং অতিরিক্ত যন্ত্রাংশের জন্য ডলারে অর্থ প্রদান করতে হবে, যদিও এখন আমাদের ডলার কেনার মত কোন অবস্থা নেই”-তিনি যোগ করেন।

যদিও ডলারের বিনিময়ে বর্তমানে মিলছে লেবানিজ ৮৮০০ পাউন্ড, অনেক নিয়োগকর্তা সমান্তরাল বাজারের বিনিময় মূল্য এড়িয়ে ডলারে ১,৫০০ লেবানিজ পাউন্ড ধরে নিয়ে কর্মচারীদের বেতন দিচ্ছেন। এর অর্থ হচ্ছে যে কিছু অভিবাসী শ্রমিক যারা আগে মাসে ১৫০ ডলার বা লেবাননের পাউন্ডে সমতুল্য বেতন পেতেন, তারা এখন তাদের বেতনের মাত্র ২০ শতাংশ পাচ্ছেন।

বু সাদ বলেন, অর্থনীতির এই মন্দাবস্থার কারণে বাংলাদেশি প্রায় ২০০ জন শ্রমিক দেশে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। অথচ করোনাভাইরাস লকডাউনের কারণে কোম্পানিটি তাদের ফ্লাইট নিশ্চিত করতে সমস্যায় পড়েছে। “আমরা ১২০ জন শ্রমিকের জন্য বাংলাদেশে তিনটি ফ্লাইট বুক করেছি এবং তিনটিই বাতিল করা হয়েছে। ” বু সাদ যোগ করেন।

তিনি বলেন যে রামকো ডলারে রিটার্ন টিকেটের জন্য অর্থ প্রদান করবে।

এদিকে দেশটির বৈরুত, মেটন, কেসেরুয়ান এবং কাজাতে আবর্জনার স্তূপ আরো বাড়ার পেছনে ২৪০ জন সিরীয় শ্রমিক কোয়ারান্টাইনে থাকার বিষয়টি দায়ী। এদের মধ্যে ১৩১ জনকে বরিবার পজিটিভ পাওয়ায় তাদের পুরো দলটি কাজে যোগ দিতে পারছেনা। রেড ক্রস সেই সব কর্মীদের নিয়ে বৈরুতের কারান্টিনা এলাকার কোয়ারান্টাইনে গিয়ে গেছে।

তিন মাস আগেও বাংলাদেশ ও ভারতের প্রায় ৪০০ প্রবাসী শ্রমিক তাদের বেতন না পাওয়ার কারণে ধর্মঘট পালন করেছিল। কোম্পানিটি ডলারের বিনিময় হার লেবানিজ মুদ্রা ১৮০০ ধরে তাদের বেতন সামান্য বৃদ্ধি করতে সম্মত হয়েছিল।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!