লন্ডনে বর্ণাঢ্য গোলাপগঞ্জ উৎসব

ব্রিটেনের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ৫০টির মতো সংগঠন ও বিলেতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা কয়েক হাজার মানুষের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হলো সার্বজনীন গোলাপগঞ্জ উৎসব যুক্তরাজ্য-২০১৯।

রোববার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় ঐতিহাসিক আলতাব আলী পার্কে শান্তির প্রতিক কবুতর ও ফেস্টুন উড়িয়ে উৎসব উদ্বোধন করেন টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র জন বিগস,সার্বজনীন গোলাপগঞ্জ উৎসব যুক্তরাজ্য-২০১৯ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ছড়াকার নাট্যকার ও একাউন্টেন্ট আবু তাহের, সদস্য সচিব মারুফ আহমদ, গোলাপগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নের মুরব্বি ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এর পর বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে মূল অনুষ্ঠান স্থল ব্রাডি আর্ট সেন্টারে উপস্থিত হন আয়োজকরা।

উৎসবের দ্বিতীয় পর্বের সূচনা হয় বেলা তিনটায়। জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মিতা তাহের ও তার দল সমবেত কণ্ঠে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। এ দিন ব্রাডি আর্ট সেন্টারের মেইন হলে আয়োজকরা পূর্ব থেকেই প্রজেক্টরে সরাসরি অনুষ্ঠান উপভোগের সুযোগ করে দেয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উভয় হল পরিপূর্ণ হয় যায়। জাতীয় সঙ্গীতের পর পরই ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের সেতু বন্ধনের ওপর ভিত্তি করে নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের গাওয়া গান শোনানো হয়। তার পর উৎসব কমিটির আহ্বায়ক আবু তাহের, সদস্য সচিব মারুফ আহমদ ও অর্থ সচিব সালাহ উদ্দিন উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানান।

লন্ডনে বর্ণাঢ্য গোলাপগঞ্জ উৎসব
লন্ডনে বর্ণাঢ্য গোলাপগঞ্জ উৎসব

অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণের মধ্যে ছিল গোলাপগঞ্জের তথা ১১টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে প্রমাণ্যচিত্র প্রদর্শন, সিলেটি কবিতা আবৃতি, সিলেটি বিয়ের গান, ধামাইল নৃত্য, নৌকা বাইচের গান, নৃত্য, নাইফ ক্রাইম ও ড্রাগের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা করতে সেমিনার এবং সিলেটি আধুনিক ও বাউল গান।

Travelion – Mobile

দ্বিতীয় পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বেথনাল গ্রিন ও বো আসনের এমপি রোশনারা আলী। আরও উপস্থিত ছিলেন ক্রয়ডন কাউন্সিলের মেয়র হুমায়ূন কবির, টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিলের স্পিকার ভিকটোরিয়া ওভাজে, ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলর আছমা বেগম, ডেপুটি স্পিকার আহবাব মিয়া, ওসমানী ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক শফিউর রহমান এবং টাওয়ার হ্যামলেটের কাউন্সিলর বৃন্দ। অনুষ্ঠানে উৎসব উপলক্ষে প্রকাশিত স্মারক ‘শিকড়ের সন্ধানে’ গ্রন্থের মোড়ক উম্মোচন করা হয়।

অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত গোলাপগঞ্জের মুরব্বিদের ফুল দিয়ে বরণ করেন আহ্ববায়ক আবু তাহের ও সদস্য সচিব মারুফ আহমেদ। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সময়ে মনোমুগ্ধকর গান গেয়ে দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন বাংলাদেশ থেকে যাওয়া জনপ্রিয় বাউল শিল্পি আশিক, ব্রিটেনের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আলাউর রহমান, মিতা তাহের, তন্নি, বাপ্পিতা ও নতুন প্রজন্মের শিল্পী মৃদুল, মহিমা, রাফা, আনিকা ও মাহি।

মুনিরা পারভিনের উপস্থাপনায় সিলেটি বিয়ের গান ও ধামাইল নৃত্যে সবাইকে মাতিয়ে রাখেন মিতা তাহের, তন্নী, বাপ্পিতা, আনিকা, রাফা, মাহি, মহিমা, মৃদুল, রাদ, রাজিব, রাকাসহ অনেকে।

কবি ও গীতিকার আহমেদ ময়েজের উপস্থাপনায় ছিল সিলেটি ভাষায় বাউল গান ও মরমী সাহিত্যর ওপর কিছু কথা। এছাড়া অনুষ্ঠানে সিলেটি কবিতা আবৃতি করেন জনপ্রিয় রেডিও প্রেজেন্টার ও সাংকৃতিক ব্যাক্তিত্ব মিসবা জামাল, ফয়েজ নূর ও কবি দবিরুল ইসলাম চৌধুরী। পুরনো দিনের স্মৃতি বিজড়িত পুঁথি পাঠ করেন কবি মুজিবুল হক মনি।

[প্রিয় পাঠক, আকাশযাত্রা প্রবাস বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকসহ কমিউনিটির নানান খবর, সংগঠনের খবর, ভ্রমণ, আড্ডা,আনন্দ-বেদনার গল্প, ছোট ছোট অনুভূতি, দেশের স্মৃতিচারণসহ যে কোনো বিষয়ে লিখে পাঠাতে পারেন। লেখা ছবিসহ মেইল করুন [email protected] এই ঠিকানায়।]

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!