মাঝ আকাশে উড়োজাহাজে বিয়ে, প্রেমিক যুগলের স্বপ্নপূরণ!

অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ডেভিড ভ্যালিয়ান্ট ও নিউজিল্যান্ডের ক্যাথি ভ্যালিয়ান্ট একে অপরকে ভালোবাসেন। এভিয়েশনের প্রতি দু’জনেরই দারুণ আগ্রহ। এবার নিজেদের ভালোলাগাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেলেন তারা।

৩৭ হাজার ফুট উঁচুতে মাঝ আকাশে উড়োজাহাজে মালাবদল করলেন ডেভিড ও ক্যাথি। অস্ট্রেলিয়ার বাজেট এয়ারলাইনস জেটস্টারের একটি ফ্লাইটে তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।

২০১১ সালে অনলাইনে ‘এয়ারপোর্ট সিটি’ গেম খেলার সময় ডেভিড ও ক্যাথির পরিচয়। এর দুই বছর পর সিডনি বিমানবন্দরে তাদের প্রথম দেখা হয়। এভিয়েশনপ্রেমী বলেই বিমানবন্দরে প্রথম দেখা করেন এই প্রেমিক যুগল। ৮ বছরের প্রেমের পর গত নভেম্বরেএই বিমানবন্দরে থেকে জেটস্টারের ফ্লাইটের উড়ালের সময় আইনিভাবে বিয়ের কাজ সেরেছেন তারা। আকাশপথের আয়োজন সত্যিকার অর্থেই নবদম্পতির জন্য স্মরণীয়।

Travelion – Mobile

অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে যাচ্ছিল ফ্লাইট ২০১। তখন আকাশপথে উড়োজাহাজের কেবিনে এই যুগল একে অপরের প্রতি ভালোবাসা ও প্রতিশ্রুতি নিবেদন করে বিয়ের বন্ধনে জড়ান।

বিমানটি দুই দেশের মাঝপথে পৌঁছানোর পর ডেভিড ও ক্যাথি গাঁটছড়া বাঁধেন। জেটস্টারের একজন গ্রাউন্ড ক্রু সদস্য যাজকের ভূমিকা পালন করেন। তার নাম রবিন হল্ট। যাত্রী ও ফ্লাইট অ্যাটেনড্যান্টরা এই বিয়ের সাক্ষী হয়েছেন।

জেটস্টারের ফ্লাইটটি দুই দেশের মাঝপথে পৌঁছানোর পর ডেভিড ও ক্যাথি গাঁটছড়া বাঁধেন
জেটস্টারের ফ্লাইটটি দুই দেশের মাঝপথে পৌঁছানোর পর ডেভিড ও ক্যাথি গাঁটছড়া বাঁধেন

অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের ঠিক মাঝপথে উড়োজাহাজ পৌঁছানোর পর বিয়ে করেন ডেভিড-ক্যাথিযাজক হিসেবে কাজের জন্য আলাদাভাবে সম্মানী নেননি রবিন হল্ট। তিনি বলেছেন, ‘আকাশে বিয়ে পরিচালনার কাজ এবারই প্রথম করলাম। এটি সত্যিই বিশেষ অনুষ্ঠান। ক্যাথি ও ডেভিডের ভালোবাসার দিন ও এভিয়েশনের জন্য তাদের আবেগ উদযাপনের অংশ হওয়ার কথা কখনও ভোলার নয়। যাত্রীদের কাছে এই বিয়ে দেখা ছিল উপভোগ্য।’

ব্রিসবেন থেকে মেলবোর্নে যাওয়ার সময় একটি ফ্লাইটে ক্যাথিকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল ডেভিডের। কিন্তু নার্ভাস থাকায় তা পারেননি তিনি! শেষমেষ একইদিন সন্ধ্যায় তার কাছ থেকে পাওয়া প্রস্তাবে হ্যাঁ বলেন ক্যাথি।
শুরু থেকেই বিয়েটা স্মরণীয় করে রাখতে চেয়েছিলেন ডেভিড। তাই আকাশপথে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জেটস্টারের অফিসিয়াল পেজে নিজের ভাবনার কথা পোস্ট করেন তিনি।

ক্যাথির কথায়– ‘এভিয়েশন, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও একে অপরের প্রতি ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে আকাশপথে বিয়ে করতে চেয়েছিলাম আমরা। তাই আগেপিছে না ভেবেই জেটস্টারের কাছে প্রস্তাব রেখেছিলাম আমরা।’

ডেভিড ও ক্যাথির স্বপ্নপূরণের সব বন্দোবস্ত করে দেয় জেটস্টার কর্তৃপক্ষ
ডেভিড ও ক্যাথির স্বপ্নপূরণের সব বন্দোবস্ত করে দেয় জেটস্টার কর্তৃপক্ষ

ডেভিড ও ক্যাথির ভাবনায় সম্মতি জানায় বিমান সংস্থাটি। এরপর তাদের স্বপ্নপূরণে সব বন্দোবস্ত করা হয়। ফ্লাইট বুকিং দেওয়া সব যাত্রীকে আগেই ইমেইলে জানিয়ে দেওয়া হয়, কেবিনে কিছু সময়ের জন্য চিত্রায়ন হবে। যদিও বিয়ের বিস্তারিত তথ্য বলা হয়নি কাউকে। কেউ ফ্লাইট বদলাতে চাইলে বিনামূল্যে সেই সুযোগ রাখা হয়।

ক্যাথি বলেন, ‘এটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এ ঘটনা আমরা সারাজীবন মনে রাখবো। এভিয়েশনের প্রতি ভালোবাসাই আমাদের একসুতোয় গেঁথেছে।’

ভ্যালিয়ান্ট দম্পতি এখন মেলবোর্নে সুখে-শান্তিতে এক ছাদের নিচে বসবাস করছেন।

https://www.facebook.com/watch/?v=544942566063897

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!