লেবাননে কমেছে করোনাক্রান্ত, স্বাভাবিক হচ্ছে জীবনযাত্রা
লেবাননে করোনাভাইরাস সংক্রামণ কমতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার লেবাননে করোনভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত একেবারে হাতে গোনা, মাত্র ৯ জন। দেশটির বেশিরভাগ সেক্টর পুনরায় চালু এবং কারফিউয়ের সময়সীমা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ হ্রাস করায় অন্যদিকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে জীবনযাত্রা।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়, করোনায় নতুন আক্রান্ত শনাক্ত ৯ জনের মধ্যে ২ জন স্থানীয়ভাবে সংক্রামিত বাসিন্দা এবং বাকি ৭ জন বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আসা লেবানিজ প্রবাসী।
করোনাভাইরাস সংক্রামণের দৈনিক বৃদ্ধি এক সপ্তাহের আগে বেড়ে গেলেও সাম্প্রতিক দিনগুলিতে স্থিতিশীল হয়েছে। এর আগে সোমবার, দেশটিতে স্থানীয় সাত জনসহ ১৩ জন নতুন আক্রান্ত রেকর্ড হয়েছে। রবিবার ২৯ টি নতুন করোনাভাইরাস কেস এবং একজনের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে, যা আগের দিনের তুলনায় মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
সব মিলিয়ে দেশটিতে করোনা আক্রান্তের মোট সংখ্যা এখন ১ হাজার ২২২জনে দাঁড়িয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ২ হাজার ৬৮ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
লকডাউন শিথিল করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান-স্থাপনা চালু এবং কারফিউয়ের সময়সীমা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করার ফলে লেবাননের জীবনযাত্রা গত দুদিনে স্বাভাবিক গতির খুব কাছাকাছি পৌঁছছে। সরকার মধ্যরাত থেকে সকাল পাঁচটা বাদে জনগণকে এখন সারাদিন বাইরে থাকতে অনুমতি দিয়ে কারফিউ সময়কে হ্রাস করছে।
প্রায় তিন মাস গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্ত হয়ে মানুষ বেরিয়ে আসায় আবার প্রাণ চাঞ্চল্যে ফিরে এসেছে রাজধানী বৈরুতসহ সারাদেশে, ব্যস্ত হয়ে ওঠেছে সড়কগুলো ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় সোমবার সকালে শপিং মল, যাদুঘরসহ অনেকগুলো স্থাপনা আবার খোলা হয়। প্রথম দিনে মলগুলিতে ক্রেতার আগমণ অনেক কম ছিল। ক্রেতারা সতর্কতার সাথে কোরোনাভাইরাস প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিয়ে চলাফেরা করে।
স্থানীয় টিভি চ্যানেল আল-জাবেদকে একজন লেবানিজ মহিলা বলেন যে, লেবাননের অর্থনৈতিক সমস্যা এবং জাতীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস এখন অনেকেরই কেনার সামর্থ্য নেই। মলে ঘোরার ব্যস্ততার মাঝে দীর্ঘদিন ঘরে আটকে থাকায় এক ঘেয়েমীতা দূর করছি মাত্র।”
৩২ বছর বয়সী লায়লা বলেন, “আমরা আগের মতো কাজের শেষে বন্ধুদের সাথে পানীয় পান করার জন্য আবার সুযোগ পাওয়ায় আমরা খুশি। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী বন্ধের পর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো কিছুটা অর্থোপার্জন করতে পারছে।”
ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সানিতা নামক সংস্থাটির কাছ থেকে ১ মিলিয়ন মাস্ক পেয়েছে, যা লেবানন জুড়ে পৌরসভা ও সুরক্ষা বাহিনীর মাধ্যমে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।
যারা মাস্ক ছাড়াই বাইরে ধরা পড়ে তাদের জরিমানা দিতে হবে বলে সরকার গত সপ্তাহে সিদ্ধান্ত জারি করে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হামাদ হাসানও সম্প্রতি ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাসে মাস্ক পরার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।