হে বিশ্ব, কোরিয়া থেকে শেখো ‘করোনা যুদ্ধ’ জয়ের মন্ত্র

চীনে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পরপরই প্রাথমিক পর্যায়ে যেসব দেশে তা ছড়িয়ে পড়েছিল তার মধ্যে একটি হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। সবশেষ তথ্যে এ দেশে আক্রান্ত ৭ হাজার ৮৬৯ জন। যা সংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বে চতুর্থ। তবে এত আক্রান্ত থাকার পরও বিস্ময়করভাবে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত মোটে ৬৬ জন। অথচ বর্তমান পরিসংখ্যানে মোটে ৩ হাজার ৬০ জন আক্রান্তের মধ্যে স্পেনে মৃতের সংখ্যা দক্ষিণ কোরিয়াকে ছাড়িয়ে ৮৬ জন। অন্যদিকে ইতালিতে ১৫ হাজার ১১৩ জন আক্রান্তে মৃতের সংখ্যা ১,০১৬ জন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্যমতেও, অন্যান্য দেশের তুলনায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম। যেখানে সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হার ৩ দশমিক ৪ শতাংশ, সেখানে দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনায় মৃত্যুর হার মাত্র শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ।

ভাইরাস নিয়ে যখন গোটা বিশ্ব আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তার দোলাচলে তখন সংশ্লিষ্টরা কোরিয়ার এমন সাফল্যকে দৃষ্টান্ত হিসেবে ধরে নিয়েছেন। অথচ দেশটিতে কিছুদিন আগেও করোনা ভাইরাস প্রকোপে দীর্ঘ হচ্ছিল আক্রান্তের তালিকা,পাহাড় সমান হচ্ছিল আশঙ্কা আর আতঙ্ক। সরকার পড়েছিল বেকায়দায়, সমালোচনার ঝড়ে। কিন্তু কয়েক দিনের ব্যবধানেই পুরো দৃশ্যপটই যেন পাল্টে দিল মুন জা-ইনের ছোট দেশটি।

Travelion – Mobile

পাল্টেই শুধু দেয়নি মরণাঘাতি এই ভাইরাস প্রতিরোধের বিশ্বের জন‌্যে মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই তো এখন বলা হচ্ছে, হে বিশ্ব, মুনের কোরিয়া থেকে শেখো ‘করোনা যুদ্ধ জয়’ মন্ত্র।

সবকিছু উৎকন্ঠা আর আশঙ্কাকে ছাপিয়ে তারা করোনার টুটি চেপে তা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। অন্যান্য দেশের তুলনায় দক্ষিণ কোরিয়ায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে শনাক্ত করা হয় করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে। আর সে কারণে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আক্রান্ত ওই ব্যক্তিকে আলাদা করে চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসে কোরিয়ান সরকার। ফলে আক্রান্ত ওই ব্যক্তির মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কমে যায়।

করোনভাইরাস উপদ্রুত  দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর দেগুর একটি বাজারে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে
করোনভাইরাস উপদ্রুত দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর দেগুর একটি বাজারে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে

করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই আক্রান্ত রোগীদের ফ্রি চিকিৎসা দেওয়া শুরু করে দেশটি। ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী কোরিয়ান হোক কিংবা বিদেশী প্রত্যেকেই বিনামূল্যে এসেছে এ সেবার আওতায়।

এশিয়া টাইমসে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক কলামে বলা হয়েছে, করোনা ঠেকাতে চীন গ্রেট ওয়াল নীতি গ্রহণ করে নিজেদেরকে বাইরে থেকে বিচ্ছিন্ন করার মাধ্যমে সফলতা পেয়েছে। তবে এক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়া ছিল ভিন্ন পথের অনুসারি।

মুন জা-ইনের কোরিয়া বিচ্ছিন্নতার নীতি পরিহার করে নিজেদের পুরো সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে কর্মদক্ষতা,উন্নত চিকিৎসা সেবা, ব্যাপক পরীক্ষা-নিরিক্ষাসহ নানা পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন করে ভাইরাসটির লাগাম টানতে পেরেছে। নিজেদের কোন প্রদেশ বা এলাকা, এমনকি দায়েগুর মত করোনায় জর্জরিত শহরকেও তারা বিচ্ছিন্ন না করেই যে সফলতা নিশ্চিত করতে পেরেছে তা অন্যান্য দেশগুলোর জন্য অনুকরণীয়।

করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য কোরিয়ানদের দীর্ঘ সারি, স্টেটিং কিটস্ তৈরিতে ব্যস্ত শ্রমিকরা
করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য কোরিয়ানদের দীর্ঘ সারি, স্টেটিং কিটস্ তৈরিতে ব্যস্ত শ্রমিকরা

দক্ষিণ কোরিয়ায় যে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে এখনও পর্যন্ত কোনও লকডাউন, কোনও রাস্তাঘাট বা চলাচলে কোনও বিধিনিষেধের আরোপ ছিল না। শনাক্ত, পরীক্ষা এবং চিকিৎসা মন্ত্র-এখন পর্যন্ত ৫ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার দেশটি করোনা প্রতিরোধে নির্ভর করছে ব্যবস্থার ওপর।

এরই মধ্যে সরকারি ও বেসরকারিভাবে করোনাভাইরাস শনাক্তের জন্য সরকারী এবং বেসরকারী ৯৬টি পরীক্ষাগারের ব্যবস্থা করা হয়েছে দেশটিতে। এর ফলে বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় কম সময়ে সবচেয়ে বেশি মানুষের করোনা পরীক্ষা হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ায়।

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, দৈনিক ১৫ হাজার করোনা আক্রান্তকে পরীক্ষা করার সক্ষমতা রয়েছে তাদের বিভিন্ন পরীক্ষাগারে। এছাড়াও দেশব্যাপী তারা জরুরী ভিত্তিতে অনেক ড্রাইভ-থ্রু টেস্টিং স্টেশন স্থাপন করেছে যেগুলোতে মাত্র ১০ মিনিটে সম্পন্ন হয় করোনার পরীক্ষা। আর এই পরীক্ষার ফলাফল পেতে অপেক্ষা করতে হয় মোটে কয়েক ঘন্টা।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ায় টেস্টিং কিটসের অভাব নেই। চারটি সংস্থাকে এগুলি তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর অর্থ হ’ল দেশে এক সপ্তাহে ১ লাখ ৪০ হাজার নমুনা পরীক্ষা করার ক্ষমতা রয়েছে।

বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে এমন দ্রুত গতির পরীক্ষার আওতায় আনতে পারায় তারা রোগীদের যেমন তাড়াতাড়ি শনাক্ত করতে পারছে, তেমনি তাদের সঙ্গনিরোধ করে তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় চিকিত্সার ব্যবস্থার করতে পারছে।

একেবারে শুরুর দিকে চীনের উহান থেক কোরিয়ানদের দ্রুত ফিরিয়ে এনে ফিরিয়ে এনে প্রশংসার জোয়ারে ভেসেছিলেন মুন জা-ইনের সরকার। কোয়ারেন্টিনে রেখে অভূতপূর্ব চিকিৎসা সেবা দিয়ে সারিয়ে তোলা হয় তাদের ।

ধীরে ধীরে, দিন দিন, আরও বেশি মানুষ রাজধানী সিউলের রাস্তায় ফিরে আসতে শুরু করেছে। রেস্তোঁরা, বাস এবং সাবওয়ে আবার ব্যস্ত হতে শুরু করেছে। তবে বেশিরভাগ মানুষ মুখোশ পরে থাকে। বড় বড় বিল্ডিংয়ের প্রবেশপথগুলিতে তাপীয় ইমেজিং ক্যামেরা রয়েছে। লিফটে হাত স্যানিটাইজারের বোতল রাখা হয়েছে। এমনকি পাতাল রেল প্রবেশপথগুলিতে পোশাক পরিহিত ব্যক্তিরাও সবাইকে হাত ধোয়ার জন্য মনে করিয়ে দিচ্ছেন।

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কোরিয়ার যুদ্ধ
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কোরিয়ার যুদ্ধ

জানা গেছে বর্তমানে ১২০ করোনা আক্রান্ত দেশের মধ্যে করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় কোরিয়া অন্যতম। যে তিনটি চারটি দেশ ভাইরাসে আক্রান্তদের সেবা দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে তার মধ্যে কোরিয়ার সাথে সাথে চীন, তাইওয়ান, জাপান ও হংকং রয়েছে।

ল্যাবরেটরি মেডিসিন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক গিয়ে চিউল কোওন এটিকে কোরিয়ার “পাল্লি পাল্লি” জিন বলেছেন। কোরিয়ান ভাষায় পাল্লির অর্থ দ্রুত। তিনি এ কথা বুঝাতে চেয়েছেন যে, দক্ষিণ কোরিয়া দেশজুড়ে পরীক্ষাগারের নেটওয়ার্ক স্থাপন করে করোনভাইরাস শনাক্ত পরীক্ষার একটি মডেল তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে, যা ১৭ দিনের মধ্যে করােনার রোধের সব কিছুতে কাজ করতে সক্ষম হয়।

তবে এটি এসেছে তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে। তিনি বিবিসিকে বলেন, “আমরা ২০১৫ সালে মধ্যপ্রাচ্যের রেসপিরেটরি সিন্ড্রোমের (মার্স) অভিজ্ঞতা থেকে নতুন সংক্রমণের ঝুঁকি এবং এর প্রভাবগুলি শিখেছি।” মার্সের প্রাদুর্ভাবের সময় দক্ষিণ কোরিয়ায় ছত্রিশ জন মারা গিয়েছিলেন।

“আমি মনে করি যে সঠিক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রাথমিক রোগীদের শনাক্তকরণের ফলে মৃত্যুর হার কমে যেতে পারে এবং ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে বাধা হতে পারে,” অধ্যাপক কোয়ান বলেছেন। “অতীত থেকে শিখতে এবং আগে থেকেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা প্রস্তুত করা … এটিই এই নতুন ধরণের বিপর্যয় কাটিয়ে উঠার আসল শক্তি হতে পারে”, তিনি যোগ করেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাটি স্বাস্থ্য ও কল্যাণ মন্ত্রণালয় দ্বারা পরিচালিত এবং প্রাথমিক পর্যায়ে সমস্ত নাগরিকের জন্য বিনামূল্যে। এই সিস্টেমটি একটি বাধ্যতামূলক জাতীয় স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্প দ্বারা অর্থায়িত হয় যা জনসংখ্যার ৯% জনকে কভার করে। দক্ষিণ কোরিয়ায় বসবাসরত বিদেশী নাগরিকরা স্থানীয় জনগণের মতো সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবাতে একই অ্যাক্সেস উপভোগ করেন।

করোনা যুদ্ধে একদিনেরও জন্যেও বন্ধ থাকেনি দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতি চাকা, থেমে থাকেনি কর্ম চাঞ্চল্য, জনজীবন
করোনা যুদ্ধে একদিনেরও জন্যেও বন্ধ থাকেনি দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতি চাকা, থেমে থাকেনি কর্ম চাঞ্চল্য, জনজীবন

সবচেয়ে বড় বিস্ময়, এই যুদ্ধে একদিনেরও জন্যেও বন্ধ থাকেনি দেশটির অর্থনীতি চাকা, থেমে থাকেনি কর্ম চাঞ্চল্য, জনজীবন। উৎপাদন, অফিস, আদালত সবই চলছে স্বাভাবিকভাবে ।মরণাঘাতির ভীতিকে উপেক্ষা করেই কাজপাগল কোরিয়ান জাতি ব্যস্ত ছিলেন নিজের দায়িত্বে। তবে কেরানা প্রতিরোধে সরকারের সর্তকতামূলক বিধিনিষেধ কেউই অমান্য করেননি।

এ দিকে করোনা রোধে কোরিয় সরকারের নানা উদ্যোগ আর বিধি নিষেধের মধ্যে দেশটিতে বসবাসরত ২০ হাজার বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি সর্বোচ্চ সতর্ক ও নিরাপদেই আছেন। সুখবরটা হল এখন পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশি এই মরণঘাতি ভাইরাসে আক্রান্ত হন নি। আর এক্ষেত্রে তাদের সহায়তা ও শক্তি যোগাচ্ছে সিউলে বাংলাদেশ দূতাবাস। ভাইরাস থেকে বাংলাদেশিদের মুক্ত রাখতে ২৪ ঘন্টা মিশন কার্যক্রম, জরুরী হট লাইন চালু, সামাজিক যোগাযােগ মাধ্যম এবং ভিডিও বার্তার মাধ্যমে সচেতনতা ও প্রতিরোধকমূলক প্রচারণাপ্রচার-প্রচারণাসহ নানা পদক্ষেপ চালিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে দূতাবাস।

মেট্রো রেল স্টেশন মাস্ক পরিহিত প্রবাসীবাংলাদেশিরা
মেট্রো রেল স্টেশন মাস্ক পরিহিত প্রবাসীবাংলাদেশিরা

প্রবাসী বাংলাদেশি গবেষক ড.মোহাম্মদ আযম খানের ভাষায়,”কোরিয়ানদের মধ্যে করোনা ভীতি তেমন কাজ করেছে বলে মনে হয়নি। প্রতিদিনই মেট্রো বা বাসে উপছে পড়া ভীড় থাকে। মরণঘাতির করোনার ভয়কে উপেক্ষা করে একাগ্রচিত্তে কাজ নিয়েই ব্যস্ত আছেন সবাই। সত্যিই অভাবনীয়। কর্মে বলীয়ান এ জাতি উন্নতির স্বর্ণশিখরে পৌঁছাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।”

কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান দেসং ওয়াংগিং-এর ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম বুলবুল বলেন, কোরিয়ানদের পেশাদারিত্ব আগন্তুক যে কাউকে চমকে দে। এই কাজ পাগল জাতিকে কোনভাবেই থমকে দিতে পারেনি করোনা। ভাইরাসের এই কবলেও স্বাভাবিকভাবেই জীবন যাপন করছে। পাশাপাশি কোরিয়ান মালিকরা কর্মিদের বাইরে যেতে নিষেধ করেছেন, জনসমাগমে এড়িয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছেন, মাস্কের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আশা করছি, মার্চ মাসের পর দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাভাইরাসের প্রকোপ শূণ্যর কোঠায় চলে আসবে। বলাবাহুল্য, আমরা বাংলাদেশিরা এখনো পর্যন্ত সুস্থ আছি, এটি খুবই ভাল সুসংবাদ আমাদের জন্য।”

জনজুর জনবুক ন্যাশন্যাল ইউ‌নিভা‌র্সি‌টির গ‌বেষক ডক্টর সাইদুল ইসলাম, কোরিয়ানরা কাজকে তারা জীবনের চেয়ে বেশি ভালবাসে। ভয়াবহ এই করোনাভাইরাসের মধ্য তাদের কর্ম ব্যস্ততা থেমে নেই। আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আছি, সেখানেই আমাদের ল্যাবে সময় দিতে হচ্ছে। সারাদিন বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে গবেষণায় মগ্ন থাকি। বিদ্যালয়গুলো কয়েক দিনের বন্ধ ঘোষণা করলেও কার্যক্রম চলছে।

(বাম থেকে) দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশি  ড. মোহাম্মদ  আজম খান, রবিউল ইসলাম বুলবুল, ড.সাইদুল ইসলাম
(বাম থেকে) দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশি ড. মোহাম্মদ আজম খান, রবিউল ইসলাম বুলবুল, ড.সাইদুল ইসলাম

২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ‘দ্য ল্যানসেটে’ ১৯৯০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত শিক্ষাগত অর্জন, শিক্ষার গুণগত মান ও স্বাস্থ্যগত অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে ২০ থেকে ৬৪ বছর বয়সী মানবসম্পদের প্রত্যাশিত আয়ুষ্কালের নতুন মানদণ্ড প্রকাশিত হয়। দক্ষিণ কোরিয়া স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল সূচকে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে এ তালিকায় ষষ্ঠ অবস্থান লাভ করে।

দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্যসেবা উপলক্ষ্য (ওয়েস্টার্ন) medicine পছন্দগুলি সরবরাহ করে, যার মধ্যে অনেকগুলি তাদের আধুনিক অংশগুলির পাশাপাশি ব্যাপক গবেষণা ও বিকাশ লাভ করেছে। প্রযুক্তি এবং প্রযুক্তি উভয় ক্ষেত্রেই চর্মরোগের চিকিত্সার ক্ষেত্রে এই দেশটি বিশ্বকে এগিয়ে নিয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় মানুষের গড় আয়ু দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ২০১৬ সালে গড় আয়ুষ্কালের দিক দিয়ে বিশ্বে দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থান ছিল ১৬তম। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রাপ্তবয়স্ক জনগণের মধ্যে এইচআইভি/এইডস সংক্রমণের হারও সর্বনিম্ন (০.১%) , যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যে সংক্রমণের হার যথাক্রমে ০.৬%, ০.৪% ও ০.৩%। এশিয়াতে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিনেশনে দক্ষিণ কোরিয়া শীর্ষে, যেখানে প্রতি হাজারে ৩১১ জন ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। কোরিয়ানদের মধ্যে স্থূলতার হারও সর্বনিম্ন – মোট জনগণের মাত্র ৩% স্থূল, যা ওইসিডির অন্তর্ভুক্ত দেশসমূহের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। উল্লেখ্য, মার্কিন জনগণের ৩০% এবং ব্রিটিশদের ২৩% স্থূলতা সমস্যায় ভুগছে। এর ফলে, দক্ষিণ কোরিয়ায় হৃদরোগজনিত মৃত্যুর হারও ওইসিডির অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে চতুর্থ সর্বনিম্ন।

সুস্থ হয়ে উঠা রোগীদের রক্ত পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণও করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা একটি “অনন্য” প্রোটিন তৈরি করেছেন যা অ্যান্টিবডিগুলি শনাক্ত করতে পারে – আশাবাদটি এটি ভবিষ্যতে একটি ভ্যাকসিন তৈরি করতে সহায়তা করবে।

আগের খবর
কোরিয়াপ্রবাসীরা সতর্ক ও নিরাপদে, নেপথ্যে বাংলাদেশ দূতাবাস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!