মেক্সিকোতে বাংলা ভাষাকে সম্মান

মেক্সিকোকে একটি ফলক উন্মোচনের সঙ্গে বর্ণাঢ্য আয়োজনে মাতৃভাষা বাংলা আর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সম্মান জানালো দেশটির ওক্সাকা রাজ্যের সান্তো ডোমিঙ্গো পেটাপার শহরের জনগণ।

স্থানীয় মেক্সিকানরা, যাদের বাংলাদেশ ও ২১শে ফেব্রুয়ারির ভাষা শহীদদের সম্পর্কে সামান্য জানা ছিল, পুরো ইতিহাস জানার পর ভাষা শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান তারা ।

প্রবাসের সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ

Travelion – Mobile

স্থানীয় সময় ১ এপ্রিল পৌরসভা কার্যালয়ে ফলকটি উন্মোচন করেন মেক্সিকোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম, মেক্সিকো-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের সভাপতি সংসদ সদস্য রোজালিন্ডা ডমিঙ্গুয়েজ ফ্লোরেস ও শহরের মেয়র জুয়ান ম্যানুয়েল গুজমান গার্সিয়া।

এ সময় জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর পতাকা উত্তোলন করা হয়।

ফলক উন্মোচন করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, মেক্সিকো-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের সভাপতি ও পেটাপার শহরের মেয়র । ছবি : সংগৃহীত
ফলক উন্মোচন করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, মেক্সিকো-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের সভাপতি ও পেটাপার শহরের মেয়র । ছবি : সংগৃহীত

দিনব্যাপী আয়োজনে মেক্সিকো-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের সদস্য, স্থানীয় বিশিষ্টজনেরাসহ প্রায় ৫০০ শহরবাসী উপস্থিত ছিলেন।

এ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাও বের করা হয়। অতিথিসহ সকলেই ব্যান্ডের তালে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে অংশ নেন। এ সময় রাস্তার দুই পাশে স্থানীয় স্কুল শিক্ষার্থীরাও বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর পতাকা হাতে শোভাযাত্রাকে স্বাগত জানান।

এর আগে সান্তো ডোমিঙ্গো পেটাপায় পৌঁছলে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলকে ফুলের মালা দিয়ে স্বাগত জানান শহরের মেয়র। তিনি রাষ্ট্রদূতকে একটি কাঠের লাঠিও উপহার দেন- যা শহরের উষ্ণতা ও কর্তৃত্বের প্রতীক।

অনুষ্ঠানটিকে আরও বিশেষ করে তুলে বিভিন্ন ভাষার স্থানীয় কয়েকটি সম্প্রদায়ের উপস্থিতি, যারা বক্তা হিসেবে অনুষ্ঠানে বহুভাষিক মাত্রা যোগ করেন।

দিনব্যাপী আয়োজনে খাদ্য উত্সবও অন্তর্ভুক্ত ছিল, যেখানে স্থানীয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে ঐতিহ্যবাহী স্থানীয় সব খাবার প্রদর্শন করা হয়।

স্থানীয় সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী খাবার প্রদর্শন । ছবি : সংগৃহীত
স্থানীয় সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী খাবার প্রদর্শন । ছবি : সংগৃহীত

এ ছাড়াও স্থানীয় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নৃত্য ও সঙ্গীত পরিবেশনে তাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরে ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেয়র জুয়ান গার্সিয়া নিজ পৌরসভায় ঐতিহাসিক ফলক স্থাপনে আনন্দের অনুভূতি জানিয়ে বলেন, এটি ভাষাগত বৈচিত্র্য সংরক্ষণ, প্রচার এবং বহুভাষিক শিক্ষার প্রচারের জন্য শহরের প্রচেষ্টার উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, বাঙালির পরিচয় ও জাতীয়তাবাদ গঠনে ২১শে ফেব্রুয়ারির ভূমিকার অপরিসীম, যা শেষ পর্যন্ত ১৯৭১ সালে ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধ এবং একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনে নেতৃত্ব দেয়।

তিনি বলেন, এমন উদ্যোগ সকল ভাষা ও সংস্কৃতি উদযাপনের গুরুত্ব তুলে ধরে। আমাদের পরিচয় গঠনে এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে ভাষা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তার উপর জোর দেয়।

 বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নৃত্য ও সঙ্গীত পরিবেশনে তাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরে
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নৃত্য ও সঙ্গীত পরিবেশনে তাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরে

রাষ্ট্রদূত মেক্সিকো-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের সভাপতির নিষ্ঠা ও কঠোর পরিশ্রমের জন্য তার আন্তরিক প্রশংসা করেন ।

সংসদ সদস্য রোজালিন্ডা ডোমিনগুয়েজ ফ্লোরেস বলেন,, এর মধ্যে দিয়ে সারা বিশ্বে মাতৃভাষা রক্ষা ও সংরক্ষণের গুরুত্ব নির্দেশ করে।

তিনি আশ্বস্ত করেন, পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপ উভয় দেশের জনগণের মঙ্গলের দিকে মনোনিবেশ করবে।

গ্রুপের অন্য সংসদ সদস্যরাও দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার জন্য তাদের আশা প্রকাশ করে একই মতামত রাখেন।

প্রবাসের সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!