লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যার মূল হোতা আল-মিশাই নিহত
লিবিয়ার মিজদাহ শহরে ২৬ বাংলাদেশিসহ ৩০ জন অভিবাসীকে হত্যার মূল হোতা খালেদ আল মিশাই ঘারিয়ানে এক ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ত্রিপোলি থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরের ওই শহরে লিবিয়ার বিমান বাহিনীর ড্রোন হামলায় নিহত হন হাফতার মিলিশিয়া বাহিনীর অন্যতম সদস্য খালেদ মিশাই।
লিবিয়ার ইংরেজি দৈনিক দি লিবিয়া অবজারভার মঙ্গলবার রাতে টুইটে এ তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে, একই গণমাধ্যমে প্রকাশিত অপর এক খবরে জানা গেছে গত সোমবার (১ জুন) লিবিয়ার ঘোট আল-রিহ শহরে দেশটির বিমান বাহিনীর ড্রোন হামলার কবলে পড়ে লিবিয়ায় আমিরাত সমর্থিত বিদ্রোহী নেতা খলিফা হাফতারের বাহিনী। ওই হামলায় বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে আল-মিশাইও নিহত হন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত বুধবার লিবিয়ার অপহরণকারীদের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে বাংলাদেশ ও সুদানের অভিবাসনপ্রত্যাশীরা স্থানীয় এক অপহরণকারীকে মেরে ফেলে। এর জেরে পরদিন মিলিশিয়ারা নির্মমভাবে বাংলাদেশের ২৬ জন অভিবাসীকে হত্যা করে। আহত হন আরও ১১ জন বাংলাদেশি। একই হামলায় লিবিয়ার মিলিশিয়াদের হাতে প্রাণ হারান আরও চার সুদানি নাগরিক।
গত ২৮ মে লিবিয়ার মিজদাহ শহরে ২৬ বাংলাদেশিসহ ৩০ জনকে গুলি করে হত্যা করে মানবপাচার চক্র। এ ছাড়া গুলিতে মারাত্মক আহত হন আরো ১১ বাংলাদেশি। নৃশংসভাবে নিহত ২৬ জন বাংলাদেশিই ছিলেন মানবপাচারের নির্মম শিকার। পাঁচ মাস আগে তারা ইতালি যাওয়ার উদ্দেশে দেশ ছেড়েছিলেন। লিবিয়ার বেনগাজি থেকে ১৫ দিন আগে ত্রিপোলি হয়ে ইউরোপ যাত্রার পথে তারা দুই দফা অপহরণকারীদের হাতে জিম্মি হয়েছিলেন। শেষ দফায় অপহরণকারীদের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে আফ্রিকার জিম্মিদের সঙ্গে মিলে অপহরণকারীদের হোতাকে হত্যা করলে এর জেরে তাঁদের বেঘোরে প্রাণ দিতে হয়।
আল জাজিরা ও মিডল ইষ্ট আইয়ের খবরে জানানো হয়, ত্রিপোলি থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরের কৌশলগত পার্বত্য শহর ঘারিয়ানের দখল নিতে লিবিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার জিএনএর সঙ্গে ফিল্ড মার্শাল খলিফা বেলকাশিম হাফতারের মিলিশিয়া বাহিনীর তুমুল লড়াই চলছে। গত কয়েক দিনের ওই লড়াইয়ে হাফতার মিলিশিয়াদের ওপর ড্রোন হামলা চালাচ্ছে লিবিয়ার বিমান বাহিনী। গত কয়েকদিনের লড়াইয়ে দুই পক্ষের অনেক লোক হতাহত হয়েছে।
ওই ঘটনায় গত সোমবার ভোরে মানবপাচারকারীচক্রের অন্যতম হোতা কামাল উদ্দিন ওরফে হাজি কামালকে (৫৫) গ্রেপ্তার করে র্যাব। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর গুলশান থানার শাহজাদপুর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাবের একটি দল। তাঁর কাছ থেকে ৩১টি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়। ওই পাসপোর্টগুলোর মালিকদের তিনি লিবিয়ায় পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন।
এর আগে একই ঘটনায় মাদারীপুরের রাজৈর থানায় দুটি, মাদারীপুর সদর থানায় একটি ও কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানায় একটিসহ মোট চারটি মামলা করেন নিহতদের অভিভাবকরা।