৪৫ দিনে আমিরাত থেকে ফিরেছে শতাধিক মরদেহসহ পাঁচ হাজার বাংলাদেশি
করোনাভাইরাসে নয় বরং অন্যান্য রোগ, দূর্ঘটনা আর স্বাভাবিক মৃত্যুতে জীবন হারানো শতাধিক বাংলাদেশির মরদেহ ফিরেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। গেল প্রায় দেড় মাসে বিভিন্ন কার্গো ফ্লাইটে তাদের মরদেহগুলো দেশে পৌছায়। এর আগে লকডাউনের কারণে গেল মার্চ থেকে মরদেহগুলো সেখানে আটকা পড়ে থাকায় স্বজনেরা গুণছিলেন অপেক্ষার প্রহর। তবে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রচেষ্টায় ধীরে ধীরে মরদেহগুলো স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব হয়।
বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে বিগত ৪৫ দিন যাবত কভিট-১৯ এ মৃত্যুবরণ করেনি এমন শতাধিক বাংলাদেশির মরদেহ দেশে পাঠানো হয়েছে। সে সঙ্গে চার্টার্ড ও বিশেষ বিমানের মাধ্যমে পাঁচ হাজারের বেশি বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ ডি অ্যাফায়ার্স মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাতে স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করা অনেক বাংলাদেশিদের পরিবার তাদের মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ভ্রমণের উপর বিধিনিষেধের কারণে এই মরদেহগুলি বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। মার্চ মাস থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মর্টরিয়ারে পড়ে ছিল এবং ধীরে ধীরে দূতাবাস তাদের প্রত্যাবাসনে সহায়তা করছে।
মিজানুর রহমান আরো বলেন, “সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহযোগি মনোভাবের কারণে লকডাউনের পরপরই মরদেহগুলো ধীরে ধীরে স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব হয়েছে। এছাড়া সেখানো আটকে পড়া ৫০০০ এর অধিক শ্রমিকও ২০ টি বিশেষ ফ্লাইট বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন। এদের মধ্যে দূতাবাস আটটি চার্টার্ড ফ্লাইটের ব্যবস্থা করেছে যারা ওখানে দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিল অথবা কাজ হারিয়ে দেশে ফিরে আসতে আগ্রহী ছিল। ”
রহমান জানান, যে সব শ্রমিক কাজ হারানোর পর ভ্রমণের খরচ বহন করতে পারেননি, তাদের দূতাবাস সাহায্য করেছে আর কোম্পানিগুলোও তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাংলাদেশিদের ধৈর্য ধরতে এবং সাহায্যের জন্য মিশনে যোগাযোগের অহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তিনি জানান, আবুধাবি এবং দুবাই থেকে আরো ২০টি মৃতদেহ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশি এই কূটনীতিবিদ কোভিড-১৯ সংকট মোকাবেলায় সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং একে বিশ্বের অন্যতম সেরা বলে অভিহিত করেন।
তিনি যোগ করেন, “আমি আমাদের সম্প্রদায়ের জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছি তারা যাতে স্থানীয় সরকারের সাথে সহযোগিতা করে। আমি বিশ্বিস করি বাংলাদেশিরা এই দেশে বসবাসে সৌভাগ্য মনে করে তারণ এই সরকার তাদের যথাযথ দেখাশোনা করে এবং এখানে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাসের বিষয়টি নিশ্চিত করে। ”