মরিশাসপ্রবাসীদের করোনা বিধি-নিষেধ উপেক্ষা, হাইকমিশনারের সতর্কতা

রোববার সবশেষ তথ্য অনুযায়ী মরিশাসে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্তের সংখ্যা ২২৭ জনে পৌঁছেছে। এরই মধ্যে মারা গেছে ৭ জন এবং সুস্থ হয়েছে ৭ জন।

করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে ২০ মার্চ থেকে কঠোর অবস্থানে গেছে মরিশাস সরকার। দেশটির নাগরিকদের পাশাপাশি প্রবাসীদের সুরক্ষায় অনেক বাস্তবমূখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সারাদেশে লকডাইন করা হয়েছে এবং তা কার্যকর করতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। দেশজুড়ে মানুষজনের চলাচল আরো সীমিত করা হয়েছে এবং গণজমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আবিনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।

এখনও পর্যন্ত মরিশাসপ্রবাসী বাংলাদেশি নিরাপদে আছেন। এ পর্যন্ত কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন নি বা মারা যান নি। কিন্তু অভিযোগ আওয়া যাচ্ছে কিছু কিছু প্রবাসী বাংলাদেশি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে মরিশাস সরকারের দেওয়া নির্দেশনা ও বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করছেন। সামাজিক দুরত্ব না মেনে অনেক একসাথে মেলামেশা করছেন, লকডাউন মান্য করে গণজমায়েতে মিলিত হচ্ছেন, যা শুধু সরকারী নির্দেশনা অমান্য নয়, নিজের এবং কমিউনিটিক করোনা ঝুঁকিতে ফেল দিচ্ছে।

Travelion – Mobile

এই বাস্তবতায় দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রাষ্ট্রদূত রেজিনা আহমেদ প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি মরিশাস সরকারের দেওয়া করোনা সম্পর্কিত বিধি নিষেধ মেনে সচেতন জীবনযাপনে আহ্বান জানিয়েছেন ।

বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে রেজিনা আহমেদ বলেন, “দয়া করে আপনারা মরিশাস সরকারের নির্দেশনা মেনে চলুন। এখানকার প্রবাসি বাংলাদেশিদের কারও মধ্যে এখনো এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েনি তাই আমাদের আহ্বান আপনারা যদি মেনে চলেন তবে আর আতংকিত হওয়ার কিছু নেই।”
ভিডিও দেখুন

YouTube video

মরিশাস সরকার কোভিড-১৯ ভাইরাস মোকাবেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এপ্রিল থেকে নিত্যপ্রয়োজনিয় জিনিসপত্র কেনাকাটায় নতুন নিয়ম জারি করা হয়েছে। পহেলা এপ্রিল দেশটির সরকার নাগরিকদের নামের প্রথম অক্ষর অনুযায়ী কেনাকাটার নির্দিষ্ট দিন নির্ধারণ করে একটি নির্দেশনা জারি করে।”

হাইকমিশনার জানান, “নতুন নির্দেশনা মতে ইংরেজি অক্ষর A-F দিয়ে যাদের নাম শুরু তাদের জন্য কেনাকাটার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে সোমবার ও বৃহস্পতিবার। G-N দিয়ে যাদের নাম শুরু তারা বাজার করবেন মঙ্গলবার ও শুক্রবার এবং O-Z দিয়ে যারা তাদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে বুধ এবং শনিবার।”

“প্রতি রবিবার সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ থাকবে এবং প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকবে যদিও প্রত্যেকেই কেনাকাটার জন্য ৩০ মিনিট করে সময় পাবেন,” তিনি যোগ করেন।

তিনি বলেন, দেশটির সরকার ঘোষণা দিয়েছে তাদের কোন ধরনের খাদ্য সংকট নেই। তাই দোকানে গেলে প্রত্যেকেই একটিমাত্র গাড়িতে করে পণ্য কিনে আনার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে বাড়তি গাড়ি বা বাড়তি পণ্য কেনাকাটার কোন দরকার নেই নাগরিকদের।

সকল বাংলাদেশিদের সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, “খুব বেশি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আপনারা ঘর থেকে বের হবেন না। আপনারা যারা ডরমিটরিতে বসবাস করছেন তাদের অত্যন্ত সাবধানতার সাথে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। বাইরে বেরুলে আপনারা অবশ্যই মাস্ক বা কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে নিবেন, যাতে হাঁচি কাশি দিলে আপনাদের মাধ্যমে অন্য কেই আক্রান্ত না হয়।”

এছাড়া বাইরে থেকে এসে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া কিংবা রেলিং, দরজার হাতল এগুলো ধরার পর ভাল করে হাত জীবাণুমুক্ত করার উপরও জোর দেন রেজিনা আহমেদ।

যে কোন জরুরি প্রয়োজনে দূতাবাস বাংলাদেশিদের পাশে দাঁড়াবে এমন আশ্বাস দিয়ে তিনি ৫৭০২২৫১১ এই নাম্বারে যোগাযোগ করতে সকলকে আহ্বান জানান।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!