স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনে ১৬১ কোটি টাকা জরিমানা গুনলেন রাজ্যবাসী

করোনাভাইরাস

করোনার স্বাস্থ্যবিধি ভাঙার জেরে জরিমানা বাবদ ১৬১ কোটি টাকা আদায় করেছে ভারতের গুজরাত রাজ্য সরকার। গতবছর ৩০ মে থেকে এবছর ১ এপ্রিলের মধ্যে এই জরিমানা আদায় করা হয় আইন অমান্য করা সর্বস্তরের মানুষ থেকে। কোথাও মাস্ক না পরা, কোথাও যত্রতত্র থুতু ফেলা কিংবা সামাজিক দূরত্ববিধি না মানাদের প্রত্যেকেকে জরিমানা গুনতে হয়েছে। গুজরাত জরিমানা আদায়কারী রাজ্য পুলিশের মতে, শুধু কথায় চিঁড়ে ভিজছিল না। তাই জরিমানার কড়াকড়ি। এতে লাভের লাভ একটাই— জনতা সচেতন হয়েছে। ফলে কোভিডের সংক্রমণ অনেকটাই ঠেকানো গিয়েছে।

আহমেদাবাদ পুলিসের ডিজি গৌরব জাসানি বলেন,“গত ৩০ মে রাজ্য সরকার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেখানে সাফ বলা হয়, বাইরে মাস্ক ছাড়া বেরোলে আর্থিক জরিমানা করা হবে৷ এর আগে স্থানীয় পৌরসভার হাতে এই দায়িত্ব ছিল। তখন অভিযুক্তেরা নামেমাত্র জরিমানা দিতেন। তাই এভাবে চালান কেটে ফাইন নেওয়ার ব্যবস্থায় কোনও ফল মিলছিল না। নয়া নির্দেশিকায় গোটা দায়িত্ব পুলিস প্রশাসনের হাতে চলে আসে। অপরাধের গুরুত্ব বুঝে ফাইনের অঙ্ক ধার্য হয় ২০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত৷ ঠিক তারপরই ছবি বদলাতে শুরু করে।“

টাইমস অব ইন্ডিয়া প্রতিবেদন বলা হয়, শুধু আমেদাবাদ শহরেই ৩০ মে থেকে ১৫ মার্চের মধ্যে প্রায় ৪.৮৪ লক্ষ মানুষ নিয়ম ভেঙে মাশুল গুনেছেন প্রায় ৩৬ কোটি টাকা! ভদোদরায় জরিমানা দিয়েছেন প্রায় ১ লক্ষ ২৬ হাজার জনতা। সেখানে স্থানীয় পুলিসের হাতে জরিমানা বাবদ এসেছে ৯.৪৮ কোটি টাকা। রাজকোটেও অভিযুক্তের সংখ্যা কম নয়, প্রায় আড়াই লক্ষ। তাঁদের কেউ নিয়মের তোয়াক্কা না করে থুতু ফেলেছেন, কেউ মাস্ক পরায় গা করেননি৷ তাই প্রশাসনকেও কড়া দাওয়াই বেছে নিতে হয়েছে। রাজকোট পুলিশের কমিশনার মনোজ অগরওয়াল জানান,“শুরুতে ২ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য হয়েছিল। কিছুদিন পর নিয়ম ভাঙার গ্রাফ কিছুটা নামতেই সেটা কমিয়ে ৫০০-তে আনা হয়। শেষে ২০০। এভাবে পরিস্থিতি অনেকটা আয়ত্বে এসেছে। সংক্রমণও কমেছে। আসলে কাউকে শাস্তি দেওয়া উদ্দেশ্য নয়। আমরা চাই, যাতে রাজ্যের মানুষ আরেকটু সচেতন হন।“

Travelion – Mobile

রাজ্যের একাধিক জেলা পুলিশের উদ্যোগে বিনামূল্যে মাস্ক বিলির কর্মসূচিও নেওয়া হয়েছে। পথচলতি জনতার মুখে মাস্ক না থাকলেই হাতে একটি করে মাস্ক ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এরপরেও যাঁরা সচেতন হননি, তাঁদের বাধ্য হয়েকারাপারে চালান করতে হয়েছে।

সরকারি হিসেব অনুযায়ী, গত বছর কোভিড বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে রাজ্যে প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ গ্রেপ্তার হয়েছে। এফআইআর দায়ের হয়েছে প্রায় দু’লক্ষ। এর মধ্যে সর্বোচ্চ আহমেদাবাদে। সেখানে মহামারী নিয়ন্ত্রণ আইন অমান্য করার ভিত্তিতে ৪৭ হাজার ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সুরাতও পিছিয়ে নেই। সেখানে এই সংখ্যা ৩৩ হাজার ছুঁইছুঁই।

অতএব কোভিড পরিস্থিতিতে অবাধ্য জনতাকে নরমে-গরমে পথে চলতে শেখাচ্ছে গুজরাত।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!