মালয়েশিয়ায় ৯ বাংলাদেশি পেলেন সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স সম্মাননা পদক

মালয়েশিয়া থেকে দেশে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠিয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ৯ প্রবাসী বাংলাদেশি পেলেন সম্মাননা পদক। বৈধ চ্যানেলে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে উদ্ধুদ্ধ করতে তাদের এ সম্মাননা দিয়েছে বাংলাদেশ হাইকমিশন।

সম্মাননাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন— মো. মকবুল হোসাইন মুকুল, মো. আমনিুল ইসলাম, মো. ফয়সাল আহমেদ, আহমেদ সাদী ইয়ামিন, মো. হাবিব, জামান মোহাম্মদ বাহাদুর খাঁন, মো. আমিনুর রহমান,আলি আহমেদ, মো. আব্দুছ ছাবুর।

মালয়েশিয়া প্রবাসের খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ

Travelion – Mobile

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) দেশটির সেলাঙ্গর রাজ্যের ক্লাং-এ একটি হোটেলে আয়োজিত আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে তাদের হাতে সম্মাননা পদক ও সনদ তুলে দেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার।

অনুষ্ঠানে হাইকমিশন কর্মকর্তা, মালয়েশিয়া সরকারের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও অভিবাসী কর্মী নিয়োগ কর্তা এবং বাংলাদেশ কমিউনিটি নেতাসহ তিন শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে  মালয়েশিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশিরা ছবি : সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশিরা ছবি : সংগৃহীত

প্রধান অতিথির বক্তব্য হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার বলেন, মেধা, শ্রম ও দক্ষতা জন্য মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের বেশ সুনাম রয়েছে। পাশাপাশি তারা রেমিট্যান্সের মাধ্যমে দেশের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। গত বছর প্রায় ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়ে ৬ষ্ট স্থান অধিকার করে মালয়েশিয়ার প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

করোনাকালীন প্রবাসীদের স্বার্থে হাইকমিশনের সদস্যরা জীবনের ঝুকি নিয়ে সেবা কার্যক্রম চালু রাখেন জানিয়ে হাইকমিশনার বলেন, এ সময় পাসপোর্ট সেবাকে প্রবাসীর দোরগোড়ায় পৌঁছিয়ে দিতে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে আবেদন গ্রহণ ও বিতরণের ব্যবস্থাসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়, যার সুফল এখনও পাচ্ছেন প্রবাসীরা।

‘আমরা প্রতিনিয়ত সেবার মান মূল্যায়ণ করছি এবং প্রবাসী কল্যাণে নতুন নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছি। ‘ইজি একসেস টু সার্ভিস অর্থাৎ প্রবাসীর সঙ্গে হাইকমিশনের সহজ যোগাযোগ ও সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হাইকমিশন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে’, তিনি যোগ করেন।

তিনি জানান, রিহিয়ারিং প্রোগ্রামের আওতায় বৈধতাপ্রাপ্তদের জন্য ৬ নং ভিসা দ্রুত জারির জন্য কূটনৈতিক যোগাযোগে মালয়েশিয়া সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এ বছর মালয়েশিয়াতে ৭২৪ জন প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৬৬০ জনের মরদেহ বাংলাদেশ হাইকমিশন ও তাদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দেশে পরিবারের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং করোনা আক্রান্ত হওয়ায় বাকি ৬৪ জনকে মালয়েশিয়াতে সমাধিস্থ করা হয়েছে।

আরও জানানো হয়, বাংলাদেশি কর্মীদের সামাজিক নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে দেশটির সোশ্যাল সিকিউরিটি অর্গানাইজেশনের (সকসো) মাধ্যমে ৬ হাজার ৪০৮ জন কর্মী ও তাদের পরিবাকে ২ কোটি ২৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ এবং অন্য সবিধাদি দেওয়া হয়েছে। মালয়েশিয়ার শ্রম অধিদপ্তর থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া ৬০ লাখ রিঙ্গিত বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে।

অনুষ্টানে র‍্যাফেল ড্র বিজয়িদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করছেন হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার।
অনুষ্টানে র‍্যাফেল ড্র বিজয়িদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করছেন হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার।

পোস্ট অফিসের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১ লাখ ১৫ হাজার পাসপোর্ট বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া মালয়েশিয়া থেকে দ্রুত দেশে পাঠাতে অনিয়মিত ৩ হাজার ৫০ জন এবং জেল ও ক্যাম্পে থাকা ১ হাজার ৩০৬ জন বাংলাদেশিকে হাইকমিশন থেকে ট্রাভেল পারমিট প্রদান করা হয়েছে।

এসব তথ্য দিয়ে হাইকমিশনের মিনিস্টার (শ্রম) মো. নাজমুছ সাদাত সেলিম বলেন, সরকারের দেওয়া সব সুযোগ সুবিধা পেতে বাংলাদেশি কর্মীদের ওয়েজআর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সদস্য হওয়া জরুরি। হাইকমিশনে এসে সহজে সদস্য হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

তিনি আরও জানান, মালয়েশিয়ায় নতুন করে কর্মী নিয়োগ কর্মসূচির আওতায় এ পর্যন্ত ১ লাখ ৭৫ হাজার চাহিদাপত্রের আবেদন পেয়েছে বাংলাদেশ হাইকমিশন। এরই মধ্যে ১ লাখ ৫০ হাজার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এর বিপরিতে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার কর্মী মালয়েশিয়াতে কর্মক্ষেত্রে যোগদান করেছে।

কাউন্সেলর (শ্রম) মো. জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে কাউন্সেলর (কন্স্যুলার) জি এম রাসেল রানা, প্রথম সচিব (পাসপোর্ট ও ভিসা) মিয়া মোহাম্মদ কিয়ামুদ্দিন, প্রথম সচিব (শ্রম) এএসএম জাহিদুর রহমান, প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) প্রণব কুমার ঘোষ অভিবাসী দিবসের বাণী পড়ে শোনান। এছাড়া বক্তব্য রাখেন সম্মাননাপ্রাপ্ত প্রবাসী ও কমিউনিটি নেতারা।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ এ খাস্তগীর, কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) ফারহানা আহমেদ চৌধূরী, প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) রেহেনা পারভীন দ্বিতীয় সচিব (শ্রম) সুমন চন্দ্র দাস ।

প্রবাসী শিল্পীদের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও রাফেল ড্রয়ের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

মালয়েশিয়া প্রবাসের খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!