ফ্লাইটে ‘অসভ্য’ আচরণের জন্য যাত্রীদের নজিরবিহীন জরিমানা

আমেরিকার কেন্দ্রীয় বিমান চলাচল প্রশাসন ফ্লাইটের ভেতর ‘অসভ্য আচরণের’ অভিযোগে দুজন যাত্রীর বিরুদ্ধে যে অঙ্কের জরিমানার প্রস্তাব করেছে তা দেশটির বিমান ভ্রমণের ইতিহাসে নজিরবিহীন। অভ্যন্তরীন ফ্লাইটে সহিংস আচরণের অভিযোগে এই দুজন নারী যাত্রীকেই বিশাল অঙ্কের জরিমানা করা হয়েছে।

একটি ঘটনায়, টেক্সাস থেকে নর্থ ক্যারোলাইনাগামী আমেরিকান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটের একজন যাত্রীকে কেবিন ক্রুকে হুমকি দেবার ও আঘাত করার অভিযোগে ৮১ হাজার ৯৫০ ডলার জরিমানা করা হয়েছে। ওই নারী ফ্লাইটের আইলে অর্থাৎ আসনের সারির মাঝখানের পথে পড়ে যান। কেবিন ক্রুকে তাকে উঠতে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে যান।

নাম না প্রকাশ করা ওই মহিলা যাত্রী ফ্লাইটের একজন কর্মীকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়ে ফ্লাইটের মধ্যে বিমানের দরজা খোলার চেষ্টা করেন। কেবিন ক্রুরা তাকে বাধা দেবার চেষ্টা করলে তিনি একজন কেবিন ক্রুর মাথায় বাড়ি মারেন।

Travelion – Mobile

তার দু-হাত বেঁধে ফেলা হলে “তিনি কেবিন ক্রু এবং অন্যান্য যাত্রীদের ওপর থুতু ছোঁড়েন, মাথা দিয়ে গুঁতো মারেন এবং লাথি মারার চেষ্টা করেন এবং কাউকে কাউকে কামড়ে দেন,” বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় কেন্দ্রীয় বিমান চলাচল প্রশাসন।

অন্য ঘটনাটি ঘটে লাস ভেগাস থেকে আটলান্টাগামী ডেল্টা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে। ওই ফ্লাইটের একজন নারী যাত্রী “তার পাশের আসনে বসা যাত্রীকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাবার চেষ্টা করেন, এরপর তিনি হেঁটে ফ্লাইটের সামনের দিকে চলে যান এবং উড়ন্ত অবস্থায়দরজা খুলে বেরুনোর চেষ্টা করেন। বলার পরেও তিনি নিজের আসনে ফেরত যেতে অস্বীকৃতি জানান এবং আরেকজন যাত্রীকে বেশ কয়েকবার কামড়ে দেন।”

এই যাত্রীরও নাম প্রকাশ করা হয়নি। কেবিন ক্রুরা শেষ পর্যন্ত বল প্রয়োগ করে তাকে নিরস্ত করেন। এই নারীকে জরিমানা করা হয় ৭৭,২৭২ ডলার।

যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন মন্ত্রী পিট বুটিগিয়েগ এই জরিমানার অঙ্ক ঘোষণা করে বলেন, আমেরিকায় অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান ভ্রমণের সময় সহিংস আচরণের ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে বাড়ছে।

“আপনি ফ্লাইটে উঠলে উল্টোপাল্টা বা অভদ্র আচরণ করবেন না এবং ক্রু বা সহ-যাত্রীদের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করবেন না,” এবিসি টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে একথা বলে পরিবহন মন্ত্রী হুঁশিয়ারি দেন: “যদি এধরনের আচরণ করেন তাহলে আপনাকে মোটা অঙ্কের জরিমানা করা হবে।”

এই দুটি ঘটনার সাথে কোভিড সংক্রমণ ঠেকানো সংক্রান্ত কোন পদক্ষেপ জড়িত ছিল না বলে এয়ারলাইন্স থেকে জানানো হয়েছে। তবে মি. বুটিগিয়েগ বলেছেন ফ্লাইটে এবং বিমানবন্দরে মাস্ক পরার বিধির মেয়াদ বাড়ানো হবে কিনা সরকার ১৮ই এপ্রিল সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

কেন্দ্রীয় বিমান চলাচল প্রশাসন এফএএ ২০২১-এর জানুয়ারি থেকে বিমানযাত্রীদের অসভ্যতা “কোনভাবেই সহ্য না করার নীতি” গ্রহণ করেছে। প্রশাসন বলছে এ ব্যাপারে তারা জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে।

আমেরিকার বিমান সংস্থাগুলো বলছে, ২০২১ সালের গোড়া থেকে ফ্লাইটে গোলযোগ সৃষ্টিকারী যাত্রীর সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে গেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ ছিল কোভিড ভাইরাস ঠেকাতে ফেসমাস্ক পরতে অস্বীকৃতি জানানোর ঘটনা।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!