সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক প্রবাসী বাংলাদেশি
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে প্রথমবারের মতো একজন বাংলাদেশির আক্রান্ত হওয়ার খবর জানা গেছে। তবে বাংলাদেশে নয়, সূদুর সিঙ্গাপুরে। তিনি একজন প্রবাসী বাংলাদেশি রেমিট্যান্সযোদ্ধা।
সিঙ্গাপুরে তিনজন নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন বাংলাদেশের এবং অন্য দুজন সিঙ্গাপুরের নাগরিক। তিনজনের কারও সম্প্রতি চীন সফরের অভিজ্ঞতা নেই বলে জানিয়েছে সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
রবিবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৩ জনে। করোনাভাইরাসের বিস্তারের তালিকায় চীনের পর এখন তৃতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্ত সিঙ্গাপুরে। জাপানে আক্রান্ত হয়েছে ৯০ জন।
৩৯ বছর বয়সী ওই বাংলাদেশি সিঙ্গাপুরে একজন বৈধ পুরুষ শ্রমিক হিসেবে কর্মরত আছেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই তার শরীরে অসুস্থতা দেখা দেয়। ভাইরাসের লক্ষণ বুঝতে পেরে বাংলাদেশের ওই কর্মী ৩ ফেব্রুয়ারি সাধারণ একটি ক্লিনিকে যান। ৫ ফেব্রুয়ারি তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে যান চেঙ্গি জেনারেল হাসপাতালে। কিন্তু ৭ ফেব্রুয়ারি চাঙ্গি জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। ৮ ফেব্রুয়ারি নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তার দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপর তাকে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজ (এনসিআইডি)-তে স্থানান্তর করা হয়।
অসুস্থ হওয়ার আগে তিনি মোস্তফা সেন্টারে (১৪৫ সৈয়দ আলাভি সড়ক) গিয়েছিলেন এবং দ্য লিও ডরমিটরিতে (২৫ বুকিত রোড) বসবাস করছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে মোস্তফা সেন্টার থেকেই তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মোস্তফা সেন্টারে লোকজনের ভিড় লেগেই আছে। ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক কেনার জন্য সেখানে লোকে প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকছে। দেশটিতে এছাড়া আর কোথাও মাস্ক পাওয়া যাচ্ছে না। তবে সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে এমন জায়গা থেকে ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা খুবই কম।
সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবরটি মিডিয়াকে নিশ্চিত করেছেন।
হাইকমিশনার বলেন, ‘সিঙ্গাপুরের কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের এক কর্মীর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য আমাদের জানিয়েছেন। নিরাপত্তার খাতিরে ৩৯ বছরের ওই বাংলাদেশির পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। আশা করছি, সোমবারের মধ্যে তাঁর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারব। এ মুহূর্তে ভাইরাস–আক্রান্ত ওই বাংলাদেশিকে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিস বা এনসিআইসিডিতে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তাঁর স্বাস্থ্যের সবশেষ পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে প্রয়োজনীয় যা যা করার, হাইকমিশনের পক্ষ থেকে তা করা হবে।’