পর্তুগালে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে সমাবেশ, অংশ নেয় প্রবাসী বাংলাদেশিরাও
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের টানা ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলার প্রতিবাদে চলছে বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। ইউরোপের ফ্রান্স, জার্মান, বেলজিয়াম, ইংলেন্ড, ইতালি সহ বিশ্বের অন্য দেশগুলোর মতো আটলান্টিক পাড়ের দেশ পর্তুগালের রাজধানী লিসবন ও বন্দর নগরী পোর্তোয় ফিলিস্তিনে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।
পর্তুগালের স্থানীয় সংগঠন জেনারেল কনফেডারেশন অফ পর্তুগিজ ওয়ার্কার (সিজিটিপি), পর্তুগিজ কাউন্সিল ফর পিচ অ্যান্ড কো-অপারেশন (সিপিপিসি) এবং এম.পি.পি.এম সোমবার ফিলিস্তিনের পক্ষে ‘মুভমেন্ট ফর দ্যা রাইট অফ দ্যা প্যালেস্টাইন’ ব্যানারে বিকেল ৬টায় লিসবনের মাতৃ মনিজ পার্ক ও পোর্তোর প্রাচা দা প্যালেস্টাইট (রুয়া ফারনান্দেজ তোমাস) স্থানে উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে পর্তুগিজ, মধ্যপ্রাচ্য, অফ্রিকা, এশিয়ার জনগনের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিসহ নানা শ্রেণি-পেশার হাজার নারী, পুরুষ, শিশুরা রাজধানী লিসবনের ডাউন টাউনের মাতৃমনিজ পার্কের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে পর্তুগাল ও ফিলিস্তিনির পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেয়।
এসময় ইসরায়েলি বাহিনীর অবৈধ ও অমানবিক আচরণ এবং হামলার নিন্দা জানিয়ে ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি ভালোবাসা ও পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন স্থানীয় পর্তুগিজসহ বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের ফ্রী প্যালেস্টাইন, ভিভা প্যালেস্টাইন এমন স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে মাতৃ মনিজ এলাকার অলি গলি থেকে মহাসড়কগুলো।
সমাবেশ বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে আয়োজনকারী সংগঠনগুলো শীর্ষ স্হানীয় নেতৃবৃন্দগন, গাজায় ইসরায়েলি হামলাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, মার্কিন প্রশাসনের ইজরাইল কে তাদের নগ্ন সমর্থন প্রত্যাহার করে শান্তি স্থাপন করার আহবান জানান। সেই সাথে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন ও উৎসাহ দেওয়ার জন্য সমাবেশে আগতো সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
পর্তুগিজদের সঙ্গে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, রাজনৈতিক নেতা, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরাও ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। রাজধানী লিসবনের সমাবেশে বাংলাদেশি কমিউনিটি নেতাদের মধ্যে বাংলাদেশ ইসলামি সেন্টার লিসবন বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদের সভাপতি তাসলিম উদ্দিন রানা, খতিব অধ্যাপক আবু সাইদ, মাতৃ মনিজ জামে মসজিদের সভাপতি মোশাররফ হোসেন, সেক্রেটারি সাজিদ আহমেদ, পর্তুগাল আওয়ামীলীগ নেতা জহুরুল আলম জসিম, মঈন উদ্দিন আহমেদ, মুকিতুর রহমান সেলিম, কামরুল ইসলাম, রাজিব আল মামুন, জাকির হামিদী, তানভীর আলম জনিসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
কমিউনিটি নেতারা জানান, মুসলিম হিসেবে নয় বরং একজন মানুষ হিসেবে আজ আমরা মানবতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছি। তারা ধর্ম বর্ণ জাতি নির্বিশেষে বিশ্বের সকল বিবেকমান মানুষদের ইসরায়েলের বর্বর হামরার প্রতিবাদ জানিয়ে ফিলিস্তিনিদের সমথৃনে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
পর্তুগালের প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ ধরনের প্রতিবাদ-সমাবেশে তারা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানাতে বেশ উৎসাহ নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলো। তাদের মধ্যে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্রবাসী নারী উদ্যোক্তা ও লেখিকা ফৌজিয়া খাতুন রানা বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনীর এমন বর্বর হামলা আর গণহত্যার পর কোনো বিবেকবান মানুষ প্রতিবাদ না জানিয়ে পারে না। এক জন মানুষ ও মুসলিম হিসেবে ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলার নিন্দা জানাতে এবং ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে সমাবেশে এসেছি।
ফ্রিল্যান্স ফুড রাইডারে কর্মরত প্রবাসী তারেক ও আরমান বলেন, ‘কাজ সব সময় করা যায় তবে আজ ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানাতে এখানে আসতে পারায় আনন্দিত কারন, এরকম কঠিন সময়ে আমাদের প্রতিবাদ প্যালেস্টাইনের জনগনের মনোবল বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করবে বলে মনে করি।
অন্যদিকে বাণিজ্যিক নগরী পোর্তোতে সি জি টি, ব্লোকো ডি এসকেরডা, এমডিপিপিসিপি,এবং বাংলাদেশ কমিউনিটি অব পোর্তোসহ স্থানীয় মানবাধিকার ও রাজনৈতিক সংগঠনহগুলো বিক্ষোভে অংশ নিয়ে ফিলিস্তিদের প্রতি সংহতি জানায়। পোর্তো বাংলাদেশ কমিউনিটির সংগঠকের মধ্যে মোশাররফ হোসেন, মনির আহমেদ, চঞ্চল মাহমুদ, বুলবুল আহমেদ, কপিল উদ্দিন ভূঁইয়া, জাফরুল, আব্দুর রাজ্জাক, বাহারুল ইসলাম, আব্দুল মমিন, নবিউল হক, ইমন মিয়া, আজির আহমেদ, রানা সিকদার উপস্থিত ছিলেন।