মরিশাসে জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর বাংলায় ভাষন প্রদান দিবস পালন

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক বাংলায় ভাষন প্রদানের ৪৬ তম বার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করেছে মরিশাসে বাংলাদেশ হাইকমিশন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসাবে এ উপলক্ষে তরুণদের নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানী পোর্ট লুইসে হাইকমিশন ভবনে মরিশাসে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর ক্রিসটিন ইউমোটনি এবং ইন্ডিয়ান ওশান রিম এসোসিয়েশন(আইওআরএ) এর সেক্রেটারি জেনারেল ড. নোমভুয়ো নন্টসিকেলেলো নকওয়ে।

হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদ তাঁর সূচনা বক্তব্যে প্রথমেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের জাতিসংঘের সদস্যপদ প্রাপ্তিতে বঙ্গবন্ধুর অসামান্য অবদানের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

Travelion – Mobile

তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালেই তাঁর ভাষনে যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, পররাষ্ট্র নীতি, দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহের সাথে সম্পর্ক ও বিশ্বের সকল দেশের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের রূপরেখা বর্ণনা করেন। দুঃখজনকভাবে তিনি তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সুযোগ পাননি। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়নের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন। সবশেষে তিনি তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন যে, আমরা কেন বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছি কারণ তরুণ প্রজন্মই সামনের পৃথিবীকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এজন্যে তাঁদের সামনে বঙ্গবন্ধুর মত নেতাদের দৃষ্টান্ত পথ চলার অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।”

সভায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাতিসংঘে প্রদত্ত ভাষনের উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স এন্ড পলিটিক্যাল সাইন্স হতে সদ্য গ্রাজুয়েট মরিশিয়ান নাগরিক তাহিরা জারা বোদো বেরি। তিনি তার উপস্থাপনায় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক বাংলা ভাষায় বক্তব্য দেয়ার প্রেক্ষাপট এবং বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্র নীতি, শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় জাতিসংঘের ভূমিকা, বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়নসহ সোনার বাংলা বিনির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা তুলে ধরেন।

ইন্ডিয়ান ওশান রিম এসোসিয়েশন (আইওআরএ) এর সেক্রেটারি জেনারেল ড. নকওয়ে বলেন যে, “বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষনে দারিদ্র্য বিমোচনের কথা বলেছিলেন, আমরা কিনা এখনও সে বিষয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি”।

ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর ক্রিসটিন ইউমোটনি বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ভাষনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। বলেন, “বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের একার নয়, তিনি আমাদের সকলের। তিনি আরো বলেন, আজকে আমরা যে এসডিজি নিয়ে কাজ করছি 46 বছর পূর্বেই বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষনেও এই সমস্ত ক্ষেত্রে উন্নয়নের উপর জোর দিয়েছিলেন। তিনি আবেগ প্রবণ হয়ে বলেন যে, ‘আমি নিজে একজন মুক্তিযোদ্ধা, বঙ্গবন্ধু আমাদের অনুপ্রেরণা, তিনি আমারও পিতা”।

উন্মুক্ত আলোচনায় আলোচকগণ স্বত:স্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের 20 জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানেতাহিরা ইন্ডিয়ান ওশান রিম এসোসিয়েশন (আইওআরএ) এর সেক্রেটারি জেনারেল ড. নোমভুয়ো নন্টসিকেলেলো নকওয়ে, ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর ক্রিসটিন ইউমোটনি এবং জারা বোদো বেরির হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদ।

এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে মুজিববর্ষের লোগো সম্বলিত কোটপিন এবং কলম স্মৃতিস্মারক দিহসেবে দেওয়া হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!