বাংলাদেশে নিয়োজিত চীনা কর্মীদের স্বদেশ যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা

বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে কর্মরত চীনা কর্মীদের দেশে আসা-যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। যারা ছুটিতে চীনে আছেন, আপাতত তাদের কেউ বাংলাদেশে ফিরতে পারবেন না। আর যারা প্রকল্প এলাকায় আছেন তাদের কেউ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চীনে ফেরত যেতে পারবেন না।

এরই মধ্যে পদ্মা সেতু প্রকল্প, চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্প, বাঁশখালী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের এই বিষয়ে উদ্যােগ নেওয়া হয়েছে বলেখবর পাওয়া গেছে।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক দেওয়ান আবদুল কাদের তাদের প্রকল্পের চীনা কর্মীদের বিষয়ে এমন নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Travelion – Mobile

তিনি বলেন, ‘আমরা করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত নই। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা খুব সতর্ক অবস্থায় আছি যেন কোনও ঝামেলা না হয়। চীনারা যারা চীনে গেছে তাদের আসতে দেওয়া হচ্ছে না। আর বাংলাদেশ থেকে কেউ যাচ্ছে না।’

পদ্মা সেতু প্রকল্পে চীনা প্রকৌশলী ও শ্রমিকদে মধ্যে এখন পর্যন্ত কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের সিনিয়র অক্যুপেশনাল অ্যান্ড হেলথ স্পেশালিস্ট মাহমুদ হোসেন ফারুক,

তিনি বলেন, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে স্টাফদের নিয়ে পর্যায়ক্রমে সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও হাইজিন ব্যবস্থা ও মাস্ক পরিধান করা, সময়ে সময়ে আইইডিসিআর (ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ) এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা। তারাও (আইইডিসিআর) বিষয়গুলো মনিটর করছে।’

তবে পদ্মা সেতু প্রকল্পের মোট ১১শ’ জন চীনা কর্মীর মধ্যে কতজন বর্তমানে ছুটিতে চীনে আছেন, তা জানাতে পারেননি এই প্রকৌশলী।

চট্টগ্রাম কর্ণফুলী তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্পের চীনা কর্মীদের বিষয়েও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে
চট্টগ্রাম কর্ণফুলী তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্পের চীনা কর্মীদের বিষয়েও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে
এদিকে চট্টগ্রাম কর্ণফুলী তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্পের চীনা কর্মীদের বিষয়েও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ।

আকাশযাত্রাকে তিনি বলেন, এই প্রকল্প প্রায় ২৫০ জন চীনা কর্মীর বেশিরভাগই বেইজিংয়ের অধিবাসী। জানা মতে উহানের কেউ নেই। তারপরও নানা সূত্রে উহানের সঙ্গে তাদের যোগাযােগ থাকতে পারে। কাজেই আমরাও এ বিষয়ে সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছি। আগামীকাল বুধবারের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্বান্তের কথা তাদের জানানো হবে।’

‘যেহেতু এই প্রকল্প পুরোটাই চীনের নির্ভর তাই করোনাভাইরাসের আতংকের বিষয়টি আসার পর থেকেই আমরা সচেতন ও সর্তক আছি এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সকল প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, যোগ করেন প্রকল্প পরিচালক।

এস আলম গ্রুপের উদ্যোগে বাস্তবায়ণাধীন চট্টগ্রামের বাঁশখালী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পেও এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তাই শুধু নয়, চীনা নাগরিকদের জন্য এ প্রকল্পের প্রধান ফটকে স্ক্রিনিং মেশিনেরও ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ।

এমনটি জানিয়ে প্রকল্পের প্রধান সমন্বয়কারী ফারুক আহমেদ আকাশযাত্রাকে বলেন, এই প্রকল্পে ৫ শতাধিক চীনের কর্মী নিয়োজিত আছেন। তাই করোনাভাইরাস সংক্রামক ছড়ানোর খবর ওঠার সঙ্গে সঙ্গে এখানে সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা দ্রুত নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার জন্য ‘স্ক্রিন’ ব্যবস্থা ছাড়াও চীনা নাগরিকদের দেশে যাতায়াত সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। পরিস্থিত স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কাউকে দেশে যাওয়া-আসা করতে দেওয়া হবে না। ‘

তিনি বলেন,‘চীনা কর্মীদের ক্যাম্প আলাদা এবং তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও আলাদা। এ ব্যাপারে সচেতন ও মনিটরিংয়ের জন্য তাদের সুপারভাইজারদের বলা হয়েছে।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!