আমিরাতে মদ বিক্রি বাড়াতে আইন শিথিল

পর্যটকদের মদ কিনতে প্রথমবার অনুমতি দিল দুবাই

সংযুক্ত আরব আমিরাতে পর্যটকদের জন্য মদ কেনা আরও সহজ করে দেয়া হয়েছে। এ জন্য আইন শিথিল করা হয়েছে যে রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত দোকান থেকে পর্যটকরা সহজে মদ কিনতে পারেন। আগে শুধু মদ খাওয়ার লাইসেন্সধারী বাসিন্দারাই সরকারি দোকান থেকে মদ কিনতে পারতেন।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে আসা খবরে বলা হয়, আমিরাতে মদ বিক্রির পরিমাণ বাড়ানোর লক্ষ্যেই এই সিদ্বান্ত নেয়া হয়েছে। গত এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো দেশটিতে মদ বিক্রি কমে যায়।

জানা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ মদ বিক্রি হয়। সে দেশে মাথাপিছু বছরে মদ্যপানের পরিমাণ তিন দশমিক আট লিটার।

Travelion – Mobile

আমিরাতের আয়ের একটি বড় অংশ আসে মদ বিক্রি থেকে। মদের বোতল আমদানিতে সরকারকে কর দিতে হয় ৫০ শতাংশ এবং দোকানে বিক্রির সময় দিতে হয় আরও ৩০ শতাংশ। গত বছর কেবল দুবাইয়ের বিমানবন্দরগুলোর টার্মিনালে ২শ কোটি ডলারের মদ জাতীয় পণ্য বিক্রি হয়েছে।

নতুন এ আইনে দুবাই প্রথমবারের মতো পর্যটকদের মদ কেনার অনুমতির ব্যবস্থা করেছে। অর্থনৈতিক মন্দার কারণে আমিরাতের সমৃদ্ধশালী প্রদেশটিতে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এখন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক বিপণন কেন্দ্র (এমএমআই) কিংবা আফ্রিকা বা পূর্বাঞ্চলীয় দেশগুলোর দোকান থেকে সহজে মদ কিনতে পারবেন পর্যটকরা।

২১ বছরের বেশি যেকোনো অমুসলিম পর্যটকের ক্ষেত্রেই নতুন এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে আমিরাতের কর্তৃপক্ষ।

দুবাইয়ে বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন বুর্জ খলিফার পাশাপাশি পারস্য উপসাগর তীরে রয়েছে অনেক রিসোর্ট। সেসবের টানে সারাবিশ্ব পর্যটকরা ছুটে যায় সেখানে। ঘুরে বেড়ানো ছাড়াও নানা রেস্তোরাঁর খাবার উপভোগের পাশাপাশি পর্যটকরা সেখানে মদ্যপানও করে।

এর আগে মদ কেনা ও খাওয়ার জন্য হোটেল বা রেস্টুরেন্টে যেতে হতো পর্যটকদের। কিন্তু এখন কিছু আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে পর্যটকরা অনুমতিপ্রাপ্ত ওইসব দোকান থেকে মদ কিনতে পারবেন। এর জন্য পর্যটকদের সহজে পাওয়া লাইসেন্সের প্রয়োজন হবে।

তবে এই লাইসেন্সের জন্য পর্যটকদের কোনও ফি দিতে হবে না। দুবাইয়ে মদ বিক্রির অনুমতি পাওয়া দোকান থেকেই এই লাইসেন্স নেয়া যাবে। ওই লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে এবং এ সময় তাদের পাসপোর্ট দেখাতে হবে। এরপর একটি ফরম পূরণ করতে হবে এবং তারা যে আরব আমিরাতের বাসিন্দা নন এবং মদ কেনা ও পানের ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে চলবেন সেই মর্মে একটি অফিসিয়াল ছাড়পত্রে স্বাক্ষর করতে হবে।

বিপরীতে দোকানগুলো লাইসেন্স নেয়া পর্যটকদের পাসপোর্ট ও ভিসার কপি রেখে দিবে। সেইসঙ্গে দুবাইয়ে মদ পানের দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকা প্রদান করবে। এই লাইসেন্সের মেয়াদ থাকবে ৩০ দিন। তবে কেউ যদি দুবাইয়ে এর চেয়েও বেশি দিন থাকতে চান সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়াতে পারবেন।

তবে, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো এবং প্রকাশ্যে মদ্যপান অবৈধই থাকছে দেশটিতে। সম্প্রতি প্রকাশিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, দোকান থেকে কেনা যেকোনো মদ শুধুমাত্র ‘আপনি হোটেল রুম অথবা বাসায়’ পান করতে পারবেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!