কুড়িয়ে পাওয়া ২৪ লাখ টাকা ফেরত দিয়ে আমিরাতপ্রবাসীর দৃষ্টান্ত

করোনার আলোচনা ছাপিয়ে এক বাংলাদেশির সততার গল্পে মুখর সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসীরা। যে মনজুড়ানো গল্পের বাস্তব নায়ক হচ্ছেন আমিরাত প্রবাসী ব্যবসায়ী মুহাম্মদ মহসিন সুমন, যিনি কার ওয়াশ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার।

গত বুধবার (১৯ আগস্ট) সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবির শিল্পনগরীতে নিজের মালিকাধীন মোছাফ্ফ আল আরাফাত কার ওয়াশিংয়ে রিকভারিতে আসা পরিত্যক্ত একটি গাড়ীর সিটের নিচে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৪ লাখ টাকা কুড়িয়ে পান মুহাম্মদ মহসিন সুমন। করোনাকালীন অনেকটা অভাবী সময়ে মালিকবিহীন এই টাকার মালিক বনে যাওয়ার সুেযাগ তার ছিল। কিন্তু তিনি তা না করে আবুধাবি পুলিশ স্টেশনে গিয়ে টাকা পুরো টাকা জমা দেন এবং টাকার প্রকৃত মালিককে টাকা ফিরিয়ে দিতে অনুরোধ করেন।

কুড়িয়ে পেয়ে এতটাকা হস্তান্তর করায় এই বাংলাদেশি প্রবাসীদের ভূয়সী প্রশংসা করে আবুধাবি পুলিশ প্রশাসন । প্রবাসীরা মনে করেন মহসিন সুমনের সততার কারণে শুধু আবুধাবি নয় আমিরাতের সাত লাখ প্রবাসী বাংলাদেশীর সম্মান বৃদ্ধি পেয়েছে।

মহসিন সুমন গণমাধ্যমকে বলেন,’যেহেতু গাড়িটি রিকভারিতে করে আমার গ্যারেজে এসেছে তাই টাকার মালিককে খুজে পাওয়া সম্ভব হয়নি। টাকার মালিকের জন্য আমি একদিন অপেক্ষা করেছিলাম। কেউ আসেনি। তাছাড়া টাকা এতবেশি পুরাতন ছিলো দেখে মনে হচ্ছে অনেকদিন ধরে টাকা গুলি সীটের নিছে পড়েছিলো।তাই পরের দিন আমি পুলিশ স্টেশনে গিয়ে টাকা জমা দিয়ে দিই। পুলিশ আমার সব ডকুমেন্টস রেখেছে প্রকৃত মালিককে খুজে পেলে আমাকে ডেকে তার হাতে টাকা তুলে দিবেন বলেছেন আবুধাবি পুলিশ।”

এছাড়াও সুমন বলেন,”একসময় আবুধাবি প্রবাসীদের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থান আলমোল্লা বিল্ডিং এ আবদুল হক নামে আমার বাবার একটা গ্রোসারি তথা মুদির দোকান ছিলো। সে সময় থেকে একজন সৎ ব্যবসায়ী হিসাবে আবুধাবিতে আমার বাবার ব্যাপক পরিচিতি ছিলো। সুতরাং আমি উনার সন্তান হিসাবে উনার কাছ থেকে যে শিক্ষা পেয়েছি ২৪ লক্ষ টাকা নয় ২৪ কোটি টাকা পেলেও আমি ফিরিয়ে দিতাম।”

ফেনী জেলার দাঘনভুঞা উপজেলার দেবরামপুরের আবুল মিয়া বাড়ির মুহাম্মদ আবুল মিয়ার সন্তান মহসিন সুমনের আবুধাবির মোছাফ্ফাতে ২টি কার ওয়াশ,স্পেয়ার পার্টসসহ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ।

মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী (রনি) নামের একজন আবুধাবি প্রবাসী বলেন, “প্রায় বিশ বছর তাদের আল আরাফাত কার ওয়াশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বয়স। প্রায় সময় গ্রাহকের ফেলে যাওয়া আমানত ফিরিয়ে দিয়ে তারা এ ধরনের সততার অনেক নজির রেখেছে এবং সুনামের সাথে ব্যবসা করছে। তিনি আরো বলেন সুমন ভাইয়ের সততার কারণে আমরা প্রবাসীরা গর্বিত এবং আনন্দিত।