দক্ষিণ কোরিয়ার জীয়নকাঠি ‘উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা’

আকাশযাত্রা লাইভে কৃতিমান বাংলাদেশিরা

দক্ষিণ কোরিয়ার উন্নতির মিরাকলের মূল জীয়নকাঠি উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা। কয়েকবছর ধরে দেশটির শিক্ষা ব্যবস্থা বিশ্বের সেরা শিক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে এই প্রযুক্তির দেশটি।
গতকাল গুগলে বিশ্বের একহাজার র‍্যাংকিং বিশ্ববিদ্যালয় দেখলাম। যার মধ্য কোরিয়ার ৩৫টি রয়েছে।

দেখুন ১৯৫৩ থেকে ২০২০– এই ৬৭ বছরে কোরিয়ার পথচলা একেবারেই মিরাকলে মতো। কোরিয়া তাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সাজিয়েছে প্রাণের বর্ণিল সাজে, সুদূরিকা দিয়ে। জাতির বীজ রুপনের ধাপ হিসেবে। সকলে জানেই কোরিয়ার শিক্ষাব্যবস্থা বিশ্বখ্যাত ও গবেষণাপ্রসূত। বিশ্ব শিক্ষাব্যবস্থার র‌্যাংকিংয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থান নিয়মিত হয়ে উঠেছে।

সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, কাইস্ট, কোরিয়া ইউনিভার্সিটি, ইয়নসে ইউনিভার্সিটি, হংগিক ইউনিভার্সিটির মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার আলো বিকিকিনি করছে কোরিয়া তথা বিশ্বজুড়ে।
প্রকৌশল বিদ্যা আর গবেষণার মাধ্যমে নানা, উদ্ভাবনে, উৎকর্ষে তারা প্রতিযোগিতা দিচ্ছে সমানতালে বিশ্বের দামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে।

Travelion – Mobile

মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় উড়ান, অবকাশ আর প্রবাসের খবরের বিশেষায়িত অনলাইন পোর্টাল আকাশযাত্রার ফেসবুক-ইউটিউব লাইভ অনুষ্ঠানে “দক্ষিণ কোরিয়ায় উচ্চ শিক্ষা : বাংলাদেশিদের সাফল্য ও নতুনদের করণীয়” শীর্ষক আলোচনায় দেশটিতে বসবাসরত চার কৃতি বাংলাদেশির আজ কৃতিমান চার ব্যক্তিত্বের কথায় এ তথ্য ওঠে আসে।।

দক্ষিণ কোরিয়ায় উচ্চ শিক্ষা : বাংলাদেশিদের সাফল্য ও নতুনদের করণীয়

দক্ষিণ কোরিয়ায় উচ্চ শিক্ষা : বাংলাদেশিদের সাফল্য ও নতুনদের করণীয়১৪ জুলাই, মঙ্গলবার – দক্ষিণ কোরিয়া সময় : রাত ৯.৩০টা বাংলাদেশ সময় : বিকেল ৬.৩০ টা সঞ্চালনায় : ডা. মহিউদ্দিন মাসুমসমন্বয় : ওমর ফারুক হিমেলঅতিথি : ড. আশরাফ হোসেন রাসেল, সাবেক রিসার্চ প্রফেসর, কোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ড. মো. হাসানুজ্জামান, পোস্ট ডক্টোরাল ফেলো, উলসান বিশ্ববিদ্যালয় ড. মোহাম্মদ আজম খান, পোস্ট ডক্টোরাল ফেলোড. আবিদুর রহমান, গবেষক, কিয়ংহি বিশ্ববিদ্যালয়https://www.facebook.com/akashjatrabd

Posted by AkashJatra on Tuesday, July 14, 2020

ডা. মহিউদ্দিন মাসুমের সঞ্চালনায় লাইুভ অনুষ্ঠানে দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষার ব্যবস্থা এবং বাংলাদেশিদের সাফল্যে ও নতুন সুযোগের নানা দিক নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন অতিথি আলোচকরা।

অনুষ্ঠানে কোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রিসার্চ প্রফেসর ড. আশরাফ হোসেন রাসেল বলেন, “কোরিয়ার নিজের দেশে খনিজ পদার্থ নেই। এরপরেও কোরিয়া ১২ তম অর্থনীতির দেশ। যুদ্ধের পর আমেরিকার সহায়তায় কোরিয়া তাদের মেধাবীদের পিএইচডির জন্য আমেরিকায় পাঠাই। কোরিয়ানরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে দেশে ফিরে, পরে দেশ বিনির্মাণে আত্ননিয়োগ করে।”

উলসান বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট ডক্টোরাল ফেলো ড. মো. হাসানুজ্জামান বলেন, “কোরিয়া নিরাপদ, নিরাপত্তার ও উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা ও উন্নত শিক্ষার দেশ। কোরিয়া প্রযুক্তির শিক্ষা সিস্টেম দিয়ে জাতিকে বদলে দিয়েছে। একই সাথে কোরিয়ানদের গবেষণায় আত্ননিয়োগ ।”

KAIST এর পোস্ট ডক্টোরাল ফেলো ড. মোহাম্মদ আজম খান বলেন,”কোরিয়ায় শিশুদেরকে শৈশব থেকে ট্রেইন আপ করানো হয়, শিশুকাল থেকে সুশৃঙ্খল শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে জাতির ভিত রচনা করায় কোরিয়ানদের টার্গেট।”

কিয়ংহি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. আবিদুর রহমান লাইভে বলেন, “আপনারা জানেন, যে দুটি দেশ গবেষণায় প্রচুর বিনিয়োগ করে এর মধ্য কোরিয়া একটি। ইসরায়েলের পর কোরিয়ায় শিক্ষায় বেশি বিনিয়োগ করেছে। তাদের জিডিপির প্রায় ৫ শতাংশ শিক্ষায় বিনিয়োগ। একসময় কোরিয়ানরা বাংলাদেশে শিক্ষা অর্জনের যেত,একই সাথে বাংলাদেশে যেত কাজ করতে।কিন্তু কয়েক দশকে শিক্ষায় মনোযোগ দিয়ে বিশ্বে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে।”

তাদের মতে, কোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চমকপ্রদ দিক হচ্ছে উৎসর্গিত, গবেষণা নির্ভর। তাছাড়া কোরিয়ান শিক্ষকদের গবেষণা চর্চার কারণে এখানকার ছাত্রদের মেধাবী করে তুলেছে। উচ্চমানসম্পন্ন শিক্ষকই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে প্রেষিত করে তুলেছে। এ দেশের উচ্চশিক্ষার শিক্ষার মান গবেষণার বহুমুখিতাই বিশ্বব্যাপী সমাদৃত, নন্দিত। তৃতীয় বিশ্ব থেকে উন্নত বিশ্বের ছাত্রছাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে কোরিয়ার উচ্চশিক্ষার মাঠে।

কোরিয়ান পরিবারগুলো সন্তানকে উচ্চ শিক্ষাদানে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করে, সন্তান গঠন করার জন্য সর্বস্ব উজাড় করে। তারা সন্তান মানুষ করাকে জাতীয় প্রজেক্ট মনে করে।কোরিয়ান আমজনতার শিক্ষা শিক্ষণের ওপর অসীম অপার আগ্রহ।

তারা আরও বলেন, কোরিয়ানদের রক্তের সঙ্গে মিশে আছে শিক্ষা। সত্যকার অর্থে কোরিয়ানদের মধ্যে শিক্ষার এই প্রবল আগ্রহ সময়ের অংকনে। বিশ্বের উদারমনা প্রগতিশীল শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে মিশেল রেখে কোরিয়া তার ফোকাস নির্ধারণ করে এই পর্যায়ে এসেছে।

টোটাল জনশক্তির শেখার আগ্রহ,রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের যুগসি শিক্ষানীতি। রাষ্ট্রের চিন্তকরা উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থার কার্ণিসে আত্ননিয়োগ করেছে। এই তিন দশকের মধ্যেই টেকনিক্যাল শিক্ষায় যে বিনিয়োগ করেছে ফেরত আসে কয়েক লাখ গুণে। তৈরী হয় দক্ষ কোরিয়ান টেকনিশিয়ান।

এরাই বিনির্মাণ করে আধুনিক কোরিয়া। সরকার পাশাপাশি জিডিপির ৫% বিনিয়োগ করেছে গবেষণা। যুগোপযোগী টেকনিক্যাল শিক্ষা ও গবেষণায় এই শতাব্দীতে সেরা কোরিয়া।

দেশকে উন্নত করতে, পর্যাপ্ত টেকনেশিয়ান তৈরি করতে বছরে ৫০ হাজার টেকনিশিয়ান তৈরীর জন্য প্রত্যেক প্রদেশে কমপক্ষে ১টি করে মোট ১১টি টেকনিক্যাল স্কুল তৈরী করে। যার ফলাফল পেতে কোরিয়ার বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি।

ম্যাজিক পন্থায় দাঁড়িয়ে গেল এশিয়ার এই দেশটি। এখন কোরিয়ানরা গর্ব করে বলে উরি নারা (আমাদের দেশ) উরি হাংগুগিন (আমরা কোরিয়ান)। আজ তাই কোরিয়ানরা জাতি হিসেবে সফল। উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে ও সফল শিক্ষা ব্যবস্থার পেছনে কাজ করেছে সরকারের যুগসই পলিসি আর গণমানুষের ‘শিক্ষাজ্বর’!

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!