দুবাইয়ে ৮২ লাখ টাকা ফেরত দিয়ে সম্মাননা পেলেন প্রবাসী বাংলাদেশি

সংযুক্ত আরব আমিরাতে কুড়িয়ে পাওয়া সাড়ে তিন লাখ রিয়াল যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮২ লাখ টাকা ফেরত দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন এক প্রবাসী বাংলাদেশি। এমন মহানুভবতার জন্য দুবাই পুলিশ তাকে সম্মান জানিয়েছে, যার খবর দেশটির বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ফলাও করে প্রকাশ করা হয়েছে।

এই বাংলাদেশির নাম মোহাম্মদ কফিলউদ্দিন মুহুরী (৪০)। বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানার গোপালঘাটা গ্রামে ।

আমিরাতের বাণিজ্যিক শহর দুবাইয়ে রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া অর্থের প্রকৃত মালিককে দীর্ঘদিন খুঁজে না পেয়ে অবশেষে তা পুলিশের কাছে ফেরত দিয়ে সম্মাননা ও উপহার পান তিনি।

Travelion – Mobile

দুবাইয়ের নাইফ থানায় একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে কফিলউদ্দিনকে তার নৈতিক আচরণ, সততা এবং ভাল আচরণের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মাননা সনদ এবং একটি প্রতীকী উপহার তুলে দেন থানার উপ-পরিচালক কর্নেল ওমর আশুর।

নায়েফ থানার পরিচালক ব্রিগেডিয়ার তারিক মোহাম্মদ নূর আহলাক আমিরাতের পুলিশ বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য এবং সততার জন্য তার প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, “দুবাই পুলিশ সমাজের সকল অংশের সহযোগিতায় বিশ্বাস করে। কারণ এটি সমাজকে রক্ষা করতে এবং তাদের সুখ নিশ্চিত করতে বাহিনীর প্রচেষ্টায় সক্রিয়ভাবে অবদান রাখে”।

দুবাই পুলিশ কর্তৃক সম্মানিত হওয়ায় আনন্দ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন পেশায় রক্ষাণাবেক্ষণ ঠিকাদার কফিলউদ্দিন মুহুরী ।

ঘটনা সর্ম্পকে প্রবাসী সাংবাদিকদের তিনি জানান, গত ২৯ অগাস্ট দুপুরে দুবাইয়ের দেরায় আল সাবকা এলাকায় বুড়ি মসজিদ রোডে নিজ বাসার কাছে গাড়ি পার্কিং-এ পরিত্যক্ত অবস্থায় কালো টেপে মোড়ানো একটি বান্ডিল দেখেন তিনি। কফিল তা কুড়িয়ে নেন এবং হদিস করে কোন মালিক না পেয়ে বাসায় এনে রেখে দেন।

রাতে কালো টেপ খুলে বান্ডিলে পাঁচশ সৌদি রিয়ালের চকচকে নোটগুলো পান। নোটগুলো আসল কিনা তা নিয়ে সন্দেহ হলে মানি এক্সচেঞ্জে কাজ করেন এমন একজনের মাধ্যমে কফিল নিশ্চিত হন যে তা আসল টাকা। তিনি ঘটনাস্থলের পাশে রেস্টুরেন্টে খবর দেন, যদি কেউ এ অর্থের সন্ধানপ্রার্থী হন তাহলে যেন যোগাযোগ করা হয়।

৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করেও কোন মালিক না পেয়ে সেদিনই নাইফ পুলিশ স্টেশনে গিয়ে তা জমা দেন কফিলউদ্দিন।

এক সন্তানের পিতা কফিলউদ্দিন বলেন,“ কখনও মানুষের সম্পদের ওপর লোভ করিনি। কারণ পরের টাকা দিয়ে কখনও বড় হওয়া যায় না এমন শিক্ষা পেয়েছি পরিবার থেকে। তাই মালিক না পেয়ে টাকাট পুলিশে হাতে তুলে দিয়েছি নিজের দাঢিত্ব পালন করেছি।”

কফিল মনে করেন বাংলাদেশিরা সৎ ও পরিশ্রমী হিসেবে প্রবাসে পরিচিত, তার এ সততা বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সুনাম আরও বাড়াবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!