মাংসের বিনিময়ে মানবপাচার : ফ্রান্সে এক ব্যক্তির সাজা
স্পেন থেকে ৫ বাংলাদেশি অনিয়মিত অভিবাসীকে পরিবহন
স্পেন থেকে ফ্রান্সে ৫ বাংলাদেশি অনিয়মিত অভিবাসীকে পরিবহনের দায়ে এক ট্যাক্সিচালককে ১৪ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে ফ্রান্সের একটি আদালত। অভিবাসীদের মধ্যে ৪জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ছিলেন। অভিবাসীরা তাকে পরিবহনের খরচ বাবদ মাংস দিয়েছিল বলে আদালতে স্বীকার করেন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি।
প্রবাসের সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ
ফরাসি সংবাদ মাধ্যম ফ্রান্সব্লু জানিয়েছে, চলতি বছরের ২৫ অক্টোবর স্পেন সীমান্তের কাছে অবস্থিত ফরাসি ডিপার্টমেন্ট পিরেনে আটলান্টিক অঞ্চলের লারুন শহর থেকে পাঁচ বাংলাদেশি নাগরিককে স্পেন থেকে বেআইনিভাবে পরিবহনের দায়ে ওই ট্যাক্সিচালককে গ্রেফতার করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে মানবপাচারের অভিযোগ এনে মামলা করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) স্থানীয় ফরাসি পউ শহরের আদালত ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেছে। রায়ে অবৈধভাবে অনিয়মিত বাংলাদেশিদের স্পেন থেকে ফ্রান্সে পরিবহনের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ১৪ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
স্পেনে বসবাসকারী সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি আদালতকে জানান,অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত নাজুক পরিস্থিতির শিকার হয়ে পরিবারকে সাহায্য করার তাগিদে তিনি মাংসের বিনিময়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পরিবহনের ঝুঁকি নিয়েছিলেন।
আদালতের শুনানিতে স্প্যানিশ ভাষায় তিনি জানান, স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার হিসেবে কাজ করতেন। একদিন তিনি মাংসের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সে সময় একজন গ্রাহক তাকে বিমানবন্দরে নিয়ে যেতে ডাকেন।
‘এটি শুনতে পেয়ে মাংসের দোকানের ব্যক্তি আমাকে জিজ্ঞেস করেন আমার কাছে কী গাড়ি আছে? উত্তরে জানাই, হ্যাঁ আমার কাছে একটি ৭ আসনের পুজো ৫০৮ মডেলের গাড়ি আছে’।
তারপর অন্য একজন ব্যক্তি আমার সঙ্গে আবারও যোগাযোগ করে এবং ফ্রান্সে কিছু ব্যক্তিকে পরিবহনের প্রস্তাব দেওয়। প্রস্তাবে তারা আমাকে পরিবহন বাবদ ওই মাংসের দোকান থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে মাংস দেওয়ার কথা জানায়।
শুনানিতে আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করে, ‘আপনি যখন সকাল ৬টায় পাঁচ জনকে ফ্রান্সে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন কি আপনার মনে কোনো প্রশ্নের উদ্রেক করেনি? আপনি একটি বেআইনি কাজ করছেন এমন কিছু কি মনে হয়নি?’
উত্তর অভিযুক্ত আদালতকে বলেন, হ্যাঁ, এই প্রশ্ন আমার মাথার এসেছিল। কিন্তু আমি আমার পরিবার, অর্থনৈতিক ও সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে চিন্তা করে রাজি হয়েছিলাম।
প্রবাসের সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ
অভিযুক্ত ব্যক্তির আইনজীবী আদালতকে বলেন, তার মক্কেল একটি নাজুক অর্থনৈতিক অবস্থায় আছে। তিনি বাসাবাড়ি পরিষ্কার এমনকি আবর্জনা তোলার মতো কাজ করতে বাধ্য ছিলেন। কারণ তাকে তার বৃদ্ধ পিতামাতার জন্য প্যারাগুয়েতে অর্থ পাঠাতে হচ্ছিল।