লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাসের নামে প্রতারণা!

লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাসের নামে প্রতারনা করে সাধারণ প্রবাসীদেরকে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। জানা গেছে, গত ৩ থেকে ৪ মাস ধরে অভিনব পন্থায় তারা এ ধরনের প্রতারনা চালিয়ে যাচ্ছে।

বৈরুত দূতাবাসের নামে ভূয়া ফেসবুক আইডি, হোয়াটসঅ্যাপে রাষ্ট্রদূতের ছবি ব্যবহারসহ নিজেদের দূতাবাসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে এই প্রতারনার ফাঁদ বানিয়েছে চক্রটি।

YouTube video

Travelion – Mobile

বিশেষ করে দূতাবাসের নেওয়া বিশেষ কর্মসূচির আওতায় স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে কাগজপত্রবিহীন প্রবাসী বাংলাদেশিরাই তাদের প্রতারণা শিকার হচ্ছেন।

অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের দূতাবাসের নেওয়া বিশেষ কর্মসূচির আওতায় স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে দ্রুত নিবন্ধন করে দেওয়া কিংবা নিবন্ধন করা প্রবাসীদের দ্রুত দেশে পাঠানোর সুযোগ দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই প্রতারক চক্র।

প্রতারণার শিকার বাংলাদেশিদেরকে দূতাবাসের নামে দেওয়া  প্রতারক চক্রের ভুয়া চিঠি
প্রতারণার শিকার বাংলাদেশিদেরকে দূতাবাসের নামে দেওয়া প্রতারক চক্রের ভুয়া চিঠি

টাকা পাওয়ার পর দূতাবাসের নামে দেওয়া ভুয়া চিঠিও ধরিয়ে দিচ্ছে প্রতারক চক্র। প্যাডবিহীন সাদা কাগজে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শিরোনামে বৈরুত দূতাবাসের স্বাক্ষর করা চিঠিতে ভুক্তভোগী প্রবাসীর দেশের ফেরার অনুমতি, তারিখ, বিমান টিকেট ইত্যাদি উল্লেখ আছে।

প্রতারনার শিকার লেবাননপ্রবাসী বাংলাদেশি কর্মী আবু বক্কর ও মোশারফ হোসেন আকাশযাত্রাকে জানান, প্রতারক চক্রটি নিজেদের দূতাবাসের কর্মকর্তা বা কর্মকর্তার আত্মীয়ের পরিচয় দিয়ে তাদের কাছ থেকে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

বিশেষ কর্মসূচিতে নিবন্ধিত লেবাননের জুনি জেলায় বসবাসকারী আবু বক্কর বলেন, দ্রুত দেশে ফিরে যেতে আমি বিকাশে ৪০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম দূতাবাস কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া প্রতারককে। সে জানিয়েছিল ২/৩ দিনের মধ্যে আমাকে পাঠাবে। টাকা পাওয়ার পর সে দূতাবাসের একটি চিঠি আমাকে পাঠায়। কিন্তু চিটি ধরণ দেখে আমার সন্দেহ হয় । অন্যদের পরামর্শে আমি দূতাবাসে যোগাযোগ করি।’

প্রতারনার শিকার লেবাননপ্রবাসী বাংলাদেশি কর্মী আবু বক্কর (বামে) ও মোশারফ হোসেন (ডানে)
প্রতারনার শিকার লেবাননপ্রবাসী বাংলাদেশি কর্মী আবু বক্কর (বামে) ও মোশারফ হোসেন (ডানে)

মোশারফ হোসেন বলেন,’আমি আমিন নামে একজনকে ৮০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। সে একবার দূতাবাসের গোয়েন্দা কর্মকর্তা, আরেকবার সেনা কর্মকর্তার পরিচয় দিয়েছিল। টাকা পাওয়ারর পর থেকেই তার আর কোন হদিস নেই ।’

প্রতারিত হওয়া এই দুজনের অভিযোগ তথ্য প্রমানসহ বৈরুত দূতাবাসের নজরে আনা হয়। অভিযোগে পেয়েই প্রতারণা চক্রটির সন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে দূতাবাসের শ্রম উইং। এ ব্যাপারে লেবানন এবং বাংলাদেশের আইটি বিভাগের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে বলে জানায় দূতাবাস ।

সাধারণ প্রবাসীদের এ ধরনের প্রতারকদের কাছ থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার।

তিনি আকাশযাত্রাকে বলেন,’দূতাবাসের কর্মকর্তা না হয়েও দূতাবাসের পরিচয় দেওয়া বা রাষ্ট্রদূতসহ অন্য কোন কর্মকর্তার ছবি ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপে ব্যবহার আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। তার ওপর সাধারণপ্রবাসীদের সঙ্গে প্রতারণা করা তো আরও বড় অপরাধ। আমাদের কাছে তথ্য প্রমান আশা শুরু করেছে। শীঘ্রই প্রতারকদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

প্রবাসীদের যে কােন সহায়তা ও সমস্যায় বৈরুতে দূতাবাসে সরাসরি যোগাযোগের জন্য আবার অনুরোধ জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত।

এ ছাড়া আরও যারা এ ধরনের প্রতারণার শিকার হয়েছেন তাদের তথ্যপ্রমাণসহ দূতাবাসে অভিযোগ দিতে এবং এ চক্র সর্ম্পকে কোন তথ্য পেলে তা শ্রম উইং জানাতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ভিডিও দেখুন

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!