বঙ্গবন্ধুকে জানলো কোরিয়ান শিশু-কিশোররা

কোরিয়ান শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে যথাযোগ্য মর্যাদায় এবং আনন্দমুখর পরিবেশে দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২১ উদযাপন করা হয়। কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের কারণে অনুষ্ঠানটি দূতাবাসের কর্মকর্তা, কোরিয়ান ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকদের নিয়ে সীমিত পরিসরে উদযাপন করা হয়।

বুধবার (১৭ মার্চ) সকালে রাজধানী সিউলে দূতাবাস প্রাঙ্গনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন দক্ষিণ কোরিয়ার নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম। এরপর রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কর্মকর্তাসহ জাতির পিতার ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন।

দিবসের আলোচনার শুরুতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ হতে পাঠ, বিশেষ মোনাজাত, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।

উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের তাৎপর্যের উপর আলোকপাত করা হয়। রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি জাতির পিতার রাজনৈতিক জীবন, মুক্তিযুদ্ধে তাঁর মহান অবদান এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্নির্মাণে তাঁর কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তাঁকে শান্তির দূত হিসেবে অবহিত করেন।

তিনি জাতীয় শিশু দিবস সম্পর্কে আলোচনাকালে শিশুদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উদ্ধুদ্ধ করবার জন্য অভিভাবকদের গুরু দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেন।

এই দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যােগে দক্ষিণ কোরিয়ার সকল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে “বিশ্বব্যাপী শান্তি ও মানবতার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর অবদান” বা “বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন এবং বাংলাদেশের সাফল্য” শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী কোরিয়ান শিশু কিশোরদের মধ্যে পুরস্কার ও সনদ বিতরণ করেন। তাছাড়া, রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে মনোনীত কোরিয়াস্থ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘হবি কোরিয়া’-এর ৮ জন ছাত্র-ছাত্রীদের হাতেও সনদপত্র তুলে দেন।

সেইসাথে, জাতির পিতার জীবন নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত তথ্যচিত্র উক্ত অনুষ্ঠানে প্রদর্শণ করা হয়। পরবর্তীতে রাষ্ট্রদূত উৎফুল্ল কোরিয়ান শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে জন্মদিনের কেক কেটে দিবসটি উদযাপন করেন।

রচনার প্রতিযোগিতারসহ এইসব আয়োজন মাধ্যমে কোরিয়ান শিশু কিশোরদের হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে জানার, চেনার সুযোগ হয়।

উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সিউলস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী সেল ও ফরেন সার্ভিস একাডেমির সাথে যৌথ উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু লেকচার সিরিজ-এর ৪র্থ লেকচার ‘Bangabandhu: The Soul of Bangladesh’ শিরোনামে জুম প্ল্যাটফর্মে গত ১৫ মার্চ আয়োজন করে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ.কে. আব্দুল মোমেন, এমপি প্রধান অতিথি এবং জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন মুখ্য আলোচক হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, এমপি ও পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন বিশেষ অতিথি এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কেউন সম্মানিত অতিথি ছিলেন। দক্ষিণ কোরিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম অনুষ্ঠানের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।