যুক্তরাজ্যে আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর শোকসভা

‘বাঙালির বাতিঘর আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী চেতনার যে বহ্নিশিথা প্রজ্জ্বলিত করে গেছেন তা আমাদেরেক চিরকাল আলো দিয়ে যাবে। যতোদিন বাঙালি এবং বাঙালিয়ানা থাকবে ততদিন বেঁচে থাকবে তার কালজয়ী সৃষ্টি ‌‌’আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি গানটি’।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার ভার্চুয়ালি শোকসভায় সদ্য প্রয়াত লেখক, সাংবাদিক, কলামিস্ট এবং অমর একুশের গানের রচিয়তা আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীরকে এমনই অভিমত রেখেছেন বক্তারা।

১২ জুন লন্ডন সময় বেলা ৩ টায় শোকসভার শুরুতেই মুনিরা পারভীন ও মোনায়েম সরকারের ‘কালজয়ী কলম যোদ্ধা’ কবিতাটি আবৃত্তিতে আবেগঘন পরিবেশে তৈরি হয়। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার অনারারি সভাপতি নূর উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মুনিরা পারভীনের পরিচালনায় শোকবার্তা পাঠ করেন নির্মূল কমিটির কার্যকরী পরিষদের সদস্য জেসমিন চৌধুরী।

Travelion – Mobile

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি কেন্দ্রীয় শাখার সভাপতি শাহরীয়ার কবির তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আবদুল গাফফার চৌধুরী পাকিস্তান আমল থেকে ধর্ম নিরপেক্ষতা এবং প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক ভীত রচনা করতে কাজ করেছেন, স্বাধীন বাংলাদেশে মৌলবাদ ও বাংলাদেশ বিরোধী চক্রের বিরুদ্ধেও সোচ্চার ছিলেন তিনি। তাঁর সেইসব লেখা সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। তিনি ছিলেন আমাদের বাতিঘর।’

বাংলাদেশ জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমীন বলেন, ‘আবদুল গাফফার চৌধুরী সারাজীবন প্রগতিশীল পত্রিকা, প্রচারপত্রের জন্য লড়েছেন, ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে উনার কলম গর্জে উঠেছে বারবার। আমাদের যে পথ দেখিয়ে গেছেন তিনি, তাঁর প্রতি আমরা চির কৃতজ্ঞ।’

সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘আবদুল গাফফার চৌধুরী ছিলেন অসাম্প্রদায়িকতার বাতিঘর। তিনি শুধু লেখক, সাংবাদিক, কলামিস্ট, কবি ছিলেন না, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।’

যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ বলেন, ‘আবদুল গাফফার চৌধুরী শুধুমাত্র লেখালেখি করেই দায়িত্ব শেষ করেননি। তিনি বঙ্গবন্ধুপ্রেমী মানুষদের, দেশপ্রেমী মানুষদের, মৌলবাদবিরোধী মানুষদের একত্র করে তাদের পথ দেখিয়েছেন।’

শোক সভায় আবদুল গাফফার চৌধুরীর দুই মেয়ে ইন্দিরা চৌধুরী ও চিন্ময়ী চৌধুরী অংশ নেন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন, যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশ মিশনের কাউন্সেলর দেওয়ান মাহমুদুল হক, ব্রিটেন প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক মাহমুদ রউফ, বীর মুক্তিযাদ্ধা লোকমান হোসেন, শেখ মুজিব রিসার্চ সেন্টারের সাধারন সম্পাদক উর্মী মাজহার।

কবিতা আবৃত্তি করেন উর্মি মাজহার এবং তাঁকে নিবেদিত কবিতা আবৃত্তি করেন দেওয়ান মাহমুদুল হক।

প্রয়াত কণ্যা বিনিতা চৌধুরীকে নিয়ে আবদুল গাফফার চৌধুরীর লেখা শেষ গানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়। নিজের সুরে একাত্তরের কণ্ঠযোদ্ধা হিমাংশু গোস্বামীর গাওয়া এ গানটি অশ্রুসিক্ত করে সবাইকে।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!